মৃত্যুর দেড় বছর পরেও ইন্টারপোলের তালিকায় কিসমত হাশেম

মৃত্যুর দেড় বছর পরেও ইন্টারপোলের তালিকায় কিসমত হাশেমজাতীয় চার নেতা হত্যায় যাবজ্জীবন দণ্ডপ্রাপ্ত সেনাবাহিনীর বরখাস্ত ক্যাপ্টেন কিসমত হাশেমের মৃত্যুর দেড় বছর পরেও তার নামে গ্রেফতারি পরোয়ানা বলবৎ রয়েছে। আন্তর্জাতিক পুলিশ সংস্থা ইন্টারপোলের রেড ওয়ারেন্টের পাতায় এখনও তার ছবি সম্বলিত পরোয়ানা দেখা গেছে। অথচ গত বছরের ২৬ মার্চ তিনি কানাডায় মারা যান। 

২০০৯ সালের নভেম্বরে কিসমত হাশেম বঙ্গবন্ধু হত্যা মামলা থেকে খালাস পান।  তবে ওই সময়েই তার বিরুদ্ধে ইন্টারপোল রেড ওয়ারেন্ট জারি করে।

কিসমতের ছোট ভাই নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশনের ১২নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর ও নগর বিএনপির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক শওকত হাশেম শকু জানান, ২০১৫ সালের ২৬ মার্চ ভোরে কানাডার মন্ট্রিলে তিনি মারা যান। পরদিন ২৭ মার্চ তাকে মন্ট্রিলে দাফন করা হয়। তার কোনও সন্তান নেই। স্ত্রী কানাডাতেই বসবাস করেন।

২০০০ সালের ১৪ ডিসেম্বর বঙ্গবন্ধু হত্যা মামলার রায়ে কিসমত হাশেমকে মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হয়। ২০০৯ সালের নভেম্বরে বঙ্গবন্ধু হত্যা মামলার আপিলের রায়ে তিনি খালাস পান। তবে ওই সময়েই তার বিরুদ্ধে ইন্টারপোল রেড ওয়ারেন্ট জারি করে।

১৯৭৫ সালের ১৫ অগাস্ট বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে সপরিবারে হত্যার পর বাংলাদেশের ক্ষমতা দখল করে সেনাবাহিনীর একাংশ। এরপর বাংলাদেশের স্বাধীনতা আন্দোলনের চার নেতা- সৈয়দ নজরুল ইসলাম, তাজউদ্দিন আহমেদ, ক্যাপ্টেন মুনসুর আলী ও এ এইচ এম কামরুজ্জামানকে গ্রেফতার করা হয়। ৩ নভেম্বর ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারে হত্যা করা হয় জাতীয় চার নেতাকে। ১৯৯৬ সালে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসার পর এ হত্যাকাণ্ডের বিচার শুরু হয়। ২০০৪ সালের অক্টোবরে ঢাকা মহানগর দায়রা জজ আদালত এ হত্যায় তিন সেনা কর্মকর্তা রিসালদার (অব.) মুসলেমউদ্দিন, দফাদার (বহিষ্কৃত) মারফরত আলী শাহ ও দফাদার (বহিষ্কৃত) আব্দুল হাসেম মৃধাকে মৃত্যুদণ্ডাদেশ দেন। সেনাবাহিনী থেকে অব্যাহতি পাওয়া ক্যাপ্টেন কিসমত হাশেমসহ ১২ কর্মকর্তাকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ডাদেশ দেন।

৭৫’ এর ৩ নভেম্বর চার নেতাকে হত্যার পর পরই দেশ ত্যাগ করেন কিসমত হাশেম। পরবর্তীতে সামরিক শাসক জিয়াউর রহমান ও এরশাদের শাসনামলে গোপনে কয়েকবার দেশে আসা-যাওয়া করেন তিনি। তবে নব্বইয়ে সামরিক শাসনের অবসানের পর কিসমতকে আর দেশে দেখা যায়নি।

আরও পড়ুন:

বঙ্গবন্ধুকে হত্যার আগে অস্বাভাবিক নৈশ প্যারেড হয়
যেভাবে দাফন করা হয় বঙ্গবন্ধুকে

/বিটি/