‘বিপুল সম্পদের মালিক’ শিক্ষক পেলেন ১০ টাকার চাল

১০ টাকা দরের চালগোপালগঞ্জে খাদ্যবান্ধব কর্মসূচির আওতায় হতদরিদ্রদের ১০ টাকা কেজি দরের চাল পেয়েছেন স্কুলের সহকারী প্রধান শিক্ষক দুলাল বিশ্বাস। প্রভাব খাটিয়ে এ চাল নিয়েছেন বলে অভিযোগ সদর উপজেলার রঘুনাথপুর দীননাথ উচ্চ বিদ্যালয়ের এই সহকারী প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে।
স্থানীয়রা জানান, দুলাল বিশ্বাস রঘুনাথপুর ইউনিয়নের মধ্যপাড়া গ্রামের মৃত কাশিশ্বর বিশ্বাসের ছেলে। তিনি অনেক সম্পদের মালিক। শিক্ষকতার পাশাপাশি গত ১৫ বছর ধরে সাংবাদিকতাও করছেন। সাংবাদিক পরিচয় দিয়ে এলাকায় প্রভাব বিস্তার করেন বলে অভিযোগ পাওয়া যায়। তিনি নিজ নামে কার্ড নিয়েছেন।
অভিযুক্ত দুলাল বিশ্বাস কার্ড পওয়ার কথা স্বীকার করে বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, আমি কার্ড চাইনি। কে বা কারা আমার নামে কার্ড ইস্যু করেছে তা আমি জানি না। আমার নামে কার্ড ইস্যু হওয়ায় আমি অবাক হয়েছি। তবে, এ কার্ডে গত ২ মাসে ৬০ কেজি চাল উত্তোলন করেছি। এরপর তা দুস্থদের মধ্যে বিলিয়ে দিয়েছি।
রঘুনাথপুর ইউনিয়নে হতদরিদ্রদের ১০ টাকা দরের চাল বিক্রিতে নিয়োজিত ডিলার ভূপতি বণিক বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, দুলাল বিশ্বাসের কার্ড নং ১৫৫। ৩নং ওয়ার্ডের সাবেক মেম্বর শ্যামল বিশ্বাস তাকে কার্ড দিয়েছে বলে শুনেছি। দুলাল ওই কার্ডে সেপ্টেম্বর মাসে ৩০ কেজি ও অক্টোবর মাসে ৩০ কেজি মোট ৬০ কেজি চাল তুলেছেন।

গোপালগঞ্জ৩নং ওয়ার্ডের সাবেক মেম্বর শ্যামল বিশ্বাস বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, দুলাল বিশ্বাস আমার কাছে কার্ড চান। পরে জাতীয় আইডি কার্ডের  ফটোকপি তিনি আমার কাছে পাঠিয়ে দিলে আমি  হতদরিদ্রের তালিকায় তার নাম অন্তর্ভুক্ত করি। তিনি আমাদের গ্রামের স্কুলের সহকারী প্রধান শিক্ষক। শুনেছি ‘দৈনিক দেশকালের কাগজ’ নামে পত্রিকার সাংবাদিক। এছাড়া ‘সংবাদ প্রতিদিনেও’ কাজ করছেন। তিনি  প্রচুর সম্পদের মালিক। প্রভাব খাটিয়ে তিনি কার্ড নিয়েছেন।
শ্যামল বিশ্বাস আরও বলেন, গরিব মানুষের পেটে লাথি মেরে কার্ড নিয়ে এখন বিপাকে পড়েছেন। তাই তিনি এখন বাঁচতে মিথ্যাচার করছেন।
গোপালগঞ্জ সদর উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার এসএম মোর্শেদ এ ঘটনার নিন্দা জানিয়ে বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ওই শিক্ষক একজন বিত্তবান ও স্বচ্ছল মানুষ। দরিদ্রদের বঞ্চিত করে তার এ কার্ড নেওয়া উচিত হয়নি। এ কার্ড নিয়ে সে অপরাধ করেছে। এমনকি তাকে যে কার্ড দিয়েছে সেও সমান অপরাধী। দু’জনেরই বিচার হওয়া উচিৎ।


গোপালগঞ্জ সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. জালাল উদ্দিন বলেন, এ ব্যাপারে অমরা কঠোর অবস্থানে রয়েছি। অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

/এইচকে/