স্কুলছাত্র প্রদীপ্ত হত্যা রহস্য উদঘাটনের দাবি পিবিআই’র

কিশোরগঞ্জট্রেনে কাটা পড়ে নিহত কিশোরগঞ্জ শহরের মডেল স্কুল অ্যান্ড কলেজের সপ্তম শ্রেণির ছাত্র প্রদীপ্ত দত্তের হত্যা রহস্য উদঘাটন করেছে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই)। এতে জড়িত থাকার অভিযোগে সুমন চন্দ্র দাস (১৫) নামে এক কিশোরকে গ্রেফতারের পর এ তথ্য জানিয়েছেন তদন্ত সংশ্লিষ্টরা।

সুমন ময়মনসিংহ জেলার নান্দাইল উপজেলার উত্তর মুসল্লি গ্রামের মনু চন্দ্র দাসের ছেলে। সে বর্তমানে পিবিআই ময়মনসিংহ কার্যালয়ের হেফাজতে রয়েছে। গত সোমবার তাকে আদালতে হাজির করে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য তিন দিনের রিমান্ডে নেয় পিবিআই। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে হত্যাকাণ্ডে  জড়িত থাকার কথা সুমন স্বীকার করেছে বলে জানিয়েছেন মামলার তদন্ত কর্মকর্তা।

মামলার তদন্ত কর্মকর্তা ময়মনসিংহ জেলা পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনের (পিবিআই)  ইন্সপেক্টর মো. আখতার জামানের সঙ্গে বুধবার বিকেলে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান, কিশোরগঞ্জ শহরের খড়মপট্টি এলাকার মোটরসাইকেল গ্যারেজের কর্মচারী সুমন। বিজয়া দশমীর রাতে মোটরসাইকেলে প্রদীপ্তকে নিয়ে পূজামণ্ডপ দেখতে বের হয়ে সে। কিন্তু সুমন প্রদীপ্তকে নিয়ে পূজা মণ্ডপে না গিয়ে নির্জন রেল লাইনে নিয়ে যায়। পরে রাতে সেখান থেকেই প্রদীপ্তের লাশ উদ্ধার করে উদ্ধার করে রেলওয়ে পুলিশ।

প্রদীপ্তের পরিবারের লোকজন দাবি করে আসছিল, সে আত্মহত্যা করার মতো ছেলে নয়। এটি পরিকল্পিত হত্যাকাণ্ড। তা ছাড়া এ ঘটনার রহস্য উদ্ধার ও খুনিদের গ্রেফতারের  দাবিতে বিক্ষোভ-মানবন্ধনসহ বিভিন্ন কর্মসূচি পালন করে আসছে বিভিন্ন সংগঠন। এ ঘটনায় প্রথমে কিশোরগঞ্জ রেলওয়ে থানায় একটি অপমৃত্যু মামলা করে রেলওয়ে থানা পুলিশ। পরে একই থানায় প্রদীপ্তের বাবা শ্যামল দত্ত বাদী হয়ে একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন।

তদন্ত কর্মকর্তা জানান, শুরু থেকেই এ ঘটনার ছায়া তদন্তে নামে পিবিআই। ছায়া তদন্তে নেমে তাদের মনে হয়েছে এটি নিছক দুর্ঘটনা নয়। পরে আইজিপির নির্দেশে গত ২৮ নভেম্বর মামলাটি পিবিআইকে হস্তান্তর করা হয়। তিনি বলেন, তাদের হেফাজতে থাকা সুমন প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে হত্যার সঙ্গে জড়িত থাকার কথা স্বীকার করেছে। তবে তদন্তের স্বার্থে এখন সবকিছু বলা যাচ্ছে না। মোটরসাইকেল গ্যারেজের কর্মচারি সুমনকে গ্রেফতারের  পর পুরো ঘটনার জট খুলতে শুরু করেছে। প্রদীপ্তদের বাসার সামনে একটি মোটরসাইকেলের গ্যারেজ আছে। সেখানেই সুমন কাজ করত। এই সূত্রেই সুমনের সঙ্গে প্রদীপ্তের সখ্যতা গড়ে উঠে।

উল্লেখ্য, গত বছরের ১১ অক্টোবর দুর্গাপূজার বিজয়া দশমীর রাতে শহরের কানিকাটা এলাকায় রেললাইনে কাটা অবস্থায় প্রদীপ্তের মরদেহ পাওয়া যায়। পরের দিন সকালে পরিবারের লোকজন প্রদীপ্তের মরদেহ শনাক্ত করে।

/এএ/