গোপালগঞ্জ কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতর জানিয়েছে, জেলার পাঁচ উপজেলায় ১ হাজার ১৫০ হেক্টর জমিতে তরমুজের আবাদ করা হয়। এর মধ্যে ৩২৫ হেক্টর জমির তরমুজ ভারী বর্ষণে তলিয়ে যায়। তলিয়ে যাওয়া ২১৩ হেক্টর জমির তরমুজ কৃষক ঘরে তুলতে সক্ষম হয়। ১১২ হেক্টর জমির তরমুজ নষ্ট হয়ে ২ কোটি ৮০ হাজার টাকার ক্ষতি হয়েছে। জেলায় এ বছর ৭৩ হাজার ৫০০ হেক্টর জমিতে কৃষক বোরো ধানের আবাদ করে। এর মধ্যে ৭ হাজার ৩৫০ হেক্টর জমির ধান বৈরী আবহাওয়ার কবলে পড়ে। কৃষক ৭ হাজার ১৭০ হেক্টর জমির বোরো ফসল কেটে ঘরে তোলে। ১৮০ হেক্টর জমির ধান সম্পূর্ণ তলিয়ে ২ কোটি ৫০ লাখ টাকার ক্ষতি হয়েছে। এছাড়া জেলার ২৫ হাজার ৪৫০ হেক্টর পাট ক্ষেতের মধ্যে ১ হাজার ২৭০ হেক্টর পাট ক্ষেত বৃষ্টির পানিতে ডুবে যায়। পানি নিস্কাশন করে কৃষক ১ হাজার ২৪৯ হেক্টর জমির পাটক্ষেত রক্ষা করেছে। ২১ হেক্টর জমির পাট জমিতেই পচে অন্তত ১৮ লাখ ৯০ হাজার টাকার ক্ষতি হয়েছে।
তিনি বলেন, ব্যাংক ও এনজিও থেকে ঋণ নিয়ে আমার মতো অনেকেই তরমুজ চাষ করেছিলেন। লাভের টাকায় দেনা পরিশোধের কথা থাকলেও আমাদের আশা ভেঙে গেছে।
কোটালীপাড়া উপজেলার কলাবাড়ি ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মাইকেল ওঝা বলেন, বৈরী আবহাওয়ায় আমার ইউনিয়নের তরমুজ চাষিদের ক্ষেতের তরমুজ নষ্ট হয়ে গেছে। ক্ষতি হয়েছে ২ কোটি টাকার। আমি এই ইউনিয়নের চেয়ারম্যান হিসেবে কৃষকদের ব্যাংক ও এনজিও এর ঋণ মওকুফের দাবি জানাচ্ছি।
কাশিয়ানী উপজেলার রাতইল গ্রামের পাটচাষি খিজির খান বলেন, ভাটিয়াপাড়া-গোপালগঞ্জ রেল লাইন নির্মাণের কাজ চলছে। সেখানে প্রয়োজনীয় ব্রিজ কালভাটের ব্যবস্থা রাখা হয়নি। এ কারণে বৃষ্টির পানি নিষ্কাশিত হতে পারছে না। পাটের জমিতে জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়ে ক্ষেতের পাট গাছ তলিয়ে যায়। অনেকে মেশিন বসিয়ে পানি নিষ্কাশন করে পাট রক্ষা করেছে। আমাদের মতো গরিব কৃষক ক্ষেত রক্ষা করতে পারেনি।
গোপালগঞ্জ কৃষি সম্প্রসারণের ডিডি সমীর কুমার গোস্বামী বলেন, বৈরী আবহওয়ায় গোপালগঞ্জে তরমুজ, বোরো ধান ও পাটের সামান্য ক্ষতি হয়েছে। ইতিমধ্যে আমরা তালিকা করে ঢাকায় পাঠিয়েছি। বৈরী আবহাওয়া শুরুর অনেক আগে থেকেই আমরা কৃষককে ফসল রক্ষায় সব ধরনের পরামর্শ দিয়েছি। কৃষক শ্রমিকের অভাবে ধান কাটতে পারেনি। এ কারণে কিছু ফসলের ক্ষতি হয়েছে।
/বিএল/