গাইবান্ধার সুন্দরগঞ্জ উপজেলায় কলেজছাত্র রিপন চন্দ্র দাসের (১৭) পুলিশ হেফাজতে মৃত্যুর ঘটনায় মামলা হয়েছে। মামলায় সুন্দরগঞ্জ থানার চার পুলিশ সদস্য ও এক ইউপি সদস্যসহ ১০ জনকে আসামি করা হয়েছে। ঘটনার ১০ দিন পর রবিবার (১১ জুন) দুপুরে রিপন চন্দ্র দাসের বাবা বাবলু চন্দ্র দাস বাদী হয়ে জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে (সুন্দরগঞ্জ) মামলাটি করেন। গাইবান্ধা আদালতের কোর্ট ইন্সপেক্টর (জিআরও) মো. জামাল উদ্দিন মামলার বিষয়টি বাংলা ট্রিবিউনকে নিশ্চিত করেছেন।
মামলার আসামিরা হলেন, সুন্দরগঞ্জ থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই ) মো. রাজু আহম্মেদ, পুলিশ কনস্টেবল শাহানুর আলম, মোস্তাফিজার রহমান, নার্গিস বেগম, ইউপি সদস্য মোন্তাজ উদ্দিন, সুরেশ চন্দ্র, তার মেয়ে চম্পা রানী, আলম মিয়া, অমল চন্দ্র ও রতন চন্দ্র।
জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের (পলাশবাড়ী) বিচারক মো. জয়নুল আবেদীন মামলাটি আমলে নিয়ে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেসটিগেশনকে (পিবিআই) তদন্তের নির্দেশ দেন।
মামলার এজাহারে উল্লেখ করা হয়, সুন্দরগঞ্জ উপজেলার হাতিয়া গ্রামের বাবলু চন্দ্র দাসের ছেলে রিপনের সঙ্গে প্রতিবেশী সুরেশ চন্দ্র দাসের মেয়ে চম্পার প্রেমের সম্পর্ক ছিল। গত ২৯ মে বাড়ি থেকে পালিয়ে বগুড়ার কাহালুতে এক আত্মীয়ের বাড়িতে গিয়ে বিয়ে করে। এ ঘটনায় চম্পার বাবা সুরেশ চন্দ্র বাদী হয়ে অপহরণের অভিযোগে সুন্দরগঞ্জ থানায় মামলা করেন। পরে সুন্দরগঞ্জ থানার এসআই রাজু আহমেদের নেতেৃত্বে স্থানীয় ইউপি সদস্য মোন্তাজ আলীসহ পুলিশের একটি দল গোপন খবরের ভিত্তিতে অভিযান চালিয়ে ১ জুন দুপুরে ওই আত্মীয়ের বাসা থেকে চম্পাকে উদ্ধার ও রিপনকে গ্রেফতার করে। এরপর তাদের মাইক্রোবাসে করে কাহালু থেকে সুন্দরগঞ্জ থানায় নিয়ে আসার পথে ইউপি সদস্য মোন্তাজ উদ্দিনের পরোক্ষ সহযোগিতায় পুলিশ রিপনকে মাইক্রোবাসেই গলাটিপে হত্যা করে। এরপর ট্রাকচাপায় রিপনের মৃত্যু হয়েছে বলে প্রচার করা হয়।
পুলিশের দাবি, রিপন প্রস্রাব করার কথা বললে তাকে রংপুর-ঢাকা মহাসড়কের গাইবান্ধার পলাশবাড়ী উপজেলার জুনদহ এলাকায় নামানো হয়। এসময় দৌড়ে পালাতে গিয়ে রিপন দ্রুতগামী একটি ট্রাকের ধাক্কায় পড়ে যায়। পরে তাকে দ্রুত পলাশবাড়ী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করে। এ ঘটনায় পলাশবাড়ী থানায় একটি অপমৃত্যুর মামলা হয়েছে।
এ ঘটনার পর সুন্দরগঞ্জ থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) মো. রাজু আহম্মেদ, পুলিশ কনস্টেবল শাহানুর আলম, মোস্তাফিজার রহমান ও নার্গিস বেগমকে প্রত্যাহার করে পুলিশ লাইনে নেওয়া হয়। এছাড়াও ঘটনাটি তদন্তে পুলিশের পক্ষ থেকে তিন সদস্যর একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে।
/জেবি/
আরও পড়তে পারেন: গাইবান্ধায় ৬ মাসে শতাধিক নারী-শিশু ধর্ষণের শিকার