ফেনীতে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের এক নারী প্রতিনিধি ও দুই সমন্বয়ককে পিটিয়ে আহত করেছেন ফেনী কলেজ ছাত্রদলের নেতাকর্মীরা।
মঙ্গলবার (৬ মে) রাতে ফেনী জেনারেল হাসপাতালের সামনে এ হামলার ঘটনা ঘটে। আহতরা হলেন— আবদুল্লাহ আল মাহফুজ, সালমান হোসেন ও নাদিয়া আক্তার খুশি। এর মধ্যে মাহফুজ ফেনী শহরের আরামবাগ এলাকার আবদুল মান্নানের ছেলে ও সালমান সদর উপজেলার পাঁচগাছিয়া ইউনিয়নের বিজয় সিংহ এলাকার বশির আহম্মদের ছেলে এবং খুশি সদর উপজেলার ধর্মপুর ইউনিয়নের আবুল কালামের মেয়ে। আহতরা এ হামলার জন্য ফেনী কলেজ ছাত্রদলের ছাত্রদলের সদ্য বহিষ্কৃত সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক জিল্লুর রহমান ও তার সহযোগীদের দায়ী করেছেন।
আহত সালমান জানান, হাসপাতালে একজন রোগীকে দেখে ফেরার সময় ফেনী সরকারি কলেজ ছাত্রদলের সদ্য বহিষ্কৃত সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক জিল্লুর রহমানের নেতৃত্বে ছাত্রদলের ১৫-২০ জনের একটি গ্রুপ তাদের ওপর হামলা চালান। গুরুতর আহত মাহফুজকে ফেনী জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। এ ঘটনায় থানায় মামলার প্রস্তুতি চলছে।
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সাবেক কেন্দ্রীয় সমন্বয়ক ও জাতীয় নাগরিক পার্টির দফতর সম্পাদক সালেহ উদ্দিন সিফাত বলেন, কয়েকদিন আগে হামলাকারী ছাত্রদল নেতা জিল্লুরের বিরুদ্ধে চাঁদাবাজির খবর প্রকাশের পর এক সাংবাদিককে হত্যার হুমকি দিয়েছিল। এরপরও এই অভিযুক্ত ছাত্রদল নেতার বিরুদ্ধে কোনও আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। উল্টো তার পক্ষে বিভিন্ন নেতাকে কথা বলতে দেখা গেছে। ফেনীর প্রশাসন এবং কেন্দ্রীয় ছাত্রদল এ ব্যাপারে কী পদক্ষেপ নেয়, তা আমরা দেখতে চাই। পুরোনো সহিংসতার সংস্কৃতি আমরা আর ফিরতে দেবো না। অবিলম্বে হামলাকারীকে আইনের আওতায় আনতে হবে।
তবে ছাত্রদল নেতা জিল্লুর রহমান হামলার কথা অস্বীকার করে বলেন, বৈষম্যবিরোধী ছাত্ররা নিজেদের মধ্যকার মারামারির ঘটনার দায় আমাদের ওপর চাপাচ্ছে।
এ ব্যাপারে ফেনী মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ সামছুজ্জামান বলেন, এ ঘটনায় ভুক্তভোগীরা মামলার প্রস্তুতি নিচ্ছেন। অভিযোগ হাতে পেলে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
প্রসঙ্গত, গত ২৮ এপ্রিল ফেনীর একটি স্থানীয় দৈনিকে জেলা ছাত্রদলের সহ-সাধারণ সম্পাদক ও ফেনী সরকারি কলেজ ছাত্রদলের সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক জিল্লুর রহমানের বিরুদ্ধে চাঁদাবাজির অভিযোগে খবর প্রকাশিত হয়। এরপর জিল্লুর ওই পত্রিকার প্রধান প্রতিবেদককে কল দিয়ে হত্যার হুমকি দেন। এ ঘটনায় ওই সাংবাদিক ফেনী মডেল থানায় সাধারণ ডায়েরি করেন। বিষয়টিকে বিএনপি ও ছাত্রদলের কতিপয় নেতাকর্মীরা অন্য দিকে প্রবাহিত করার চেষ্টা করলে সাংবাদিকরা মানববন্ধন করে প্রতিবাদ জানান। সর্বশেষ চাঁদাবাজির ঘটনা ও সাংবাদিককে হত্যার হুমকির ঘটনায় ৪ মে জিল্লুর রহমানের ছাত্রদলের পদ স্থগিত করা হয়।