‘ছেলেদের জন্য ওষুধ কিনতেই ফুরিয়ে গেছে টাকা, ঈদ করবো কীভাবে!’

Gopalganj-Eid-Day-Photo-02(26.06‘তিন বেলা ভাতই খাইতে পারি না আর আমাগো ঈদ! পরের জমিতে কাজ করে যে কয়টা টাকা পাই তা ফুরিয়ে গেছে ছেলেদের ওষুধ কিনতেই। এবারের ঈদে কাউরেই নতুন কাপড় কিনা দিতে পারি নাই’— চোখের জল মুছতে মুছতে বলছিলেন গোপালগঞ্জের বানিয়ারী গ্রামের বৃদ্ধ কৃষক ছবেদ আলী (৭৫)।

গোপালগঞ্জের কোটালীপাড়া উপজেলার কুশলা ইউনিয়নের বানিয়ারী গ্রামের কৃষক ছবেদ আলীর তিন ছেলেই পঙ্গু। যে কারণে দীর্ঘ ১৫ বছর ধরে ঈদ আনন্দ থেকে বঞ্চিত হচ্ছে এই পরিবারটি।

কৃষক ছবেদ আলী জানান, সমাজের আর দশটি শিশুর মতো এরাও এক সময় সুস্থ ছিল। অন্যান্য শিশুর মতো প্রাথমিক বিদ্যালয়ে লেখাপড়া করেছে। ১০-১২ বছর পর্যন্ত স্বাভাবিকভাবে চলাফেরা ও খেলাধুলা করলেও হঠাৎ করে কোনও এক অজানা রোগে তার তিন ছেলের হাত-পা শুকিয়ে যেতে থাকে। প্রথমে এলাকার চিকিৎসকের কাছে তাদের চিকিৎসা করালেও কোনও ফল না পেয়ে ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন হাসপাতালে চিকিৎসা করিয়েও কোনও ফল হয়নি।

ছবেদ আলী ধারণা উন্নত চিকিৎসা করাতে পারলে তার তিন ছেলে ইস্রাফিল (২৬), ইজাবুল (২৪) ও এনামুল (২২) সুস্থ হয়ে উঠত। পঙ্গু তিন ছেলের চিকিৎসা খরচ যোগাতে জমিজমা যা ছিল বিক্রি করে এখন নিঃস্ব ছবেদ আলী তারপরও ছেলেদের চিকিৎসা করাতে চায়।

আছমা খানম নামে ছবেদ আলীর বিবাহযোগ্য একটি মেয়ে রয়েছে। তিনটি ছেলে পঙ্গু থাকায় তার মেয়েটির এখনও বিয়ে দিতে না টেরে চিন্তায় রয়েছেন ছবেদ আলী। কৃষি ব্যাংকে তার প্রায় ৬০ হাজার টাকা ঋণ রয়েছে। ঋণের বোঝা মাথায় নিয়ে পরকাল যেতে চান না তিনি। কিন্তু তার আয়ের কোনও উৎস নেই।

এদিকে, অসহায় এ পরিবারটির দিকে সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিয়েছে অনলাইন ভিক্তিক স্বেচ্ছাসেবক সংগঠন সোনালী ভবিষ্যত। ছবেদ আলীর বাড়িতে গিয়ে সোনালী ভবিষ্যত’র সভাপতি কামরুল ইসলাম দিপু পরিবারটির হাতে নগদ ১৫ হাজার ৫০০ টাকা, শাড়ি ও লুঙ্গি তুলে দেন। এ সময় স্বেচ্ছাসেবক সংগঠন সোনালী ভবিষ্যত’র সদস্য প্রভাষক মিন্টু রায়, শিক্ষিকা জান্নাত সুলতানাসহ দাতা সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন।

এ ব্যাপারে দেশের বিত্তবানদের এগিয়ে আসার জন্য অনুরোধ জানিয়েছেন কৃষক ছবেদ আলী। তার ধারণা, বিত্তবানদের সামান্য সাহায্য পেলে তার তিন ছেলের চিকিৎসা করাতে পারবেন তিনি।

সাহায্য পাঠানোর ঠিকানা- ছবেদ আলী হাওলাদার-হিসাব নং- ৩৪১৮২২৪৪ সোনালী ব্যাংক, কোটালীপাড়া শাখা,গোপালগঞ্জ। বিকাশ নং- ০১৭৪৭৭৭৪৭৩৪।

/এআর/