সড়কে ভেঙে পড়ছে মরা গাছ

কিশোরগঞ্জ-নিকলী সড়কের মরা গাছকিশোরগঞ্জ-নিকলী সড়কের কিশোরগঞ্জ অংশে লাগানো সামাজিক বনায়নের অন্তত দেড় হাজার গাছ মরে গেছে। কঙ্কালের মতো দাঁড়িয়ে থাকা গাছগুলো নিয়ে বিপাকে পড়েছেন এলাকাবাসী। সামান্য বাতাসেই এসব মরা গাছের ডালপালা ভেঙে পড়ছে রাস্তায়। এতে করে আহত হচ্ছেন পথচারীরা। দুর্ঘটনার শিকার হচ্ছে যানবাহন। কিন্তু ঝুঁকিপূর্ণ গাছগুলো সরাতে বনবিভাগকে বারবার তাগাদা দিলেও কাজ হয়নি।

প্রায় ২০ বছর আগে বন বিভাগ সড়কের দু’পাশে গাছগুলো লাগায়। সমিতি করে স্থানীয়দেরও এতে যুক্ত করা হয়। তাদের বলা হয়েছিল, গাছগুলো যখন কাটা হবে এর একটি অংশ পাবে সমিতিগুলো। সমিতির লোকজন দীর্ঘদিন গাছগুলো দেখভালও করে। কিন্তু গত তিন বছর ধরে অজ্ঞাত কারণে গাছগুলো মরে যেতে থাকে।

কিশোরগঞ্জ গাছ ৩স্থানীয় বাসিন্দা রতন মিয়া বলেন, ‘প্রতিদিনই কোনও না কোনও মরা গাছ ভেঙে পড়ছে। সড়কের মাঝখানে যখন তখন গাছ পড়ে থাকায় যানবাহন চালাতেও অসুবিধা হয়। কিছুদিন আগে অটোরিকশার ওপরও গাছ ভেঙে পড়েছিল। এগুলো অপসারণে কর্তৃপক্ষকে বারবার তাগাদা দিলেও তারা কিছুই করছে না।’

তিনি অভিযোগ করে বলেন, শিশু, আকাশি, কড়ইসহ বিভিন্ন জাতের এইসব গাছ মরে গেছে বেশ ক’বছর হলো। কিন্তু এগুলো সরিয়ে নিচ্ছে না বনবিভাগ। কয়েক মাস আগে মরা গাছের ডাল ভেঙে পড়ে মারা যায় অটোরিকশার দুই যাত্রী। ডালের আঘাতে আহত হয়েছে অনেক মানুষ। বাড়িঘর ও বিদ্যুতের তারের ওপর প্রায়ই ভেঙে পড়ে মরা গাছের ডাল। ফলে বাতাস শুরু হলেই আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে এলাকায়।

কিশোরগঞ্জ গাছগাগলাইল গ্রামের বাসিন্দা নুরুল হক বলেন, ‘আমাদের সব সময় আতঙ্কের মধ্যে থাকতে হয়। রাস্তা দিয়ে হেঁটে গেলেই ভয় করে কখন মাথায় গাছ বা গাছের ডাল ভেঙে পড়ে। মরা গাছগুলো যত দ্রুত সম্ভব কেটে দেশীয় নতুন গাছ লাগালে ভালো হয়।’

কিশোরগঞ্জ সদর উপজলার যশোদল বাজার থেকে কড়িয়াল নতুন বাজার পর্যন্ত রাস্তার দুপাশে লাগানো এসব মরা গাছের কারণে সড়কটি মরণফাঁদ হয়ে দাঁড়িয়েছে। স্থানীয়দের অভিযোগ, বনবিভাগকে বারবার জানিয়েও কোনও সমাধান পাননি তারা। এ অবস্থায় গাছগুলো দ্রুত সরিয়ে নতুন গাছের চারা রোপনের দাবি জানিয়েছেন স্থানীয় জনপ্রতিনিধিসহ এলাকাবাসী।

কিশোরগঞ্জ গাছ ৪যশোদল ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ইমতিয়াজ আহমেদ রাজন বলেন, ‘এই সড়কের প্রায় দেড় হাজার মরা গাছের জন্য কয়েক বছরধরেই এলাকাবাসী ঝুঁকির মধ্যে রয়েছে। যানবাহনের ওপর গাছ পড়ে বেশ কয়েকটি দুর্ঘটনাও ঘটেছে। আমরা কর্তৃপক্ষকে বেশ কয়েক দফা বললেও কাজ হয়নি।  বন বিভাগের গাফিলতিতেই বছরের পর বছর গাছগুলো রয়ে গেছে।’

তবে বনবিভাগ বলছে- কয়েকবার টেন্ডার দিয়েও নানা জটিলতায় মরা গাছগুলো সরানো সম্ভব হয়নি। এবার আর হতাশ হতে হবে না জানিয়ে কিশোরগঞ্জ বন বিভাগের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আব্দুল মোমেন ভূঁইয়া বলেন, ‘এই সড়কের সবগুলো মরা গাছ আমরা নাম্বারিং করে চিহ্নিত করেছি। গত বছরও গাছগুলো বিক্রির জন্য দরপত্র আহ্বান করা হয়েছিল।  কিন্তু  বিক্রি করতে না পারায় অপসারণ করা সম্ভব হয়নি। তবে এ বছর আবারও দরপত্র আহ্বান করে সাড়া পেয়েছি। খুব দ্রুত গাছগুলো অপসারণ করে এলাকাবাসীকে ঝুঁকি মুক্ত করা হবে।’