এখনও থামেনি আহাজারি

এখনও থামেনি স্বজনদের আহাজারি (ছবি: নাসিরুল ইসলাম)রানা প্লাজার ভবন ধসের পাঁচ বছর পেরিয়ে গেলেও এখন পর্যন্ত  নিহত ও নিখোঁজ শ্রমিকদের স্বজনদের আহাজারি থামেনি। মঙ্গলবার (২৪ এপ্রিল) সকালে রানা প্লাজার সামনে নিহতদের প্রতি শ্রদ্ধা জানাতে এসে কান্নায় ভেঙে পড়েন তারা।
মঙ্গলবার ভবন ধসের ঘটনায় প্রিয় মানুষটির খোঁজে রানা প্লাজার সামনে এসে কান্নায় ভেঙে পড়েন আসিয়া বেগম। তার মেয়ে শিলা আক্তার রানা প্লাজার তৃতীয় তলায় নিউওয়েব বটমস কারখানায় কাজ করতেন। নিজের প্রিয় মেয়ের লাশ এখনও পাননি তিনি।
আসিয়ার মতো কুষ্টিয়ার শাহানা বেগমও তার মেয়ের লাশ খুঁজে পায়নি। রানা প্লাজার দুর্ঘটনা তার মেয়েকে কেড়ে নিয়েছে। তিনি জানান, মেয়ের লাশ দেখার সুযোগ না হওয়ায় রানা প্লাজার সামনে প্রতিবছরের এই দিনটিতে এখানে চলে আসেন তিনি।
আসিয়া ও শাহানা বেগমের মতো আরও অনেকেই তাদের পরিবারের প্রিয় মানুষটির এভাবে হারিয়ে যাওয়া মেনে নিতে পারেনি গত পাঁচ বছরেও। মঙ্গলবার সকালে রানা প্লাজার দুর্ঘটনায় নিহত ও নিখোঁজ শ্রমিকের স্বজনেরা সাভার বাজার বাসস্ট্যান্ড এলাকায় জড়ো হতে থাকেন। এ সময় রানা প্লাজার দিকে তাকিয়ে অঝোরে কাঁদতে দেখা যায় স্বজনদের। এ সময় নিহত ও নিখোঁজ শ্রমিকের স্বজনেরা ভবন ধসের ঘটনায় দোষীদের সর্বোচ্চ শাস্তি ও রানার ফাঁসির দাবি জানান।
এখনও থামেনি স্বজনদের আহাজারি
এদিকে ভবন ধসের পাঁচ বছর উপলক্ষে সকাল থেকে রানা প্লাজার সামনে নির্মিত অস্থায়ী বেদিতে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানান বিভিন্ন শ্রমিক সংগঠনের নেতাকর্মীরা। নিহত ও নিখোঁজ শ্রমিকের স্বজনেরাও ওই বেদিতে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানান।
এ সময় বিভিন্ন শ্রমিক সংগঠনের পক্ষ থেকে ঢাকা-আরিচা মহাসড়কে বিক্ষোভ মিছিলের আয়োজন করা হয়। মিছিল শেষে রানা প্লাজার সামনে এক সংক্ষিপ্ত সমাবেশের আয়োজন করা হয়। সমাবেশে বিভিন্ন শ্রমিক নেতারা রানা প্লাজার ঘটনার দোষীদের শাস্তি ও সোহেল রানার ফাঁসির দাবি জানান।
গার্মেন্টস শ্রমিক ঐক্য ফোরামের সভাপতি মোশরেফা মিশু বলেন, ‘রানা প্লাজা ট্যাজেডির ৫ বছর অতিবাহিত হলেও এখনও শেষ হয়নি বিচার কাজ। কয়েক দিন আগে রানার মায়ের মাত্র ৬ বছরের কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে। সেখানেও রাজনীতি রয়েছে। এর মাধ্যমে রানার অপরাধ ধামাচাপা দেওয়ার পাঁয়তারা চলছে। তবে বাংলাদেশের জনগণ এটা মেনে নেবে না।’ অবিলম্বে ভবন মালিক রানাসহ দোষীদের ফাঁসির দাবি জানান তিনি।