পুলিশ ও শ্রমিকরা জানান, সিদ্ধিরগঞ্জ পুল এলাকার এমএস টাওয়ারে অবস্থিত প্যাপিলন নিট কম্পোজিট লি.-এর ইউনিট-২ ও একই স্থানের ইকবাল গ্রুপে অবস্থিত ইউনিট-১-এ মোট ৪৮০ জন শ্রমিক কাজ করছেন। তাদের এপ্রিল মাসের বেতন বকেয়া রয়েছে। মঙ্গলবার ওই কারখানার ইউনিট-১-এর ২৮০ জন শ্রমিক তাদের বকেয়া বেতন পরিশোধের দাবিতে সড়ক অবরোধ ও বিক্ষোভ প্রদর্শন করেন। পরে মালিক পক্ষ বৃহস্পতিবার বেতন দেওয়ার আশ্বাস দিলে পরিস্থিতি শান্ত হয়। কিন্তু বৃহস্পতিবার শ্রমিকরা সকালে কারখানার সামনে এসে দেখতে পান মালিক পক্ষ কারখানাটিতে তালা লাগিয়ে চলে গেছেন। ফলে শ্রমিকরা ক্ষুব্ধ হয়ে ওঠে। তারা সকাল ৯টায় সিদ্ধিরগঞ্জ পুল বাসস্ট্যান্ডে এসে অবরোধ সৃষ্টি করে। অবরোধে ইউনিট-২-এর শ্রমিকদের সঙ্গে ইউনিট-১-এর শ্রমিকরাও যোগ দেন। এ সময় বেতন পরিশোধের দাবিতে তারা মালিকের বিরুদ্ধে বিক্ষোভ প্রদর্শন করে। খবর পেয়ে শিল্পাঞ্চল পুলিশ ও থানার ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাসহ পুলিশ এসে শ্রমিকদের রাস্তা থেকে সরানোর চেষ্টা করে ব্যর্থ হন। কয়েক দফায় রাস্তা থেকে তাদের সরিয়ে দেওয়া হলেও তারা আবারও রাস্তায় এসে অবরোধ সৃষ্টি করেন। এতে যানবাহন চলাচলে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি হয়। অবরোধের কারণে সড়কে তীব্র যানজট সৃষ্টি হয়। দুপুর ১২টায় শ্রমিক নেতারা এসে বেতন পাইয়ে দেওয়ার আশ্বাস দিয়ে শ্রমিকদের রাস্তা থেকে সরিয়ে নেন।
নারী শ্রমিক সীমা আক্তার জানান, বৃহস্পতিবার সকালে বেতন চাইতে গেলে মালিক পক্ষের লোক ফ্লোর ইনচার্জ সাইফুল আমাকে মারধর করে।
শ্রমিক আশরাফুল ইসলাম জানান, শ্রমিকদের এপ্রিল মাসের ও কর্মচারীদের তিন মাসের বেতন বকেয়া রয়েছে। সর্বশেষ বৃহস্পতিবার বকেয়া বেতন দেওয়ার কথা ছিল। কিন্তু মালিক পক্ষ বেতন না দিয়ে ফ্যাক্টরিতে তালা লাগিয়ে পালিয়ে গেছে। ফলে আমরা রাস্তায় নামতে বাধ্য হয়েছি। আমরা সকাল ৯টা থেকে রাস্তায় অবস্থান করছি।
শিল্পাঞ্চল পুলিশ-৪, নারায়ণগঞ্জ-এর সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপার মতিউর রহমান জানান, শ্রমিকদের এপ্রিল মাসের বেতন বকেয়া আছে। আবার মার্চ মাসেরও কিছু কিছু বেতন এখনও বাকি আছে বলে শ্রমিকরা জানিয়েছেন। বৃহস্পতিবার বেতন দেওয়ার কথা ছিল। কিন্তু মালিক পক্ষ বেতন না দিয়ে ফ্যাক্টরিতে তালা দিয়ে চলে যায়। শ্রমিকরা সকাল ৯টা থেকে আন্দোলন শুরু করেন। কিছুক্ষণ পর পর তাদের রাস্তা থেকে সরিয়ে দেওয়া হয়। কিন্তু আবারও তারা সড়কে এসে অবস্থান নেন। এভাবে তাদের তিনবার রাস্তা থেকে সরানো হয়েছিল।
এ বিষয়ে প্যাপিলন নিট কম্পোজিটের পরিচালক ফারুক হোসেনের (মার্কেটিং ও অপারেশন) মোবাইল ফোনে একাধিকবার কল করা হলেও তার ফোনটি বন্ধ থাকায় তাদের কোনও বক্তব্য নেওয়া যায়নি।