ফতুল্লায় পোশাক শ্রমিক-মালিকপক্ষের সংঘর্ষে আহত ২০

শ্রমিকদের বিক্ষোভ সমাবেশনারায়ণগঞ্জের ফতুল্লায় সাকুরা গার্মেন্টস নামে একটি পোশাক কারখানার শ্রমিকদের সঙ্গে মালিকপক্ষের লোকজনের সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। এ ঘটনায় কমপক্ষে ২০ জন আহত হয়েছেন। সোমবার (২৫ জুন) সকালে এ ঘটনা ঘটে।  ফতুল্লা মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মঞ্জুর কাদের ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে জানান,  উত্তেজিত শ্রমিকরা কারখানায় ব্যাপক ভাংচুর চালানোর পর কারখানাটি আগামী বৃহস্পতিবার পর্যন্ত (২৮ জুন)  বন্ধ ঘোষণা করা হয়।

পুলিশ ও প্রত্যক্ষদর্শী সূত্রে  জানা যায়, শিবু মার্কেট এলাকার সাকুরা পোশাক কারখানার শ্রমিকরা শ্রমিক ছাঁটাই বন্ধ ও বকেয়া বেতন ও বোনাসের দাবিতে গতকাল রবিবার (২৪ জুন)  বিক্ষোভ করে। বিক্ষুদ্ধ শ্রমিকরা এক পর্যায়ে কারখানার কর্মকর্তাদের মারধর করে। এসময় উত্তেজিত শ্রমিকরা অন্যান্য কারখানার শ্রমিকদের নিয়ে ঢাকা-নারায়ণগঞ্জ পুরাতন সড়ক ফতুল্লা মডেল থানার সামনে এক ঘণ্টা সড়ক অবরোধ করে। পরে পুলিশ গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। এই ঘটনায় কারখানা কর্তৃপক্ষ কর্মকর্তাদের ওপর হামলা ও মারধরের ঘটনায় মামলা দায়ের করে। পরে সোমবার সকাল ৮টার দিকে শ্রমিকরা কাজে যোগ দিতে যায়। কারখানা কর্তৃপক্ষ রবিবারের ঘটনার জন্য দায়ী ২০-২৫ জন শ্রমিকদের চিহ্নিত করে কারখানায় ঢুকতে বাধা দেয়। এসময় কারখানার অন্য শ্রমিকরা ওই শ্রমিকদের ছাড়া কাজ করতে অস্বীকৃতি জানায়। এ নিয়ে শ্রমিকদের সঙ্গে কারখানার কর্মকর্তা-কর্মচারীদের হাতাহাতির ঘটনা ঘটে। বিক্ষুদ্ধ শ্রমিকরা কারখানায় ভাঙচুরের চেষ্টা চালায়। এক পর্যায়ের কারখানার মালিকপক্ষের লোকজন লাঠিসোটা ও হকিস্টিক নিয়ে শ্রমিকদের ওপর হামলা চালায়। এসময় দু’পক্ষের সংঘর্ষে বাঁধে। সংঘর্ষে কারখানার নারী-পুরুষসহ কমপক্ষে ২০ জন আহত হয়। সংঘর্ষকালে বিক্ষুদ্ধ শ্রমিকরা কারখানা ইটপাটকেল নিক্ষেপ করে ব্যাপক ভাঙচুর চালায়। পরে ঘটনাস্থলে পুলিশ গিয়ে লাঠিচার্জ করে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। পরে বিক্ষুদ্ধ শ্রমিকরা মিছিল নিয়ে ফতুল্লা থানার সামনে যায়।

শ্রমিকদের অভিযোগ, মালিকপক্ষের লোকজন পরিকল্পিতভাবে লাঠিসোটা ও হকিস্টিক নিয়ে শ্রমিকদের ওপর হামলা চালিয়েছে। হামলায় তাদের কয়েকজন শ্রমিক আহত হয়েছে। আহতরা নগরীর খানপুর তিন শয্যা হাসপাতালসহ বিভিন্ন হাসপাতালে চিকিৎসা দেয়া হয়েছে।

তবে কারখানার মালিক মো. শাহজাহান জানান, তার কারখানায় কোনও শ্রমিকের বেতন বোনাস বকেয়া নেই। পরিকল্পিতভাবে একটি মহল পোশাক কারখানায় শ্রমিক অসন্তোষের চেষ্টা করছে।

ওসি মঞ্জুর কাদের বলেন, ‘পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে এনেছে। ঘটনাস্থল থেকে লাঠিসোটা ও হকিস্টিক উদ্ধার করা হয়েছে। এই ঘটনায় জড়িত কাউকে ছাড় দেওয়া হবে না।’

বিকেএমইএ’র সহ-সভাপতি মোহাম্মদ হাতেম জানান, ‘এই ঘটনায় বিকেএমইএ সভাপতিসহ আমরা ঘটনাস্থলে ছিলাম। আগামী বৃহস্পতিবার পর্যন্ত কারখানা বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। ঘটনা তদন্ত করে যাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ প্রমাণিত হবে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে। আগামী শনিবার কারখানা খোলা হবে।’