নরসিংদীতে বাস-মাইক্রোবাস মুখোমুখি সংঘর্ষ, নিহত ৭

01

নরসিংদীর শিবপুর উপজেলায় একটি যাত্রীবাহী বাস ও মাইক্রোবাসের মুখোমুখি সংঘর্ষের ঘটনায় ৭ জন নিহত হয়েছেন। এ ঘটনায় আহত হয়েছেন ১৪ জন। মঙ্গলবার (১৪ আগস্ট) সকাল সাড়ে ৭টায় শিবপুর উপজেলার ঢাকা-সিলেট মহাসড়কের সোনাইমুড়ির টেক (কুন্দারপাড়া) নামক স্থানে এ দুর্ঘটনা ঘটে। ইটাখোলা হাইওয়ে পুলিশ ফাঁড়ির ইন্সপেক্টর মো. হাফিজুর রহমান ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করেছেন।

নিহতরা হলেন, নরসিংদীর রায়পুরা উপজেলার নবুয়ারচর এলাকার প্রান্তিকা বর্মণ (৬), চাঁদপুরের মতলব উপজেলার সাইটনল এলাকার সুজন বর্মণ (৩৫), তার স্ত্রী মিতালী ওরফে ভুলু বর্মণ (২৫) তাদের মেয়ে ¯স্নিগ্ধা বর্মণ (৫) এবং একই এলাকা ও নারায়ণগঞ্জের আড়াইহাজারের দুপতারা এলাকার স্নিগ্ধা বর্মণ (৫), সৌরভ বর্মণ (১২) ও আরেকজনের (২৩) পরিচয় এখনও জানা যায়নি।

আহতদের মধ্যে কয়েকজনকে প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে। বাকিদের ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। হতাহতরা সবাই মাইক্রোবাসের যাত্রী।

ইটাখোলা হাইওয়ে পুলিশ ফাড়ির পরিদর্শক মো. হাফিজুর রহমান ও নিহতদের স্বজনরা জানান, রায়পুরা থেকে বিয়ের অনুষ্ঠান শেষে মঙ্গলবার সকালে যাত্রীবাহী একটি মাইক্রোবাস ঢাকার দিকে যাচ্ছিল। মাইক্রোবাসটি সোনাইমুড়ির টেক পৌঁছালে বিপরীত দিক থেকে আসা সিলেটগামী মিতালী পরিবহনের একটি যাত্রীবাহী বাস চাকা ফেটে গিয়ে নিয়ন্ত্রণ হারালে মাইক্রোবাসটিকে চাপা দেয়। এসময় মাইক্রোবাসটি দুমড়ে মুচড়ে যায়। এতে ঘটনাস্থলেই মারা যায় তিনজন। পরে নরসিংদী জেলা হাসপাতালে নেওয়ার পর মারা যায় আরও একজন। সেখান থেকে আশঙ্কাজনক অবস্থায় ঢাকা মেডিক্যালে নেওয়ার পথে মারা যায় আরও তিনজন।

আহতদের মধ্যে যাদের নাম পাওয়া গেছে তারা হলেন- নরসিংদীর রায়পুরার মো. আমজাদ হোসেন (৩৮), রুমা বর্মণ (২৫), সুমা বর্মণ (২৫), সায়ন্তিকা (৩), ডেমরার দেলোয়ার হোসেন (২৪), আড়াইহাজারের শামসুজ্জামান (৩৫), মতলবের নিলতা বর্মণ (৩২), অনিক চন্দ্র বর্মণ (১২), বিক্রম চন্দ্র বর্মণ (৪০), সজল (৩০), রাজু বর্মণ (২৫), মুন্সীগঞ্জের সোহাগ (২৮) ও কিশোরগঞ্জের জমশেদ (৩০)।

নিহত মিতালী বর্মণের বোন শুভা রানী বর্মণ বলেন, চাঁদপুরসহ বিভিন্ন এলাকা থেকে আমরা মোট ৬০ জন বরযাত্রী বিয়ের অনুষ্ঠানে গিয়েছিলাম। সকালে ফেরার পথে প্রথমে তিনটি মাইক্রোবাস ও পরে বর কনেকে নিয়ে একটি মাইক্রোবাসযোগে রায়পুরা থেকে বাড়ি ফিরছিলাম। আর এই মাইক্রোবাসটিই দুর্ঘটনার শিকার হয়।

নরসিংদী জেলা হাসপাতালের দায়িত্বপ্রাপ্ত মেডিক্যাল অফিসার ডা. একরামুল হক শামীম বলেন, ‘চারজনকে নিহত এবং ১৭ জনকে আহত অবস্থায় হাসপাতালে আনা হয়েছে। এরমধ্যে ১৫ জনকে গুরুতর আহত অবস্থায় ঢাকা মেডিক্যালে রেফার্ড করা হয়েছে। বাকি দুইজনকে প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে ছেড়ে দেওয়া হয়।’

ইটাখোলা হাইওয়ে পুলিশ ফাঁড়ির পরিদর্শক মো. হাফিজুর রহমান বলেন, ‘এখন পর্যন্ত ৪ জন মারা যাওয়ার তথ্য পেয়েছি, ঢাকা মেডিক্যালে নেওয়ার পথে কেউ মারা গেছে কিনা সে বিষয়ে পরে নিশ্চিত হওয়া যাবে।’

তিনি আরও বলেন, ‘দুর্ঘটনাস্থল থেকে বাসটি আটক করা হলেও চালক পালিয়ে গেছে। এ ঘটনায় মিতালী পরিবহনের বিরুদ্ধে মামলা দায়েরের প্রস্তুতি চলছে।’