গাজীপুরে মেয়রের আশ্বাসে অবরোধ তুলে নিলো শ্রমিকরা

ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়ক অবরোধ ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়ক অবরোধ তুলে নিয়েছে শ্রমিকরা। গাজীপুর সিটি করপোরেশনের মেয়র জাহাঙ্গীর আলমের আশ্বাসে বিকাল ৪টার দিকে তারা অবরোধ তুলে নেয়। আগামী রবিবার (১৯ আগস্ট) তাদের বেতন-বোনাস পরিশোধ করা হবে বলে মেয়র তাদেরকে আশ্বাস দিয়েছেন।

জানতে চাইলে মেয়র জাহাঙ্গীর আলম বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘আমি কারখানা মালিক, শ্রমিক ও পুলিশ প্রশাসনের সঙ্গে কথা বলেছি। মালিক জানিয়েছেন রবিবার তাদের বেতন-বোনাস পরিশোধ করা হবে। সেজন্য আমি তাদেরকে অবরোধ তুলে নিতে অনুরোধ জানিয়েছি। আমি তাদেরকে বলেছি- উপস্থিত থেকে তাদের দাবি-দাওয়া আদায় করে দেবো।’

এর আগে শুক্রবার (১৭ আগস্ট) সকাল ৯টা থেকে এলিগেন্ট শিল্প গ্রুপের কেসিওপিয়া অ্যাপারেলস এবং গার্মেন্টসের প্রায় ১৪ হাজার শ্রমিক সর্বনিন্ম এক বছর কর্মকালীন শ্রমিকের শতভাগ ঈদ বোনাস, চলতি মাসের ১৫ দিনের বেতন ও সোমবারের পরিবর্তে শুক্রবার কারখানা ছুটির দাবিতে ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়ক অবরোধ করে। তারা গাজীপুর সদর উপজেলার হোতাপাড়া এলাকায় এই অবরোধ কর্মসূচি পালন করে। এসময় মহাসড়কের দুই পাশে পাঁচ কিলোমিটার করে ১০ কিলোমিটার এলাকায় যানজটের সৃষ্টি হয়।

শ্রমিকরা জানায়, এলিগেন্ট শিল্প গ্রুপের কেসিওপিয়া অ্যাপারেলস এবং গার্মেন্টসের প্রায় ১৪ হাজার শ্রমিক রয়েছে। এদের বেশিরভাগ শ্রমিকের কর্মকালীন বয়স এক বছরের কিছু বেশি। সব শ্রমিক চলতি আগস্ট মাসের ১৫ দিনের বেতন-ভাতা ও কমপক্ষে এক বছর কর্মকালীন বয়সের শ্রমিকদের শতভাগ ঈদ বোনাসের জন্য কারখানা ব্যবস্থাপকদের কাছে দাবি জানিয়ে আসছিলেন। তাছাড়া শুক্রবার জুমার নামাজের জন্য শ্রমিকদের সময় দেওয়া হয় না। তারা সোমবারের পরিবর্তে শুক্রবার সাপ্তাহিক ছুটি দাবি করেন। এসব বিষয়ে ব্যবস্থাপনা বিভাগ কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা বলার প্রতিশ্রুতিও দিয়েছিলেন। কিন্তু ১৬ আগস্টেও তাদের দাবি মেনে নেওয়ার কোনও প্রতিশ্রুতি না পাওয়ায় শ্রমিকরা ক্ষুব্ধ হয়ে ওঠে।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, তারা শুক্রবার সকাল ৯টায় ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কের হোতাপাড়া এলাকায় শান্তিপূর্ণ অবস্থান নেয়। এসময় মহাসড়কেরর ওই স্থানে সব ধরনের যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। পশু ব্যবসায়ীদের অনুরোধে বেলা ১১টা থেকে পশুবাহী যানবাহন ও অ্যাম্ব্যুলেন্সগুলোকে একটি লেনের মাধ্যমে চলাচলের সুযোগ করে দেয় শ্রমিকরা।

গাজীপুর শিল্প পুলিশের পরিদর্শক হাবিব ইস্কান্দার বলেন, ‘পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে অবরোধের শুরু থেকেই শিল্প, জেলা ও মহাসড়ক পুলিশ হোতপাড়া এলাকায় সশস্ত্র অবস্থান নেয়। শ্রমিকদের সঙ্গে কয়েকদফা আলোচনা করা হয়। এক বছর কর্মকালীন বয়সের শ্রমিকদের এক হাজার টাকা বোনাস দেওয়ার প্রস্তাবও দেওয়া হয়। কিন্তু কোনও কাজ হয়নি। দুপুর আড়াইটার দিকে কারখানা কর্র্তৃপক্ষ ঘটনাস্থলে আসে। কর্তৃপক্ষের সঙ্গে পুলিশ সদস্যদের আলোচনা হয়।’