গাজীপুরে অপহরণের একদিন পর শিশুর লাশ উদ্ধার, গ্রেফতার ১

 গাজীপুর

গাজীপুরে অপহরণের একদিন পর বৃহস্পতিবার বিকেলে এক শিশুর লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ। বোনের প্রেমিককে শায়েস্তা করতে গিয়ে ওই শিশুটিকে হত্যা করা হয়েছে। এ ঘটনায় পোশাক কর্মী বাবু ইসলামকে (২৪) গ্রেফতার করেছে পুলিশ। জয়দেবপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি)আসাদুজ্জামান বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

নিহতের নাম আব্দুল্লাহ আল নোমান (৫)। সে গাজীপুর সদর থানার বানিয়ারচালা এলাকার লোকমান হোসেনের ছেলে। 

জয়দেবপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি)আসাদুজ্জামান জানান, গাজীপুর সদর থানার বানিয়ারচালা এলাকায় স্ত্রী-সন্তান নিয়ে নিজ বাড়িতে বাস করেন লোকমান হোসেন। ওই বাড়িতে ভাড়া থেকে বাবু ইসলাম স্থানীয় জিটিসি গ্রুপের পোশাক কারখানায় অপারেটর পদে এবং তার বোন শান্তা স্থানীয় মোশারফ কম্পোজিট কারখানায় চাকুরি করে। তারা দিনাজপুরের কাহারুল থানার গুলিয়ারা গ্রামের মৃত জব্বর আলীর ছেলে ও মেয়ে। একই বাড়িতে বসবাস করার সুযোগে বাবু ইসলামের ডিভোর্সি বোন শান্তা’র সঙ্গে নিহত নোমানের মামা আলমগীরের প্রেমের সম্পর্ক গড়ে উঠে। এ সম্পর্ক মেনে না নেওয়ায় বাবুর সঙ্গে আলমগীরের সম্পর্কের অবনতি ঘটে। এক পর্যায়ে ওই বাসা ছেড়ে বাবু ও শান্তা পৃথক দুটি বাসা ভাড়া নেয়। কিন্তু আলমগীর এতেও থেমে না যাওয়ায় তার ওপর ক্ষুব্ধ হয় বাবু। এর জের ধরে বুধবার সকালে বাসার পাশের খেলা করার সময় শিশু নোমানকে ডেকে কৌশলে বাবু তার ঘরে নিয়ে যায়। পরে মুক্তিপণ আদায়সহ আলমগীরকে শায়েস্তার  জন্য বাবু এনার্জি ড্রিংকস ‘টাইগার’র সঙ্গে মাত্রারিক্ত ঘুমের ওষুধ মিশিয়ে নোমানকে খাওয়ায়। এতে নোমান অচেতন হয়ে পড়ে এবং সেখানেই মারা যায়। দিনভর বাবু তার কক্ষে নোমানের লাশ লুকিয়ে রাখে। পরে রাত ১১টার দিকে লাশটি একটি কাঁধ ব্যাগে ভরে বাবু বাসে চড়ে টঙ্গীর গাজীপুরা এলাকায় নিয়ে যায়। সেখানে টপলেন পোশাক কারখানার উত্তরে ময়লার স্তুপে লাশটি ব্যাগ থেকে ফেলে রেখে বাবু বাসায় ফিরে আসে।

জয়দেবপুর থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) আনোয়ার হোসেন জানান, স্বজনরা বিভিন্নস্থানে খোঁজাখুঁজি করেও শিশু নোমানের সন্ধান না পেয়ে বৃহস্পতিবার পুলিশকে জানায়। পুলিশ এ ঘটনায় জড়িত সন্দেহে বাবু ইসলামকে সকালে গ্রেফতার করে। পুলিশের জিজ্ঞাসাবাদে শিশু নোমানকে হত্যার কথা স্বীকার করে বাবু। পরে তার দেওয়া তথ্যমতে বিকেলে শিশুটির লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য শহীদ তাজউদ্দীন আহমদ মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়। এ ঘটনায় মামলা দায়েরের প্রস্তুতি চলছে।