বিদ্যালয়ের শহীদ মিনারের জায়গায় ক্লাবঘর!




নরসিংদীতে বিদ্যালয়ের জমিতে ক্লাব ঘর নির্মাণের অভিযোগনরসিংদী সদর চৌয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় মাঠের একপাশ দখল করে ক্লাবঘর নির্মাণের অভিযোগ উঠেছে। স্কুলের মাঠের পাশের ওই জমি স্কুলের শহীদ মিনারের জন্য রাখা হয়েছিল বলে জানা গেছে। এ ঘটনায় উপজেলা প্রশাসনের হস্তক্ষেপ চেয়ে ৯ ডিসেম্বর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কাছে লিখিত চিঠি দেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছে স্কুল কর্তৃপক্ষ।

লিখিত চিঠিতে বলা হয়েছে, নরসিংদী সদর উপজেলার ৬৭ নম্বর চৌয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের মাঠের দক্ষিণ-পশ্চিম কোনার স্কুলের সীমানা প্রাচীর ভেঙে গত ৭ ডিসেম্বর ক্লাব ঘর নির্মাণের কাজ শুরু করে স্থানীয় কয়েকজন যুবক। স্কুল কর্তৃপক্ষ তাতে বাধা দিলে ক্লাব ঘর নির্মাণকারীরা ক্ষমতার বলে অসঙ্গতিপূর্ণ আচরণ করে, ভয়ভীতি এবং হুমকি দেয়। এভাবে স্কুলের মাঠে ক্লাব নির্মাণ করায় স্কুলের শিক্ষার্থীদের চলাফেরা ও খেলাধুলা বিঘ্নিত হচ্ছে। এ অবস্থায় স্কুলের সীমানা নির্ধারণ এবং ক্লাব ঘর নির্মাণ বন্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য উপজেলা প্রশাসনের নিকট অনুরোধ জানানো হয়েছে।

বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক রাবেয়া খাতুন বলেন, ‌‘অনৈতিকভাবে ক্লাব ঘর নির্মাণ কাজে বাধা দিলে স্কুল কর্তৃপক্ষকে বিভিন্ন ধরনের ভয়ভীতি এবং হুমকি দেওয়া হয়। ক্লাব ঘরে ২০১৬-২০১৭ অর্থবছরের ত্রাণের টিন ব্যবহার করা হয়েছে। বিষয়টি স্কুল কমিটি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানিয়েছে। তাদের পরামর্শে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বরাবর অভিযোগপত্র দেওয়া হয়েছে।’

সদর উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মো. আবুল ফজল বলেন, ‘স্কুল কমিটির সভাপতি শিক্ষা অফিসে এসেছিলেন। এ বিষয়ে তাদের সঙ্গে কথা হয়েছে।’

স্কুলের জমিদাতা মুক্তিযোদ্ধা আমিরুর জামান খাঁন ও সরুজ মিয়া বলেন, ‘বিদ্যালয়ের জমিটি এলাকার নতুন প্রজন্মকে শিক্ষিত করে গড়ে তোলার জন্য প্রদান করা হয়েছে। এলাকার শিক্ষার্থীদের সুবিধার জন্য প্রাথমিক বিদ্যালয়টি উচ্চ বিদ্যালয়ে পরিণত করতেও কাজ চলছে।’

মাধবদী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবু তাহের দেওয়ান বলেন, ‘ইউএনও স্যারের লিখিত নির্দেশ পেয়ে আমরা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছি। সেখানে জমি সংক্রান্ত জটিলতা রয়েছে বলে স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান মো. মাহবুবুল হাসান বিষয়টি মীমাংসার দায়িত্ব নিয়েছেন।’

চেয়ারম্যান মো. মাহবুবুল হাসান বলেন, ‘বিদ্যালয়ের সভাপতি কাজগপত্র নিয়ে আসার পর দেখলাম বিদ্যালয়ের জায়গা হচ্ছে ৩০ শতাংশ। আর ক্লাবের সদস্যরা তাদের নিজস্ব জায়গাতেই ক্লাব ঘর নির্মাণ করেছে। ক্লাব ঘরটি বিদ্যালয় এলাকার ভেতরে পড়ে গেছে। তাই জায়গাটি বিদ্যালয়ের হলে ভাল হতো। এ জন্য জায়গাটুকু যাতে বিদ্যালয়ের করা যায় সেজন্য প্রস্তুতি চলছে।’

সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা এ এইচ এম জামেরি হাসান বলেন, ‘সংশ্লিষ্টদের কাগজপত্র চেয়ে তলব করেছি। এগুলো যাচাই করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে। আর ক্লাব ঘরে ত্রাণের টিন ব্যবহারের সুযোগ নেই। এ বিষয়ে খোঁজ নিয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

/এমএফ/টিটি/