শ্রমিক লীগ নেতা আকবর মৃধার লোকজনের বিরুদ্ধে আশুলিয়ার জামগড়া এলাকায় সড়কের পাশের বিভিন্ন দোকান থেকে টোকেন দিয়ে চাঁদা আদায়ের অভিযোগ উঠেছে। অসহায় ও দুস্থ্য শ্রমিকদের কল্যাণের স্বার্থে স্থানীয় প্রায় ৩শ’ দোকানির কাছ থেকে জোরপূর্বক সপ্তাহে ২০ টাকা করে আদায় করা হচ্ছে। আবার কেউ টাকা না দিতে চাইলে তাকে অকথ্য ভাষায় গালাগালসহ বিভিন্ন ধরনের হুমিক দেওয়ার অভিযোগ রয়েছে।
এ ব্যাপারে কথা হলে জাতীয় শ্রমিক লীগের আশুলিয়া থানা কমিটির সভাপতি আকবর মৃধা বলেন,‘চাঁদা আদায়ের বিষয়টি তার জানা নেই।’
তবে একই কমিটির সাধারণ সম্পাদক ইমাম বলেন,‘তারা অসহায় ও দুস্থ্য শ্রমিকদের কল্যাণের স্বার্থে এসব টাকা তোলা হচ্ছে।’
দোকানিরা অভিযোগ করে বলেন,‘তারা নিজেরাই বিকেল থেকে রাত পর্যন্ত সড়কের পাশে দোকান চালিয়ে জীবিকা নির্বাহ করেন। এখান থেকে যে আয় হয়, সেই টাকা দিয়ে তাদের সংসার চালাতে কষ্ট হয়। অথচ দুস্থ্য ও অসহায়দের কথা বলে শ্রমিক লীগের লোকজন তাদের কাছ থেকে সপ্তাহে চাঁদা আদায় করছে।
সরেজমিন গিয়ে দেখা যায়, আশুলিয়ার বাইপাইল-আব্দুল্লাপুর মহাসড়কের পাশে জামগড়া, ছয় তলা ও আশপাশের এলাকার প্রায় তিন শত অস্থায়ী দোকান গড়ে উঠেছে। প্রতি সপ্তাহে এসব দোকান থেকে আশুলিয়া থানা শ্রমিক লীগ নেতারা লোক পাঠিয়ে ও ওই কমিটির যুগ্ন সাধারণ সম্পাদক মামুন নিজে নেতাকর্মীদের সঙ্গে নিয়ে টোকেন দিয়ে ২০ টাকা করে চাঁদা আদায় করেন।
আরমান ও মালেক নামের দুই দোকানি বলেন,‘তিনি জামগড়ার ছয় তলা এলাকায় দীর্ঘ দিন ধরে দোকান চালিয়ে আসছেন। হঠাৎ করে গত কয়েক দিন ধরে স্থানীয় শ্রমিক লীগ নেতা মামুন তার লোকজন নিয়ে একটি টোকেন দিয়ে ২০ টাকা করে চাঁদা আদায় করছেন। আমরা গরিব দোকানি তাই প্রতিবাদ করার সাহস পাইনি।’
শরিফুল নামে এক কাঁচামাল ব্যবসায়ী বলেন,‘শ্রমিক লীগ নেতার লোকজন টোকেন দিয়ে আমার কাছ থেকেও ২০ টাকা করে চাঁদা আদায় করেছেন। এখন থেকে ২০ টাকার পরবর্তীতে ৫০ টাকা করে নেওয়া হবে বলে তারা জানিয়েছে।
জসিম,শান্ত ও সুজনসহ একাধিক দোকানি অভিযোগ করে বলেন,‘শ্রমিক লীগের লোকজন গত কয়েকদিন আগে হঠাৎ করেই আমাদের দোকানে এসে ২০ টাকা দাবি করেন। কেন টাকা দিতে হবে? এমন প্রশ্ন করলে তারা উত্তেজিত হয়ে বলেন,এখন আমাদের সময় তাই প্রতি সপ্তাহে টাকা দিতে হবে। বর্তমানে ২০ টাকা ও পরে ৫০ টাকা করে দিতে হবে, এই বলে তারা শাসিয়ে যায়। আমরা শুধু বিকেল থেকে রাত পর্যন্ত সড়কের পাশে দোকান চালাই। এ থেকে যে আয় হয় তা দিয়ে সংসার চালাতে কষ্ট হয়। অথচ দুস্থ্য ও অসহায়দের কথা বলে শ্রমিক লীগের লোকজন আমাদের কাছ থেকে প্রতি সপ্তাহে চাঁদা আদায় করছে।’
আশুলিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) রিজাউল হক দিপু বলেন,‘এ ধরনের কোনও বিষয় তার জানা নেই। তবে কেউ যদি টোকেন দিয়ে চাঁদায় আদায়ের অভিযোগ করে তাহলে তাদের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’