সহপাঠীকে জড়িয়ে অপবাদ দেওয়ায় কিশোরীর আত্মহত্যা!

গাজীপুর

গাজীপুরের শ্রীপুরে সহপাঠীকে জড়িয়ে আপত্তিকর কথাবার্তা বলায় শিমলা রানী দাস (১৪) নামে এক কিশোরী আত্মহত্যা করেছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। শুক্রবার (১২ এপ্রিল) বিকালে উপজেলার রাজাবাড়ী ইউনিয়নের রাজেন্দ্রপুর (সাটিয়াবাড়ী) এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। শিমলা রাজেন্দ্রপুর উচ্চবিদ্যালয়ের অষ্টম শ্রেণির ছাত্রী।
এ ঘটনায় কিশোরীর বাবা নৃত্যানন্দ ঋষি দাস সাটিয়াবাড়ি এলাকার রাজকুমার চন্দ্র মনি দাস (৩০) ও রিপন চন্দ্র মনি দাসকে (২৭) অভিযুক্ত করে শনিবার দুপুরে শ্রীপুর থানায় একটি মামলা দায়ের করেছেন।
শিমলা কিশোরগঞ্জের বাজিতপুর উপজেলার বাজিতপুর দীঘিরপাড় এলাকার নিত্যানন্দ ঋষি দাসের মেয়ে। সে মা-বাবার সঙ্গে গাজীপুরের শ্রীপুর উপজেলার সাটিয়াবাড়ি এলাকায় ভাড়া থাকতো।
ঋষি দাস জানান, অভিযুক্ত যুবকেরা স্কুলে যাতায়াতের পথে তার মেয়েকে প্রতিবেশী সুকুমার চন্দ্র দাসের ছেলে ওই স্কুলের দশম শ্রেণির ছাত্র সুখচানকে জড়িয়ে নানা ধরনের অপবাদ ও তার মেয়েকে উত্ত্যক্ত করতো।
তিনি আরও জানান, বৃহস্পতিবার রাত ৮টায় শিমলা তার মা-বাবার সঙ্গে স্থানীয় একটি মন্দিরে যায়। এ সময় অভিযুক্তরা ওই মন্দিরে গিয়ে তার মেয়েকে উত্ত্যক্ত করে। শুক্রবার দুপুরে শিমলার মা অফিস থেকে এসে আবার চলে যায়। সে সময় শিমলার ছোট দুই ভাইবোন বাইরে খেলতে যায়। পরে বিকাল সাড়ে ৪টায় ছোট বোন শিমু ঘরে এসে দরজা বন্ধ দেখতে পায়। পরে ডাকাডাকি করে কোনও সাড়া না পেয়ে তার ভাইকে ডাক দেয়। ভাই জানালার ফাঁক দিয়ে ঘরে তাকিয়ে দেখে শিমলা ফ্যানের সঙ্গে ঝুলে আছে। তখন সে চিৎকার দেয়।
পরে প্রতিবেশীরা শিমলার ঝুলন্ত লাশ উদ্ধার করে। ঘটনার পর থেকে রাজকুমার ও রিপন পলাতক রয়েছে।
শিমলার বাবার অভিযোগ, বখাটেদের অপবাদ সহ্য করতে না পেরে তার মেয়ে আত্মহত্যা করেছে। এ ঘটনায় জড়িতদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করেন তিনি।

রাজেন্দ্রপুর উচ্চবিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আসকর আলী বলেন, ‘শনিবার স্কুলে গিয়ে দুপুরের দিকে ঘটনাটি শুনেছি। এরে আগে কখনও শিমলা আমাকে বা শ্রেণিশিক্ষক কাউকে ঘটনাটা জানায়নি।’
শ্রীপুর-কালিয়াকৈর সার্কেলের সহকারী পুলিশ সুপার (এএসপি) আল মামুন বলেন, ‘লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য গাজীপুরের শহীদ তাজউদ্দীন আহমদ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। অভিযুক্ত দুই যুবককে গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে।’