জাবি উপাচার্যের পদত্যাগ দাবি, ভর্তি পরীক্ষায় অবাঞ্ছিত ঘোষণা

সংবাদ সম্মেলনে আন্দোলনকারীরা (ছবি– প্রতিনিধি)

জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের (জাবি) উন্নয়ন প্রকল্পের টাকা ছাত্রলীগ নেতাদের মধ্যে ভাগ করে দেওয়ার অভিযোগ ওঠায় উপাচার্য ফারজানা ইসলামের অপসারণ দাবি করেছেন আন্দোলনরত শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা। এজন্য তারা আগামী ১ অক্টোবর পর্যন্ত উপাচার্যকে পদত্যাগের সময় বেঁধে দিয়েছেন। এছাড়া, আগামী ২২ সেপ্টেম্বর থেকে শুরু হওয়া ভর্তি পরীক্ষার সময় সব ভবনে উপাচার্যকে অবাঞ্ছিত ঘোষণা করা হয়েছে।

বুধবার (১৮ সেপ্টেম্বর) বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের সঙ্গে আলোচনা শেষে সন্ধ্যা পৌনে ৮টায় এক সংবাদ সম্মেলনে এ ঘোষণা দেন আন্দোলনকারীরা। দুর্নীতির অভিযোগের বিচার বিভাগীয় তদন্তের দাবি নিয়ে সিদ্ধান্তে পৌঁছাতে আলোচনায় বসে দুইপক্ষ।

সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন ‘দুর্নীতির বিরুদ্ধে জাহাঙ্গীরনগর’-এর মুখপাত্র দর্শন বিভাগের অধ্যাপক রায়হান রাইন। তিনি বলেন, ‘টেন্ডার ছিনতাইয়ের ঘটনার বিচার না করা, নির্দিষ্ট কিছু প্রতিষ্ঠানকে কাজ পাইয়ে দেওয়া, কমিশন কেলেঙ্কারি, চাঁদা দাবির ঘটনাকে পাঁচ মাস ধরে গোপন রাখা, ৮ ও ৯ তারিখের বৈঠক সম্পর্কে মিথ্যাচার, টাকা ভাগ-বাঁটোয়ারায় সরাসরি যুক্তদের স্বীকারোক্তি—এসব ঘটনার প্রেক্ষিতে আমরা মনে করি, বর্তমান উপাচার্যের নিজ পদে থাকার কোনও নৈতিক অধিকার নেই। আমরা তাকে পদত্যাগ করার দাবি জানাচ্ছি। সসম্মানে পদত্যাগের জন্য আগামী ১ অক্টোবর পর্যন্ত সময় দিচ্ছি। এই সময়ের মধ্যে পদত্যাগ না করলে কঠোর কর্মসূচিতে যাবেন আন্দোলনকারীরা।’ ভর্তি পরীক্ষায় বিঘ্ন ঘটে—এমন কর্মসূচিতে যাবেন না বলেও জানান রায়হান রাইন।

লিখিত বক্তব্যে তদন্তের মাধ্যমে উপাচার্যসহ দুর্নীতিতে জড়িতদের বিরুদ্ধে ফৌজদারি বিধি অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানিয়ে রায়হান রাইন বলেন, ‘পদত্যাগ না করা পর্যন্ত উপাচার্যকে সর্বাত্মক প্রত্যাখ্যান চলবে।’ তিনি আরও জানান, দুর্নীতির অভিযোগের সুষ্ঠু তদন্ত ও উপাচার্যের পদত্যাগের দাবিতে আগামীকাল (বৃহস্পতিবার) দুপুর সাড়ে ১২টায় বিক্ষোভ মিছিলের ডাক দিয়েছেন আন্দোলনরতরা।

প্রসঙ্গত, বিশ্ববিদ্যালয়ের এক হাজার ৪৪৫ কোটি টাকার অধিক উন্নয়ন প্রকল্পে দুর্নীতির অভিযোগের বিচার বিভাগীয় তদন্ত, বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরকে ঘিরে তিনটি দশতলা হলের জন্য বিকল্প স্থান নির্ধারণ এবং মাস্টারপ্ল্যান পুনর্বিন্যাস করে বিশ্ববিদ্যালয়ের অংশীজনদের মতামতের ভিত্তিতে প্রকল্প বাস্তবায়নের দাবিতে ‘দুর্নীতির বিরুদ্ধে জাহাঙ্গীরনগর’ ব্যানারে আন্দোলন করে আসছিলেন শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের এক পক্ষ। গত ১২ সেপ্টেম্বর আলোচনায় দুর্নীতির অভিযোগের তদন্ত ছাড়া বাকি দুই দাবি মেনে নেন উপাচার্য।