পুলিশ প্রতিবেদন দাখিল পর্যন্ত বিসিবির পরিচালক রাসেলের জামিন




বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের (বিসিবি) পরিচালক ও গুলশান ক্লাবের প্রেসিডেন্ট শওকত আজিজ রাসেল মাদক ও গুলি উদ্ধারের মামলায় জামিন পেয়েছেন। এ মামলার পুলিশ প্রতিবেদন দাখিল পর্যন্ত তিনি জামিনে থাকবেন। মঙ্গলবার (১৯ নভেম্বর) সকালে নারায়ণগঞ্জ চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট ফয়সাল আতিক বিন কাদেরের আদালত এ জামিন দেন।

এর আগে গত ৪ নভেম্বর বিচারপতি ওবায়দুল হাসান ও বিচারপতি একেএম জহিরুল হকের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ থেকে তিনি অন্তর্বর্তীকালীন জামিন পান।


আসামি পক্ষের আইনজীবী অ্যাডভোকেট আবুল কালাম আজাদ জানান, এই মামলায় শওকত আজিজ রাসেল হাইকোর্টের জামিনে ছিলেন। তিনি হাইকোর্টের নির্দেশ মতো নারায়ণগঞ্জ চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেটে কোর্টে আত্মসমর্পণ করে জামিন আবেদন করেন। পরে আদালত ৫ হাজার টাকা বন্ডে পুলিশ প্রতিবেদন দাখিল করা পর্যন্ত তার জামিন মঞ্জুর করেন।

প্রসঙ্গত, গত ১ নভেম্বর শওকত আজিজ রাসেলের ব্যবহৃত বিলাসবহুল গাড়ি থেকে বিপুল পরিমাণ মাদক ও গুলি উদ্ধারের দাবি করে পুলিশ। ওইদিন গভীর রাতে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের সিদ্ধিরগঞ্জের সাইনবোর্ড এলাকায় নারায়ণগঞ্জ জেলা গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি) গাড়িটি আটক এবং তল্লাশি করে। গাড়ি থেকে বিপুল পরিমাণ মাদক ও গুলি উদ্ধার করা হয় বলে জানায়। ওই সময় গাড়িতে শওকত আজিজ রাসেলের স্ত্রী ফারাহ রাসেল ও ছেলে আনাব আজিজ ছিলেন।

পুলিশ ওই গাড়ি (ঢাকা মেট্টো-ঘ-১৩-৮৩৭৫) থেকে ২৮ রাউন্ড গুলি, ১ হাজার ২শ’ পিস ইয়াবা, ২৪ বোতল বিদেশি বিভিন্ন ব্র্যান্ডের মদ, ৪৮ ক্যান বিয়ার এবং নগদ ২২ হাজার ৩শ’ টাকা উদ্ধারের কথা জানায়।

শনিবার ২ নভেম্বর দুপুরে সংবাদ সম্মেলন করে নারায়ণগঞ্জের পুলিশ সুপার (এসপি) হারুন অর রশিদ সাংবাদিকদের কাছে এসব তথ্য উপস্থাপন করেন। এ ঘটনায় শনিবার দুপুরে শওকত আজিজ রাসেল ও তার গাড়িচালক সুমনের বিরুদ্ধে অস্ত্র ও মাদক আইনে সিদ্ধিরগঞ্জ থানায় দুটি মামলা করে জেলা ডিবি পুলিশ।
এর আগে ২ নভেম্বর শনিবার সকালে জেলা পুলিশ সুপারের কার্যালয়ে ছুটে যান পারটেক্স গ্রুপের চেয়ারম্যান এমএহাশেম ও তার স্ত্রী সুলতানা হাশেম। ডিবি কার্যালয়ে গিয়ে তারা শওকত আজিজ রাসেলের অবৈধ অস্ত্র উদ্ধারে পুলিশকে সহায়তার আশ্বাস ও মুচলেকা দিয়ে পুত্রবধূ ফারাহ রাসেল ও নাতি আনাব আজিজকে ছাড়িয়ে নিয়ে যান।
তবে এর পরদিন ৩ নভেম্বর রবিবার শিল্পপতি শওকত আজিজ রাসেলের ব্যবসা প্রতিষ্ঠান আম্বর গ্রুপের মালিকানাধীন অনলাইন পোর্টাল নিউজ বাংলাদেশে ওই ঘটনার একটি ভিডিও আপলোড হয়। যেখানে দেখানো হয়, ১ নভেম্বর রাতে রাজধানীর বাসা থেকে শওকত আজিজ রাসেলের স্ত্রী ও ছেলেকে নারায়ণগঞ্জ ডিবি পুলিশের একটি টিম তুলে নিয়ে আসে। এই ভিডিও প্রকাশের পরই তা বিভিন্ন গণমাধ্যমে ভাইরাল হয়ে ব্যাপক তোলপাড় শুরু হয়।
৩ নভেম্বর বিকেলে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এক প্রজ্ঞাপণে নারায়ণগঞ্জের এসপি হারুন অর রশিদকে বদলি করে ঢাকার পুলিশ অধিদফতরের টিআর পদে সংযুক্ত করার আদেশের খবর ছড়িয়ে পড়ে।