গভীর রাতে হঠাৎ দেবে গেছে ঘর-বাড়ি

 

দেবে যাওয়া ঘরমাদারীপুরের আড়িয়াল খাঁ নদীর পাড়ে গভীর রাতে হঠাৎ এক কিলোমিটার এলাকার অর্ধশতাধিক বাড়ি-ঘর দেবে গেছে। শুক্রবার দিবাগত রাতে মাদারীপুর পৌরসভার ১ নম্বর ওয়ার্ডে এই ঘটনা ঘটেছে।

সরেজমিনে দেখা গেছে, মাদারীপুর শহরের হাকিয়ারমার ঘাট থেকে পাঠককান্দি পর্যন্ত এলাকায় এই ঘটনা ঘটেছে। ফাটল ধরেছে নদীর তীরের প্রায় এক কিলোমিটার এলাকায়। শুক্রবার গভীর রাতে এই অবস্থার সৃষ্টি হলে ওই এলাকার বাসিন্দাদের মধ্যে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। সহায় সম্বল হারিয়ে কয়েকটি পরিবার অসহায় হয়ে পড়েছে।

দেবে যাওয়া ঘরক্ষতিগ্রস্ত সোহেল সরদার বলেন, ‘রাতে পরিবারের সবাই ঘুমিয়ে ছিলেন। হঠাৎ করেই শব্দ শুনতে পেয়ে জেগে ওঠেন। আস্তে আস্তে আটটি ঘর নদীর মধ্যে ধসে পড়ে। এতে পরিবারের অনেক মালামালসহ ঘর নদীর মধ্যে পড়ে গেছে।’

স্থানীয় মনির হোসেন, জাহিদুর রহমান, মনিরা খাতুন ও সাইদ আলীসহ অন্যদের দাবি, দীর্ঘদিন ধরেই আড়িয়াল খাঁ নদীর এই অংশে অবৈধভাবে বালু উত্তোলন ও ড্রেজার মেশিনে বালু লোড ও আনলোড করায় এই অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে।

দেবে যাওয়া ঘরজানতে চাইলে জেলা প্রশাসক ওয়াহিদুল ইসলাম বলেন, এলাকাবাসীর অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে ওই এলাকায় অভিযান চালানো হয়েছিল। তবে সেখানে কোনও বালু উত্তোলনের ড্রেজার পাওয়া যায়নি।

মাদারীপুর পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী পার্থ প্রতীম সাহা জানান, এই নদীর ওই এলাকায় প্রস্থ কম ও গভীরতা বেশি। এছাড়া বড় নৌযান চলাচল ও স্রোতের কারণে এই অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে। ভাঙন রোধে ৩০ লাখ টাকার অনুমোদন চাওয়া হয়েছে। এতে সাড়ে ৮ হাজার জিও ব্যাগ ফেলা যাবে। তবে স্থায়ী ব্লকের জন্য ৩ কোটি টাকার মতো লাগবে। এখানকার ভাঙনরোধের জন্য দীর্ঘ মেয়াদী পরিকল্পনা নেওয়া যেতে পারে।  

মাদারীপুরের পৌর মেয়র খালিদ হোসেন ইয়াদ বলেন, ‘শহর ঘিরে নদী থেকে ড্রেজার দিয়ে বালু উত্তোলনের ব্যাপারে গত দুটি আইন-শৃঙ্খলা মিটিংয়ে জোর গলায় বলেছি। তীব্র প্রতিবাদ করে জেলা প্রশাসক ও পুলিশ সুপারের কাছে দাবি জানিয়েছি বালু ব্যবসায়ীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে। কিন্তু, তারা কোনও ব্যবস্থা নেননি। আইন-শৃঙ্খলা মিটিংয়ে বলেছি, বালু ব্যবসায়ীরা বলে তারা এনডিসির মাধ্যমে জেলা প্রশাসককে টাকা দেন। আপনারা ব্যবস্থা না নিলে আমরা তাদের কথাই ঠিক বলে ধরে নেবো। আমি মেয়র হিসেবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছি, কারণ আমার এলাকার মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত। নদী থেকে বালু তুলতে তুলতে নদী বেশি গভীর করে ফেলেছে। যার কারণে  শহরের আশ-পাশের অংশ ধসে যাচ্ছে।’