শিবচরে প্রধান শিক্ষকের পদত্যাগের দাবিতে ইউএনও’র গাড়ি ভাঙচুর

 

 

গাড়ি ভাঙচুর করা হয়

মাদারীপুরের শিবচরে সোমবার রাতে কুতুবপুর উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক সাখাওয়াত হোসেনের পদত্যাগের দাবিতে শিক্ষার্থী ও স্থানীয়রা বিক্ষোভ করে। এ সময় পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করতে গেলে বিক্ষোভকারীরা উপজেলা চেয়ার‌ম্যান ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার  গাড়ি ভাঙচুর করে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে পুলিশ ফাঁকা গুলি করে এবং ২০ শিক্ষার্থীকে আটক করে।

একাধিক সূত্র জানা যায়, গত কয়েকদিন ধরে বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী ও অভিভাবকরা প্রধান শিক্ষকের পদত্যাগের দাবিতে মানববন্ধন ও বিক্ষোভ করে আসছিল। শিক্ষার্থী ও অভিভাবকরা এসএসসির ফরম পূরণে অতিরিক্ত টাকা নেওয়া, প্রবেশপত্র ও সনদ বিতরণের সময় অর্থ আদায় ও নিয়োগ দুর্নীতিসহ নানা অনিয়মের অভিযোগ প্রধান শিক্ষকের পদত্যাগ দাবি করে। সোমবার সন্ধ্যায় শিক্ষার্থীদের অভিযোগ নিয়ে আলোচনায় বসেন শিবচর উপজেলা চেয়ারম্যান সামসুদ্দিন খান, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আসাদুজ্জামানসহ বিদ্যালয়ের শিক্ষক-শিক্ষার্থী ও ম্যানেজিং কমিটির সদস্যরা। এ সময় প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে আনা অভিযোগগুলো খতিয়ে দেখার জন্য তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়। এর প্রতিবাদ জানিয়ে শিক্ষার্থীরা প্রধান শিক্ষকের তাৎক্ষণিক পদত্যাগের দাবি জানিয়ে স্লোগান দেয়। রাত সাড়ে ৮টার দিকে বর্তমান শিক্ষার্থী, সাবেক শিক্ষার্থী ও অভিভাবকেরা ইটপাটকেল নিক্ষেপ শুরু করে। এ সময় উপজেলা চেয়ারম্যান ও ইউএনও’র গাড়ি ভাঙচুর করা হয়। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে পুলিশ ফাঁকা গুলি ছুঁড়লে হট্টগোল শুরু হয়।

শিবচর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) আবুল কালাম আজাদ জানান, শিক্ষার্থীদের সঙ্গে সমঝোতা বৈঠকে উপজেলা চেয়ারম্যান ও ইউএনও’র অবরুদ্ধ হওয়ার খবরে পুলিশ ঘটনাস্থলে যায়। পরে বিক্ষুব্ধ শিক্ষার্থী, অভিভাবক ও এলাকাবাসীর হামলা ঠেকাতে পুলিশ লাঠি চার্জ ও ফাঁকা গুলি করে। এই ঘটনায় এখন পর্যন্ত ২০ শিক্ষার্থীকে আটক করা হয়েছে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে মাদারীপুর পুলিশ লাইন্স থেকে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। পাশাপাশি র‌্যাব এলাকায় টহল দিচ্ছে।

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. আসাদুজ্জামান জানান, গত তিন দিন ধরে শিক্ষার্থীরা প্রধান শিক্ষকের অপসারণের দাবি জানিয়ে আসছিল। এর সমাধানে শিক্ষার্থী ও এলাকাবাসীকে নিয়ে বৈঠক করা হয়। কিন্তু তারা প্রশাসনের আশ্বাস না মেনে তাদের অবরুদ্ধ করে এবং গাড়ি ভাঙচুর করে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে পুলিশ লাঠি চার্জসহ ফাঁকা গুলি ছুড়ে।

মাদারীপুরের পুলিশ সুপার মোহাম্মদ মাহবুব হাসান বলেন, ‘ভুল বোঝাবুঝির কারণে এই ঘটনা ঘটেছে। মূলত উত্তেজিত শিক্ষার্থীরা না বুঝেই এ হামলা চালায়। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে পুলিশ ফাঁকা গুলি ছুঁড়তে বাধ্য হয়।’