চিকিৎসা না পেয়ে রোগীর মৃত্যুর অভিযোগ, স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে হামলা

 

হাসপাতালের টিকেট কাউন্টারের কাঁচের জানালা ভেঙে ফেলেছে হামলাকারীরা

হাসপাতাল থেকে সঠিক চিকিৎসা না পেয়ে ঢাকা নেওয়ার পথে এক রোগীর মৃত্যুর ঘটনায় তার স্বজনেরা কালীগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে হামলা চালিয়ে ভাঙচুর করেছে বলে অভিযোগ উঠেছে। মঙ্গলবার (১৪ ডিসেম্বর) দুপুরে কালীগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে এ হামলার ঘটনা ঘটে। কালীগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. ছাদেকুর রহমান আকন্দ হামলার সত্যতা নিশ্চিত করেছেন।

ডা. ছাদেকুর রহমান জানান, মোবারক হোসেন নামে ওই রোগীর বুকে ব্যথা উঠলে সকাল পৌনে ৯টার দিকে স্বজনেরা তাকে হাসপাতালের জরুরি বিভাগে নিয়ে আসেন। কর্তব্যরত চিকিৎসক ওই রোগীকে ইসিজি করান। ইসিজির রিপোর্টের পর তাকে কিছু ওষুধ দেন এবং স্পেশাল কার্ডিওলজিক দেখানোর পরামর্শ দিয়ে গাজীপুর শহীদ তাজউদ্দিন আহমদ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে রেফার্ড করেন।

পরিবার পরিকল্পনা ক্লিনিকের জানালার কাচ ভাঙচুর করেছে হামলাকারীরা

তিনি দাবি করেন, রোগীর স্বজনেরা তাকে হাসপাতালে না নিয়ে বাড়িতে নিয়ে যান। পরে রোগীর শারীরিক অবস্থার অবনতি হলে স্বজনেরা তাকে আবার সকাল ১০টায় স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে  নিয়ে আসেন। তখন রোগীকে জরুরি বিভাগের বেডে বসিয়ে গ্যাস-স্প্রে দেওয়া হয়। হঠাৎ মোবারক বেড থেকে নিচে পড়ে গেলে তার নাক মুখ দিয়ে রক্তবমি হয়। চিকিৎসকরা তাকে দ্রুত গাজীপুর হাসপাতালে নেওয়ার জন্য স্বজনদের অনুরোধ করে। পরে স্বজনরা অ্যাম্বুলেন্স এনে ঢাকা নেওয়ার পথে রোগীর অবস্থার অবনতি হয়। এসময় রোগীকে স্থানীয় তালটিয়া এলাকার করমতলা খ্রিস্টান হাসপাতালে নিয়ে যায় স্বজনেরা। সেখানকার কর্তব্যরত চিকিৎসক মোবারককে মৃত ঘোষণা করেন। পরে দুপুর পৌনে একটায় স্বজনেরা মোবারকের লাশ নিয়ে কালীগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভাঙচুর চালায়। তিনি আরও জানান, হামলাকারীরা কনফারেন্স রুম, কৈশোর বান্ধব স্বাস্থ্য সেবা কেন্দ্র, পরিবার পরিকল্পনা ক্লিনিক, ওয়াটার ফিল্টার, টয়লেট, চিকিৎসকদের ডিউটি রুম, ইসিজি ও আল্ট্রাসনোগ্রাম রুমে ভাঙচুর চালিয়েছে।

হাসপাতালের ইসিজি ও আল্ট্রাসনোগ্রাম রুমে ভাঙচুর

কালীগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা অফিসার ডা. ছাদেকুর রহমান আকন্দ বাদী হয়ে কালীগঞ্জ থানায় একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন। কালীগঞ্জ-কাপাসিয়া সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (এডিশনাল এসপি) পঙ্কজ দত্ত জানান, ঘটনার পর হাসপাতালে গিয়ে তথ্য-উপাত্ত নেওয়া হয়েছে। হামলাকারীদের শনাক্ত করার জন্য সিসিটিভির ফুটেজ সংগ্রহ করা হয়েছে। তাদের গ্রেফতার করতে পুলিশের একাধিক টিম কাজ করছে। কালীগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) শিবলী সাদিক জানান, হাসপাতালে ভাঙচুর অত্যন্ত নিন্দনীয় কাজ। হামলা করে সরকারি সম্পদের ক্ষতিসাধন করার অভিযোগে তাদের বিরুদ্ধে আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।