ধর্ষণের মামলা করে অবরুদ্ধ পরিবার






অভিযুক্ত ইমরান হোসেন ওরফে আনোয়ারগাজীপুর মহানগরের রওশন সড়ক এলাকায় ধর্ষণের মামলা করায় ভিকটিমের বাড়ি অবরুদ্ধ করে রাখার অভিযোগ উঠেছে। এই ঘটনায় ওই পরিবারের দুই শিশু শিক্ষার্থী স্কুলে যেতে পারছে না। মোবাইল ফোনে দেওয়া হচ্ছে হুমকি।

শনিবার (২২ ফেব্রুয়ারি) সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, অবরুদ্ধ অবস্থায় আছে ওই পরিবার। ধর্ষক পক্ষের আপসের হুমকিতে জিম্মি হয়ে পড়েছেন তারা। ঘরের অন্য সদস্যরা বাড়ির বাইরে চলাফেরা সীমাবদ্ধ করেছেন। ভিকটিমের মেয়ে ও ছোট ভাই নিরাপত্তার অভাবে স্কুলে যেতে পারছে না।

গত ১৮ ফেব্রুয়ারি (মঙ্গলবার) এই ঘটনায় অভিযুক্ত ইমরান হোসেন ওরফে আনোয়ারের (৪৫) বিরুদ্ধে বাসন থানায় মামলা করা হয়। ইমরান গাজীপুর মহানগরের শহীদ রওশন সড়ক এলাকার মোফাজ্জল হোসেনের বাড়ির ভাড়াটিয়া। সে বরিশালের বাকেরগঞ্জ উপজেলার মৃত নয়ন খলিফার ছেলে।

প্রসঙ্গত, গত ১৫ ফেব্রুয়ারি (শনিবার) সকালে অভিযুক্ত ইমরান (৪৫) মোবাইল ফোনে চাকরি দেওয়ার কথা বলে ভিকটিমকে বাসায় ডাকে। বাসায় যেতে দেরি হওয়ায় ইমরান তার আরেক সহযোগী নারীকে ভিকটিমের বাসায় পাঠায়। ওই নারীকে ভিকটিম প্রথমে ইমরানের স্ত্রী ভেবে তার সঙ্গে যান। বাসায় গেলে তাকে চাকরির প্রলোভন দেখিয়ে কুপ্রস্তাব দেয় ইমরান। এতে রাজি না হলে ইমরান ভয় দেখিয়ে ধর্ষণ করে। ঘটনার সময় ইমরানের সহযোগী দরজায় পাহাড়া দেয়।

ভিকটিম বাংলা ট্রিবিউনকে জানান,ঘটনার পর মান সম্মানের ভয়ে বিষয়টি গোপন করেন। কিন্তু পরদিন মুঠোফোনে আবারও ইমরান দেখা করতে বলে। অপারগতা জানালে, ইমরান দুই দিনের মধ্যে এক লাখ টাকা চায়। এরপর ভিকটিম বিপর্যস্থ হয়ে রবিবার আত্মহত্যার চেষ্টা করেন। এসময় তার ভাই দেখে ফেললে তিনি পুরো বিষয়টি ভাইকে খুলে বলেন।

ভিকটিমের ভাই ঢাকার পল্টন এলাকার চা দোকানি। তিনি জানান, তার বোনের কাছে ঘটনা শুনে থানায় যান। পরে পুলিশের পরামর্শে ১৮ ফেব্রুয়ারি তার বোন গাজীপুর মহানগরের বাসন থানায় মামলা করে।

ভিকটিম জানান, মামলা করার পর থেকেই অভিযুক্ত ইমরান ও তার স্বজনরা মুঠোফোনে মামলা প্রত্যাহারের হুমকি দিচ্ছে। এছাড়া মামলা করার পর থেকে ইমরানের পক্ষে এলাকার অন্তত ১৫ জন লোক বিষয়টি আপসের চেষ্টা করতে বাড়িতে আসেন। এছাড়া র‌্যাবের কর্মকর্তা পরিচয়েও একটি মুঠোফোন নম্বার থেকে মামলা প্রত্যাহারের জন্য ফোন দেওয়া হচ্ছে।

বাংলা ট্রিবিউন প্রতিনিধি ওই নম্বরে ফোন দিয়ে তিনি র‌্যাবের সদস্য কিনা জানতে চাইলে তিনি লাইন কেটে দিয়ে ফোন বন্ধ করে রাখেন।

এবিষয়ে বাসন থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এ কে এম কাউসার আহমেদ চৌধুরী বলেন, ‘হুমকির বিষয়ে আমাদেরকে কেউ জানায়নি। অভিযুক্ত ধর্ষক পলাতক রয়েছে। পুলিশ তাকে গ্রেফতারের চেষ্টা চালাচ্ছে।’

আরও পড়ুন: চাকরি দেওয়ার কথা বলে ধর্ষণের অভিযোগ