অপহরণের পরদিন পাটক্ষেতে পোশাককর্মীর লাশ

আমির হোসেন ওরফে লালন দেওয়ানঅপহরণের পরদিন মানিকগঞ্জের সিংগাইরে পোশাককর্মী আমির হোসেন ওরফে লালন দেওয়ানের (৩৮) লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। উপজেলার বলধারা ইউনিয়নের খোয়ামুড়ি গ্রামের একটি পাট ক্ষেত থেকে শনিবার (২৭ জুন) সকালে লাশটি উদ্ধার করা হয়। এর আগে শুক্রবার (২৬ জুন) সকাল সাড়ে ৯টার দিকে নিজ গ্রাম ঘোনা থেকে অজ্ঞাত কয়েকজন ব্যক্তি একটি সাদা মাইক্রোবাসে তাকে তুলে নিয়ে যায়। মরদেহে আঘাতের চিহ্ন রয়েছে।

লালন দেওয়ান প্রয়াত মুক্তিযোদ্ধা হারুনুর রশিদ দেওয়ানের ছেলে। তিনি সাভার হেমায়েতপুর এলাকার ব্রিটেনিয়া গার্মেন্টস প্যাকেজিং ফ্যাক্টরিতে চাকরি করতেন।

সিংগাইর থানা পুলিশ ও স্থানীয়রা জানায়, উপজেলার বলধারা ইউনিয়নের খোয়ামুড়ি গ্রামে ভোর সাড়ে ৫টার দিকে আবুল হোসেনের পাটক্ষেতে লাশ দেখতে পায় স্থানীয় কয়েকজন দিন মজুর। তারা স্থানীয় সাবেক মেম্বার আবদুল কাদেরকে বিষয়টি জানান। পরে বলধারা ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান আবদুল মাজেদ খানকে জানান সাবেক ওই মেম্বার। চেয়ারম্যান সিংগাইর থানায় খবর দেন। খবর পেয়ে সিংগাইর থানার এসআই আনোয়ার হোসেন ও এসআই আল মামুন সাড়ে ৭টায় ঘটনাস্থল থেকে লাশ উদ্ধার করেন। ওই কর্মকর্তা লাশের সুরতহাল রিপোর্ট করেন।

নিহতের ভাই হাবিবুর রহমান বলেন,  ‘আমার ভাইকে শুক্রবার সকাল সাড়ে ৯টার দিকে নিজ গ্রাম ঘোনা থেকে অপরিচিত কয়েকজন ব্যক্তি একটি  সাদা রঙের মাইক্রোবাসে করে অপহরণ করে নিয়ে যায়। আমরা দুপুরে বিষয়টি সিংগাইর থানা পুলিশকে জানাই। তারা আমার ভাইকে কী করণে অপহরণ করেছে তা জানি না।'

তিনি আরও বলেন, ‘আমার ভাইয়ের বিরুদ্ধে এর আগে অবশ্য একটি মাদক সংক্রান্ত মামলা ছিল। তবে সে এখন সাভারের হেমায়েতপুরে একটি পোশাক কারখানায় চাকরি করতো। সে দুই সন্তানের জনক।'

সিংগাইর থানার এসআই আনোয়ার হোসেন জানান, লালন দেওয়ান মাদকাশক্ত ছিলেন। প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে, বন্ধুদের সঙ্গে মাদক সংক্রান্ত বিরোধের জের ধরে তিনি খুন হয়েছেন। হত্যাকণ্ডের সঙ্গে তার তিন বন্ধু জড়িতো থাকতে পারে। তাদের খুঁজছে পুলিশ।

এ ঘটনায় সকালেই সিংগাইর সার্কেলের এএসপি মো. আলমগীর হোসেন, থানার ওসি আব্দুস সাত্তার মিয়া ও ওসি (তদন্ত) আবুল কালাম ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন।

ওসি আব্দুস সাত্তার মিয়া সাংবাদিকদের জানান, নিহত লালন দেওয়ানের ঘনিষ্ট বন্ধুদের সঙ্গে বিরোধের কারণে তাকে পিটিয়ে হত্যা করা হয়ে থাকতে পারে। তদন্ত সাপেক্ষে প্রকৃত ঘটনা জানা যাবে। জড়িতদের আইনের আওতায় আনা হবে। এ ঘটনায় মামলা দায়েরের প্রস্তুতি চলছে।

মানিকগঞ্জের সিংগাইর সার্কেলের সহকারী পুলিশ সুপার আলমগীর হোসেন জানান, পাট ক্ষেতে ওই ব্যক্তির মরদেহ দেখতে পেয়ে স্থানীয়রা পুলিশকে জানায়। পরে ঘটনাস্থল থেকে তার মরদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য মানিকগঞ্জ ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়।

তিনি আরও জানান, মরদেহে আঘাতের চিহ্ন রয়েছে। এটি একটি পরিকল্পিত হত্যাকাণ্ড। হত্যার কারণ সর্ম্পকে বেশ কিছু তথ্য ইতোমধ্যে পুলিশের কাছে এসেছে। ঘটনার সঙ্গে জড়িতদের শনাক্ত করা হয়েছে। অল্প সময়ের মধ্যে তাদের গ্রেফতার করা হবে।