কার্গো জাহাজ থেকে সরকারি তেল চুরি, গ্রেফতার ১২

মানিকগঞ্জের হরিরামপুর উপজেলায় পদ্মা নদী থেকে সরকারি তেল বহনকারী একটি কার্গো জাহাজ থেকে তেল চুরির অভিযোগে চোর চক্রের ১২ সদস্যকে গ্রেফতার করেছে নৌপুলিশ। এছাড়া এ ঘটনায় ১৯ জনকে আসামি করে হরিরামপুর থানায় একটি মামলা হয়েছে। হরিরামপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. মুঈদ চৌধুরী এ তথ্য নিশ্চিত করেন।

গ্রেফতার চোর চক্রের সদস্যরা হলো– হরিরামপুরের ধুলসুড়া এলাকার লুৎফর রহমান (৪০) ও মিরাজ খান (৩৫); কার্গো জাহাজের কর্মচারী শিমুল সরদার (৩৪), মো. শরীফ (৩২), রব্বানী বিশ্বাস (৩৫), মো. লিটন (৩৫), মো. শামীম (২৫), মো. মিন্টু (৩২), কামাল মোল্লা (৩৫), মো. ফিরোজ (৩৫), মো. আউয়াল (২৮) এবং মফিজুর রহমান (২৮)। তাদের বাড়ি বিভিন্ন জেলায়। পলাতক অপর সাত আসামির বাড়ি মানিকগঞ্জের হরিরামপুর ও রাজবাড়ীর গোয়ালন্দ উপজেলায়।

হরিরামপুর থানা সূত্রে জানা গেছে, গত বুধবার (২৪ ফেব্রুয়ারি) তেল চুরির ঘটনায় যমুনা অয়েল কোম্পানি লিমিটেডের ঢাকা অঞ্চলের ব্যবস্থাপক সৈয়দ শফিকুর রহমান মামলাটি করেন। এতে তেল চোর চক্রের ১৯ জনকে আসামি করা হয়েছে।

মামলার এজাহার সূত্রে জানা গেছে, গত সোমবার চট্টগ্রাম অয়েল ডিপো থেকে যমুনা অয়েল কোম্পানি লিমিটেডের সরকারি এক লাখ ৮৩ হাজার ৯৪৯ লিটার পেট্রল এবং ৫ লাখ ৪৪ হাজার ৬০৪ লিটার ডিজেল ভর্তি মেসার্স করিম শিপিং লাইনসের একটি তেলবাহী কার্গো জাহাজ সিরাজগঞ্জের বাঘাবাড়ি ডিপোতে রওনা হয়। পথে গত মঙ্গলবার বিকাল ৫টার দিকে তেলের কার্গো জাহাজটি হরিরামপুরের ধুলসুড়া এলাকায় পদ্মা নদীর মাঝে পৌঁছালে ওই জাহাজে কর্মরত কয়েকজন কর্মচারী ও তেল চোর চক্রের সদস্যরা তেল চুরি করে একটি ট্রলারে ওঠানো শুরু করে। এ সময় গোপন সংবাদের ভিত্তিতে ফরিদপুরের কোতয়ালি নৌপুলিশ ফাঁড়ির সদস্যরা ১২ জনকে আটক করেন। চোরচক্রের বাকি সাত জন ট্রলার নিয়ে পালিয়ে যায়। এ সময় চুরি করা ৭০০ লিটার পেট্রল, ৭০ হাজার টাকা ও একটি নৌকা জব্দ করা হয়।

এজাহারে আরও উল্লেখ করা হয়, এই চোর চক্রের সদস্যরা দীর্ঘদিন ধরে চট্টগ্রাম থেকে বাঘাবাড়ি ডিপোতে তেল পরিবহনের পথে হরিরামপুরের ধুলসুড়া, পাবনার বেড়া এবং রাজবাড়ীর দৌলতদিয়া ঘাট এলাকায় নৌপথে চোরাই তেল পরস্পরের যোগসাজশে কেনাবেচা করে আসছে।

মামলার বাদী যমুনা অয়েল কোম্পানি লিমিটেডের ঢাকা অঞ্চলের ব্যবস্থাপক সৈয়দ শফিকুর রহমান বলেন, ‘সামনে উত্তরাঞ্চলে বোরো মৌসুমে জ্বালানি তেলের সংকট এড়াতে চট্টগ্রাম থেকে দ্রুত বাঘাবাড়ী ডিপোতে সরকারি এই তেল স্থানান্তর করা হচ্ছিল। চট্টগ্রাম ডিপো থেকে যে পরিমাণ জ্বালানি তেল বাঘাবাড়ী ডিপোতে পাঠানো হয়, পরে সেখানে আবারও পরিমাপ করা হয়। তেলের ঘাটতি হলে শিপিং কোম্পানির মালিকপক্ষের সেই ঘাটতি পূরণ করে দিতে বাধ্যবাধকতা রয়েছে।

ওসি মো. মুঈদ চৌধুরী জানান, বৃহস্পতিবার গ্রেফতার ১২ আসামিকে আদালতে পাঠানো হয়েছে। পরে আদালতের নির্দেশে তাদের কারাগারে পাঠানো হয়েছে।