১১১ কেজি ওজনের দুষ্প্রাপ্য মারলিন ফিশ ভাগায় বিক্রি!

কিশোরগঞ্জের পাকুন্দিয়া উপজেলা সদর বাজারে দেখা মিললো ১১১ কেজি ওজনের প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলের দুষ্প্রাপ্য মারলিন ফিশ। তবে এ মাছ স্থানীয় কোনও নদীতে ধরা পড়েনি। সাগরের মাছটি ঢাকার যাত্রাবাড়ি থেকে কিনে আনেন স্বপন মিয়া নামে স্থানীয় এক জেলে। বিশাল এ মাছ কেটে বিক্রি হচ্ছে এমন খবরে শনিবার বিকালে পাকুন্দিয়ার মাছ বাজারে ভোজন রসিক ক্রেতাদের ওপচে পড়া ভিড় চোখে পড়ে।

মাছটি পাকুন্দিয়ায় নিয়ে আসা স্বপন মিয়া জানান, চট্টগ্রাম থেকে ঢাকা যাত্রাবাড়ির আড়তে মাছটি আনা হয়। তবে চট্টগ্রামের আড়তে মাছটি কে পৌঁছে দিয়েছিল বা কোথায় ধরা পড়েছে তা তিনি জানেন না।

মৎস্য বিশেষজ্ঞদের মতে, মারলিন প্রশান্ত মহাসাগরীয় শীতল অঞ্চলের মাছ। এ মাছ আকারে বিশাল হয় এবং ঘণ্টায় ১২৯ কিলোমিটার বেগে ছুটতে পারে। এছাড়া পানি সমতল থেকে ৭০/৮০ ফুট ওপরে পর্যন্ত ঝাঁপ দিতে পারে। বঙ্গোপসাগর কিংবা এ অঞ্চলে এ মাছটির উপস্থিতি বিস্ময়কর বটে। তবে একেবারেই দেখা যায় না তাও নয়।

অনলাইন ঘেঁটে দেখা গেছে, মারলিন মাছটি ক্ষিপ্রতা এবং শিকার সংক্রান্ত দক্ষতার কারণে আমেরিকার বিভিন্ন অঞ্চলে খুবই জনপ্রিয় এবং মাছ শিকার সংক্রান্ত বিভিন্ন ধরনের খেলায়ও অংশ নিয়ে থাকে।

এ মাছের শরীরে ভিটামিন-এ ও প্রচুর পরিমাণ ফসফরাস থাকায় এটি মূল্যবান মাছ হিসাবে অনেক বেশি মূল্যে বিক্রি হয়ে থাকে।

এ মাছটির আসল পরিচয় না জানায় স্থানীয়ভাবে জেলেরা কালে-ভাদ্রে পাওয়া এ মারলিন মাছকে পাখি মাছ হিসাবে চেনেন। তাদের দাবি, এ মাছ নদীতেও মাঝেমধ্যে ধরা পড়ে। তবে তারা খুবই কম মূল্যে তা বিক্রি করে থাকেন।

অবশেষে ১১১ কেজি ওজনের এ মারলিন মাছটি পাকুন্দিয়া বাজারে ৫০টি ভাগ করে প্রতি ভাগ ১ হাজার টাকা দামে ৫০ জন ভোজন রসিক ক্রেতার কাছে বিক্রি করেন মাছ ব্যবসায়ী স্বপন।

এ ঘটনাটি সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হয়ে উঠলে সাফি সুমন নামে এক লন্ডন প্রবাসী বাংলাদেশি সেখানে মারলিন ফিশ প্রতি কেজি ৫০ হাজার টাকা করে বিক্রি হয় বলে জানিয়েছেন। তবে সেটি সঠিক নাকি ভুল তথ্য তা যাচাই করা সম্ভব হয়নি।

কিশোরগঞ্জের জেলা মৎস্য কর্মকর্তা রিপন কুমার পাল বাংলা ট্রিবিউনকে জানান, এ মাছটি বাজারে কিভাবে এলো তার খোঁজ খবর নিচ্ছি। বাংলাদেশের জন্য এ মাছ বিরল প্রজাতির বটে। তবে এভাবে বাজারে বিক্রি করা কতটা আইনসম্মত বা এ মাছ কতটা খাওয়ার উপযোগী তা আমরা খতিয়ে দেখছি।