ভুট্টার বাম্পার ফলন, লক্ষ্যমাত্রা ছাড়িয়ে গেছে আবাদ

মানিকগঞ্জ জেলার সাতটি উপজেলায় ভুট্টার আবাদ লক্ষ্যমাত্রা ছাড়িয়ে গেছে। এ মৌসুমে অনুকূল আবহাওয়া বিরাজ করায় জেলার কৃষকরা বাম্পার ফলন আশা করছেন। তারা ভুট্টা চাষের জন্য সময়মতো বীজ, সার ও অন্যান্য উপকরণ পেয়েছিলেন। বাজারে দামও ভালো তাই লাভের প্রত্যাশা কৃষকদের।

কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতর (ডিএই) সূত্র জানায়, ভুট্টা চাষিরা জেলায় বেশ কয়েক বছর ধরে বাম্পার ফলন অর্জন করে আসছেন। জেলার সাতটি উপজেলায় ভুট্টা চাষ দিন দিন জনপ্রিয়তা পাচ্ছে। সহজ চাষ পদ্ধতি, কম সেচ এবং বাজারে প্রচুর চাহিদা থাকা ভুট্টা চাষ জনপ্রিয়তার মূল কারণ।

জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের উপ-পরিচালক মো. শাহজাহান আলী বিশ্বাস  জানান, ভুট্টা সারাবছর বাজারে বিক্রি হয়। ভুট্টার লাঠিগুলো গ্রামাঞ্চলে জ্বালনি হিসেবে ব্যবহৃত হয়। এর সবুজ পাতা গবাদি পশুর ‘চর’ হিসাবে ব্যবহৃত হয়। অপরিপক্ক ভুট্টার গাছগুলোও গবাদি পশুর ‘চর’ হিসাবে ব্যবহৃত হয়।

শাহজাহান আলী বিশ্বাস আরও জানান, দেশি ভুট্টার চেয়ে হাইব্রিড জাতের ভুট্টা চাষে লাভ বেশি। এতে রোগ বালায়ের আশঙ্কা কম। দামও বেশি পাওয়া যায়। গত বছর জেলায় মোট আবাদি জমির পরিমাণ ছিল ৮ হাজার ৫২২ হেক্টর। এবার ভুট্টার আবাদ হয়েছে ১৬ হাজার একর হেক্টর জমিতে।

ভুট্টা ক্ষেতজেলার ঘিওর উপজেলার চর বাইলজুরী গ্রামের অন্যতম ভুট্টা চাষি মনির উদ্দিন মনির জানান, তিনি এ বছর পাঁচ বিঘা জমিতে ভুট্টার আবাদ করেছেন। তিনি বলেন, ‘আমি একই জমিতে আবারও ভুট্টা চাষ করবো।’

মুনির উদ্দিনের মতো বেশিরভাগ ভুট্টা চাষি একই জমিতে দুবার ভুট্টা চাষ করে থাকেন। ইতোমধ্যে ভুট্টা তোলা শুরু হয়েছে। এখন প্রতি মণ ভুট্টা বিক্রি হচ্ছে ৭৫০ থেকে ৮৫০ টাকা দরে।

জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতর সূত্র জানায়, এ বছর ভুট্টার আবাদও লক্ষ ছাড়িয়ে গেছে। এ বছর জেলার রবি মৌসুমে ১৬ হাজার হেক্টর জমিতে ভুট্টা চাষের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছিল এক লাখ ৫৭, হাজার ৩২০ মেট্রিক টন।

সূত্র জানায়, মানিকগঞ্জ সদর উপজেলায় এবার ৩ হাজার ৮৫০ হেক্টর জমিতে ভুট্টার আবাদ করা হয়। এছাড়া সিংগাইর উপজেলায় এক হাজার হেক্টর, সাটুরিয়ায় ৪ হাজার ৫৫০ হেক্টর, ঘিওরে এক হাজার ৬০০ হেক্টর, দৌলতপুরে ২ হাজার হেক্টর, শিবালয়ে ৫ হাজার ৫০ হেক্টর এবং হরিরামপুর উপজেলায় ২ হাজার ৩৫০ হেক্টর জমিতে ভুট্টার আবাদ হয়েছে।

কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতর সূত্র জানায়, চলতি মৌসুমে ৬ হাজার ৫০০ হেক্টর জমিতে ডিএই’র খরিফ-১ জাতের ভুট্টার আবাদ করা হয়েছে। যার উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা ছিল ৪৮ হাজার ৮৮০ মেট্রিক টন। পাশাপাশি জেলার সাতটি উপজেলায় খরিফ-৩ মৌসুমে ভুট্টার আবাদ অব্যাহত রয়েছে।