কারাগারে পরিচয়, বেরিয়ে দলবেঁধে ডাকাতি

মানিকগঞ্জ জেলার সাটুরিয়ার তিল্লী এলাকায় রাস্তায় ব্যারিকেড দিয়ে গণডাকাতির ঘটনায় ছয় ডাকাতকে আটকের দাবি করেছে পুলিশ। পুলিশ বলছে জিজ্ঞাসাবাদে জানা গেছে, গ্রেফতার ছয় জনের বাড়ি দেশের বিভিন্ন স্থানে হলেও তাদের পরিচয় হয় দেশের বিভিন্ন জেলার কারাগারে। কারাগারে থাকাকালে পরিচয় ও বন্ধুত্বের সুবাদে বড় ধরনের ডাকাতির পরিকল্পনা করেন তারা। এরই অংশ হিসেবে কারাগার থেকে বেরিয়ে তারা গত ২ জুন ও ৮ জুন রাতে সাটুরিয়া উপজেলা তিল্লী ব্রিজ এলাকার সড়কে ব্যারিকেড করে ডাকাতি করে। ডাকাতি চলাকালে কাজে বাধা দেওয়ায় রাজ্জাক নামের স্থানীয় এক ভ্যানচালককে কুপিয়ে গুরুতরভাবে আহত করে ওই ডাকাতদল। আহত অবস্থায় সাভারের একটি বেসরকারি হাসপাতালে এখনও চিকিৎসাধীন রয়েছে রাজ্জাক।

রবিবার (১৩ জুন) বেলা ১১টার দিকে মানিকগঞ্জের পুলিশ সুপার কার্যালয়ে আয়োজিত এক প্রেস বিফ্রিংয়ে এসব তথ্য জানানো হয়।

পুলিশ সুপার রিফাত রহমান শামীম জানান, গ্রেফতার হওয়াদের কাছ থেকে ৪০টি মোবাইলফোন, এক রাউন্ড গুলিসহ একটি পিস্তল, সোনা ও রুপার অলংকার, নগদ টাকা, ফ্রিজসহ বিভিন্ন রকমের দেশীয় অস্ত্র উদ্ধার করা হয়েছে। এছাড়া ডাকাত সর্দার কারুন মিয়া ওরফে শমসের মিয়ার (৪৭) বিরুদ্ধে অস্ত্র ও ডাকাতিসহ মোট ১০টি মামলা চলমান রয়েছে। বাকি আসামিদের বিরুদ্ধেও দুই থেকে চারটি ডাকাতির মামলা রয়েছে।

সদর সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার ভাস্কর সাহা বলেন, ডাকাতির ঘটনার অভিযান চালিয়ে প্রথমে ডাকাত সর্দার কারুন এবং পরে পৃথক অভিযানে বাকি পাঁচ আসামিকে গ্রেফতার করা হয়।

তিনি আরও জানান, দিনাজপুরের ঘোড়াঘাট উপজেলার চেচুরিয়া এলাকার মৃত মোহম্মদ আলীর ছেলে কারুন মিয়া ওরফে শমসের মিয়া (৪৭)। অস্ত্র ও ডাকাতিসহ মোট ১০টি মামলা চলমান রয়েছে তার বিরুদ্ধে। বিভিন্ন মামলায় কারাগারে থাকার সময়ে বন্ধুত্ব হয় কারাগারে অপর পাঁচ আসামির সঙ্গে। এরপর কারুন জামিনে বের হয়ে অন্যদের সঙ্গে দেখা করেন। তাদেরকে সঙ্গে নিয়ে ডাকাতি করে বেড়ান দেশের বিভিন্ন এলাকায়।

তিনি আরও বলেন, কারুন ছাড়াও গ্রেফতার অন্যরা হলেন- গাইবান্ধার সাদুল্লাপুর উপজেলার তিলকপাড়া এলাকার শফি মিয়ার ছেলে সুরুজ মিয়া (২৬), গাইবান্ধা সদর উপজেলার কাশাদহ গ্রামের উজ্জ্বল মিয়া (২৪), একই জেলার পলাশবাড়ি উপজলোর দুর্গাপুর গ্রামের জব্বার মিয়ার চেলে গোলজার ওরফে সাগর (৩৫), বগুড়া জেলার গাবতলী থানার সন্ধ্যাবাড়ি এলাকার রফিকুল ইসলামের ছেলে শাহিন (৩০) এবং টাঙ্গাইল জেলার ঘাটাইল উপজেলার শাহ আলমের ছেলে টুটুল মিয়া (৩০)।

এর মধ্যে সুরুজের বিরুদ্ধে অস্ত্র ও ডাকাতিসহ চারটি মামলা চলমান, উজ্জ্বলের বিরুদ্ধে খুন ও ডাকাতিসহ চার মামলা এবং শাহিনের বিরুদ্ধে দুটি মামলা চলমান রয়েছে। এ ঘটনায় সাটুরিয়া থানায় তাদের বিরুদ্ধে পৃথক দুটি মামলা হয়েছে বলে জানান তিনি।