পদ্মায় ট্রলারডুবির ১৭ ঘণ্টায় খোঁজ মেলেনি দুই শিক্ষকের   

ফরিদপুরে পদ্মায় ট্রলারডুবির ১৬ ঘণ্টা পেরিয়ে গেলেও নিখোঁজ দুই শিক্ষকের কোনও সন্ধান মেলেনি। ঘটনার পর থেকে নৌ-পুলিশ, জেলা পুলিশ দমকল বাহিনী ও ডুবুরি দলের সদস্যরা উদ্ধার অভিযান অব্যাহত রেখেছেন। বৃহস্পতিবার (২৬ আগস্ট) সকাল সাড়ে ১০টা পর্যন্ত তাদের উদ্ধার করা সম্ভব হয়নি।

নিখোঁজ দুই শিক্ষক হলেন ফরিদপুর উচ্চ বিদ্যালয়ের ইংরেজি বিভাগের সহকারী শিক্ষক আলমগীর হোসেন (৪১) ও সারদা সুন্দরী বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের গণিত বিভাগের সহকারী শিক্ষক আজমল হোসেন শেখ (৪৩)। এদের মধ্যে আজমল হোসেনের বাড়ি সদর উপজেলার খলিলপুরে। তবে তিনি শহরের গোয়ালচামটে ভাড়া থাকেন। তার এক ছেলে, এক মেয়ে ও স্ত্রী রয়েছেন। আর আলমগীর হোসেনের বাড়ি খলিল মণ্ডলের হাট এলাকায়। তিনি ঝিলটুলি পুরনো পাসপোর্ট অফিস এলাকায় থাকেন। তার দুই মেয়ে।

দুর্ঘটনায় আহত ফরিদপুরের চর মাধবদিয়া ইউনাইটেড উচ্চ বিদ্যালয়ের ইংরেজির শিক্ষক প্রদীপ কুমার বিশ্বাস (৪২) ও সারদা সুন্দরী বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষক বলাই কুমার দাসকে (৪১) ফরিদপুর জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। এছাড়া আহত আরও দুই শিক্ষককে প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়া হয়।

দুর্ঘটনা থেকে বেঁচে যাওয়া শিক্ষক ও সাংবাদিক মো. রেজাউল করিম বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, বুধবার বিকালে বিভিন্ন বিদ্যালয়ের শিক্ষকদের নিয়ে নৌকা ভ্রমণে গিয়ে ট্রলারডুবির ঘটনা ঘটে। নদীতে হঠাৎ ট্রলারের ইঞ্জিন বন্ধ হয়ে যায়। পরে পন্টুনের সঙ্গে ধাক্কা লেগে তীব্র স্রোতে ট্রলারটি উল্টে যায়। তারপর আর কিছু মনে নেই। পরে জ্ঞান ফিরে দেখি নদীর পাড়ে লোকজন ঘিরে ধরে আছে।  

ফরিদপুর ২ নম্বর পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ মো. রাকিব হোসেন বলেন, দুর্ঘটনার খবর পেয়ে পুলিশ স্থানীয়দের সহায়তায় উদ্ধার কাজে অংশ নেয়। ১৪ জন শিক্ষক এবং মাঝিসহ ট্রলার ডুবে যায়। ১৩ জনকে উদ্ধার করতে পারলেও দুই জন শিক্ষক এখনও নিখোঁজ আছেন। 

ফরিদপুর ফায়ার সার্ভিসের সিনিয়র কর্মকর্তা সুভাষ বাড়ৈ বাংলা ট্রিবিউনকে জানান, ঘটনাস্থল থেকে দুই কিলোমিটার পর্যন্ত ট্রলার নিয়ে খোঁজ চালানো হয়েছে। রাতের আঁধার এবং বৈরি আবহাওয়ার পাশাপাশি নদীতে প্রচুর স্রোত থাকায় উদ্ধার কাজে বেশ বেগ পেতে হচ্ছে। পাটুরিয়া ঘাট হতে ডুবুরি দল এনে বৃহস্পতিবার সকাল থেকে উদ্ধার কাজ শুরু হয়েছে। 

ফরিদপুরের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) সুমন রঞ্জন সরকার বলেন, নিখোঁজ দুই শিক্ষককে উদ্ধারে নৌ-পুলিশ, জেলা পুলিশ ও দমকল বাহিনীর কয়েকটি দল কাজ করছে। বৃহস্পতিবার সকাল থেকে ডুবুরি দল নতুন করে উদ্ধার কাজ চালাচ্ছে।