শিমুলিয়া-বাংলাবাজার নৌপথে রাতে চলবে না ফেরি

দক্ষিণবঙ্গের ২১ জেলার প্রবেশদ্বার হিসেবে খ্যাত শিমুলিয়া-বাংলাবাজার নৌপথে এখন থেকে দিনের বেলায় চলবে পাঁচটি ফেরি। তবে রাতে ফেরি চলাচল বন্ধ থাকবে। পদ্মা সেতুর নিরাপত্তার স্বার্থে এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।

সোমবার (৪ অক্টোবর) বিকালে বিআইডব্লিউটিসির পরিচালক (বাণিজ্যিক) এসএম আশিকুজ্জামান বলেন, ‘বর্তমানে পদ্মা নদীতে স্রোতের গতিবেগ প্রতি ঘণ্টায় ছয় থেকে সাড়ে ছয় কিলোমিটার। পদ্মা সেতুর একেক পিলারে স্রোতের গতিবেগ একেক রকম। আগামী এক সপ্তাহ থেকে দুই সপ্তাহের মধ্যে আশা করি স্রোতের গতিবেগ আরও কমে আসবে। তখন অন্যান্য ফেরি চালানোর পরিকল্পনা আছে।’

তিনি জানান, দীর্ঘ সময় ধরে এ নৌপথে ফেরি বন্ধ ছিল পদ্মা সেতুর নিরাপত্তার জন্য। এখন দিনের বেলা ফেরি চালানো শুরু হয়েছে, সেটিও পদ্মা সেতুর নিরাপত্তার জন্য। পদ্মা সেতুর পিলারের কাছে স্রোত যতদিন না স্বাভাবিক অবস্থানে আসবে ততদিন এ নৌপথে ফেরি চলাচল স্বাভাবিক হবে না। আশা করি ১৫ দিন পর স্রোত কমে গেলে ধারাবাহিকভাবে সব ফেরি চালানো হবে।

এদিকে, বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহন কর্তৃপক্ষ সূত্রে জানা গেছে, সোমবার (৪ অক্টোবর) পদ্মা সেতুর নিচে পিলারের কাছে পদ্মা নদীর সর্বোচ্চ গতিবেগ ছিল ঘণ্টায় ৮ দশমিক ০৩ কিলোমিটার এবং সর্বনিম্ন গতিবেগ ছিল ৫ দশমিক ০৮ কিলোমিটার। সর্বোচ্চ গতিবেগ ছিল ২৩-২৪ পিলারের নিচে এবং নদীর সর্বনিম্ন গতিবেগ ছিল ১৭-১৮ পিলারের নিচে।

শিমুলিয়া নদী বন্দরের নৌ নিরাপত্তা ও ট্রাফিক ব্যবস্থাপনা বিভাগের সহকারী পরিচালক, সহকারী বন্দর ও পরিবহন কর্মকর্তা (অতিরিক্ত দায়িত্ব) মো. শাহাদাত হোসেন বলেন, ‘পদ্মা নদীর স্রোতের গতিবেগ নিচে নেমে আসায় টানা ৪৭ দিন বন্ধ থাকার পর বিআইডব্লিউটিএ, বিআইডব্লিউটিসি, ট্রাফিক পুলিশ মাওয়া এবং বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের উপস্থিতিতে মুন্সীগঞ্জের শিমুলিয়া ও মাদারীপুরের বাংলাবাজার নৌপথে ফেরি চলাচল শুরু হয়েছে। পদ্মা সেতুর নিরাপত্তার জন্য এই নৌপথে সকাল ৬টা থেকে বিকাল ৫টা পর্যন্ত শুধু হালকা যানবাহন যেমন– প্রাইভেটকার, জিপ, মাইক্রোবাস, অ্যাম্বুলেন্স ফেরিযোগে চলাচল করবে। পরবর্তী সিদ্ধান্ত আসার আগ পর্যন্ত পণ্যবাহী ট্রাক বা যাত্রীবাহী বাস বিকল্প পথে যাওয়ার জন্য নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।’

প্রসঙ্গত, জুলাই ও আগস্ট মাসে চারটি ফেরি পদ্মা সেতুর পিলারে ধাক্কা দেয়। এরপর গত ১৮ আগস্ট থেকে পদ্মা সেতুর নিরাপত্তা এবং নদীর তীব্র স্রোতের কারণে অনির্দিষ্টকালের জন্য ফেরি চলাচল বন্ধ রাখে কর্তৃপক্ষ।

বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহন কর্তৃপক্ষ (বিআইডব্লিউটিএ) সূত্রে জানা গেছে, পদ্মা সেতুর ২১ নম্বর পিলার বরাবর ১ দশমিক ৫ কিলোমিটার আপে লাল বয়াটি পুনরায় স্থাপিত হয়। শিমুলিয়া থেকে ফেরিগুলো বাংলাবাজার যাবে পদ্মা সেতুর ১৩-১৪ বা ১৪-১৫ নম্বর পিলারের মধ্য দিয়ে। তবে টার্গেট থাকবে ১৪-১৫ নম্বর পিলারের মাঝ দিয়ে যাওয়ার। আর বাংলাবাজার থেকে শিমুলিয়া আসার সময় ১৯-২০ বা ২০-২১ নম্বর পিলারের মধ্য দিয়ে যাবে। তবে টার্গেট থাকবে ১৯-২০ নম্বর পিলারের মাঝ দিয়ে চলা।