করোনায় মৃত্যু কমানোর পেছনে অনেক শ্রম দিতে হয়েছে: স্বাস্থ্যমন্ত্রী

সরকারের প্রচেষ্টার কারণেই করোনা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে এসেছে বলে জানিয়েছেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক। তিনি বলেন, ‘যথাযথ চিকিৎসা পাওয়ায় দেশে করোনায় মৃত্যুর হার কম। করোনায় আমেরিকায় সাত লাখ এবং ভারতে পাঁচ লাখ মানুষ মারা গেছেন। ঘনবসতিপূর্ণ আমাদের দেশে ২৭ হাজার মানুষ মারা গেছেন। একটি মৃত্যুও আমরা চাই না। কোনও জাদুর ছোঁয়ায় মৃত্যু কম হয়নি, এর পেছনে অনেক শ্রম দিতে হয়েছে। সরকার বিনামূল্যে চিকিৎসা দিয়েছে।’

শনিবার (৯ অক্টোবর) দুপুরে মানিকগঞ্জ সদর উপজেলার গড়পাড়া এলাকায় শুভ্র সেন্টারে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে স্বাস্থ্যমন্ত্রী এসব কথা বলেন। শারদীয় দুর্গাপূজা উপলক্ষে শুভেচ্ছা বিনিময় ও অনুদান প্রদান উপলক্ষে এই অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়।

করোনা পরিস্থিতি মোকাবিলা প্রসঙ্গে স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, ‘করোনা সবচেয়ে বেশি ছোঁয়াচে রোগ। দেশে অনেক মানুষ করোনায় আক্রান্ত হয়েছিল। শত বছরের মধ্যে এ ধরনের মহামারি আসেনি। সারা বিশ্বে প্রায় ৫০ লাখ মানুষ মারা গেছেন। এই সময়ে আমাকে দেশের স্বাস্থ্যমন্ত্রী হিসেবে কাজ করতে হয়েছে। করোনা নতুন একটি ভাইরাস, নতুন তার গতিবিধি। প্রথমে করোনা চিকিৎসার বিষয়ে কেউ জানতেন না, কীভাবে সংক্রমণ থেকে রক্ষা পাওয়া যাবে তাও কেউ জানতেন না। সেই অবস্থা থেকে আমরা করোনা মোকাবিলা শুরু করি।’

করোনার চিকিৎসায় গৃহীত পদক্ষেপের কথা তুলে ধরে স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, ‘বাংলাদেশে করোনার পরীক্ষার জন্য মাত্র একটি ল্যাব ছিল। এখন দেশে ৮০০টি ল্যাব হয়েছে। এখন করোনার চিকিৎসার জন্য দেশের হাসপাতালগুলোতে ১৮ হাজার শয্যা রয়েছে। করোনা আক্রান্ত জটিল রোগীদের জন্য কেন্দ্রীয় অক্সিজেন খুবই প্রয়োজন। দেশের সব বড় হাসপাতালেই এই কেন্দ্রীয় অক্সিজেন লাইন রয়েছে।’

তিনি বলেন, ‘আমাদের হাতে এখন অনেক টিকা। দেশে প্রায় ২৫ ভাগ মানুষকে দুই ডোজ টিকা দেওয়া হয়েছে। ১২ ভাগ মানুষকে দ্বিতীয় ডোজ দেওয়া হয়েছে। সবমিলিয়ে প্রায় পাঁচ কোটি ডোজ টিকা দেওয়া হয়েছে। ৭০ থেকে ৮০ ভাগ মানুষকে টিকা দেওয়া গেলে পুরো দেশেই সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণ এসে যাবে। যে পরিমাণ ডোজ অর্ডার দেওয়া হয়েছে তাতে ৭০ থেকে ৮০ ভাগ মানুষকে দেওয়া যাবে।’

শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে টিকা দেওয়ার বিষয়ে স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, ‘আগামী ডিসেম্বরের মধ্যে দেশের প্রায় ৫০ ভাগ মানুষকে টিকা দেওয়া হবে। এ ছাড়া আগামী বছরের এপ্রিলের মধ্যে ৭০ থেকে ৮০ ভাগ মানুষকে টিকা দেওয়া সম্ভাবনা রয়েছে। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলো খুলেছে। দ্রুত সময়ের মধ্যে বিদ্যালয়ের ১২ থেকে ১৭ বছরের শিশুশিক্ষার্থীদের টিকা দেওয়ার কার্যক্রম শুরু করা হবে।’

তিনি বলেন, করোনার সংক্রমণ কমে এসেছে। এখন করোনা হার ২ দশমিক ৭ ভাগ। মৃত্যুর হারও কমে এসেছে। তবে করোনার সংক্রমণ বাড়তে তো সময় লাগে না। অনেক দেশে করোনার সংক্রমণ আবার বাড়ছে। এ কারণে আমাদেরকে স্বাস্থ্যবিধি মেনেই দৈনন্দিন কাজ এবং আচার-অনুষ্ঠান করতে হবে।

এ অনুষ্ঠানে সুষ্ঠুভাবে দুর্গাপূজা উদযাপনের আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, ‘প্রতিটি ধর্মই শান্তি ও মানবসেবার কথা বলে। করোনার জন্য স্বাস্থ্যবিধি মেনে দুর্গাপূজা উদযাপন করতে হবে। প্রতিটি পূজামণ্ডপের আয়োজকদের স্বাস্থ্যবিধি প্রতিপালনের ব্যবস্থা করতে হবে। ধর্মীয় আচার-আচরণ পালন করতে হবে, তবে তা যেন অতিরঞ্জিত না হয়। কারণ, এতে বিশৃঙ্খলা দেখা হয়। অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটে।’