নরসিংহপুর ফেরিঘাটে চার কিলোমিটারের বেশি এলাকাজুড়ে যানজট

স্রোতের কারণে বাংলাবাজার-শিমুলিয়া নৌপথে ফেরি বন্ধ থাকায় এবং মাইজভান্ডার শরীফে মাহফিলের কারণে শরীয়তপুরের নরসিংহপুর ফেরিঘাটে তিন দিন ধরে বেড়েছে যানবাহনের চাপ। চাপ বেড়েছে নরসিংপুর খুলনা-চট্টগ্রাম মহাসড়কেও। নরসিংহপুর ফেরিঘাটে চার কিলোমিটারের বেশি এলাকাজুড়ে তীব্র যানজট দেখা দিয়েছে। চরম ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে যাত্রী ও পণ্যপরিবহন গাড়ির চালকদের। ট্রাকচালকদের অভিযোগ, তাদের একেকজনকে পাঁচ থেকে ছয় দিনেরও বেশি সময় ধরে ঘাট এলাকায় অবস্থান করতে হচ্ছে।

মঙ্গলবার (১২ অক্টোবর) ঘাট এলাকা ঘুরে দেখা যায়, ঘাটে ছোট ও যাত্রীবাহী পরিবহন পারাপারে বেশি গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে। এতে পণ্যবাহী গাড়ির দীর্ঘ জট সৃষ্টি হয়েছে। বিশ্বরোডের খায়েরপট্টি এলাকা ছাড়িয়ে ফেরিঘাট পর্যন্ত চার কিলোমিটারের বেশি এলাকায় পণ্যবাহী ট্রাক দাঁড়িয়ে রয়েছে। গাড়ির বাড়তি চাপ নিয়ন্ত্রণে ট্রাফিক পুলিশ কাজ করে যাচ্ছে।

ট্রাক নিয়ে সাতক্ষীরা থেকে আসা সাইফুল ইসলাম বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘আমি গত পাঁচ দিন আগে ঘাটে এসেছি। কাঁচামাল ও যাত্রীবাহী গাড়িকে আগে যেতে দেওয়া হচ্ছে। পাঁচ দিনে সঙ্গে থাকা টাকাপয়সা প্রায় শেষ। বন্দরে যেতে না পারলে মালিক টাকা দেবে না। আর এদিকে মেয়ের স্কুলে টাকা লাগবে। কী করবো বুঝতে পারছি না?’

সাতক্ষীরা থেকে আসা আরেক চালক রাজু বলেন, ‘৮ অক্টোবর ঘাটে এসেছি। এখনও যেতে পারিনি। সমস্যায় আছি, খাওয়ার টাকা শেষ। আজ যেতে না পারলে না খেয়ে থাকতে হবে।’

এ বিষয়ে বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহন সংস্থার (বিআইডব্লিউটিসি) নরসিংহপুর ফেরিঘাটের ব্যবস্থাপক আব্দুল মোমেন বলেন, ‘এ ঘাটে কাকলি, করোবি, কেতকি, কাবেরি, কামিনী, কিশোরী এ ছয়টি ফেরি চালু রয়েছে। গত তিন দিন ধরে গাড়ির চাপ থাকায় যানজটের সৃষ্টি হয়েছে। বাংলাবাজার-শিমুলিয়া নৌপথে ফেরি বন্ধ হওয়ায় এবং সিলেটের হজরত শাহজালাল (র.) মাজার ও চট্টগ্রামের মাইজভান্ডার শরীফে লোকজন বেশি যাওয়াতে নরসিংহপুর ঘাটে গাড়ির চাপ রয়েছে। এ ছাড়া ভালো মানের ফেরি না থাকায় এ ঘাটের যানজট সৃষ্টি হয়েছে। যদি কর্তৃপক্ষ ভালো মানের রো রো ফেরি দেয়, তাহলে আশা করা যায় এ ঘাটে যানযাট থাকবে না।’

নরসিংহপুর ঘাটের ইজারাদার ও চরসেনসাস ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান জিতু মিয়া জানান, এখানে ফেরি কম থাকায় যানজট বেড়েছে। যে ফেরি রয়েছে, সেগুলো খুব পুরনো। যদি ফেরি বাড়ানো হলে ঘাটে যানজট থাকবে না। এখনও ঘাটে প্রায় ছয় শতাধিক যানবাহন নদী পারাপারের অপেক্ষায় রয়েছে।’

ফেরিঘাটের ট্রাফিক ইন্সপেক্টর মো. খুরশীদ আলম সিকদার বলেন, ‘মাইজভান্ডার শরীফের মাহফিলের জন্য ঘাট এলাকায় তিন দিন ধরে চাপ রয়েছে। হঠাৎ পরিবহন বেড়ে যাওয়ায় ঘাটে এ ভিড়। তবে আমরা গাড়ি সুন্দরভাবে ফেরিতে ওঠানোর জন্য কাজ করছি। ঘাটে যানজট যাতে না হয় সে জন্য আমরা ট্রাফিক পুলিশ সব সময় কাজ করছে।’