স্কুলছাত্রীকে গলা কেটে হত্যা, সাবেক প্রেমিককে সন্দেহ পুলিশের

টাঙ্গাইলের কালিহাতীতে সুমাইয়া আক্তার নামে এক স্কুলছাত্রীর গলা কাটা লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। লাশের পাশ থেকে মনির মিয়া (১৭) নামে এক কিশোরকে রক্তাক্ত অবস্থায় উদ্ধার করা হয়। এ ঘটনায় সুমাইয়ার সাবেক প্রেমিককে সন্দেহ করছে পুলিশ।

বুধবার (২৭ অক্টোবর) সকাল পৌনে ৭টার দিকে উপজেলার এলেঙ্গা পৌরসভার শামসুল হক কলেজের সামনের একটি ভবন থেকে তার লাশ উদ্ধার করা হয়।  

পুলিশ ও স্থানীয়রা জানায়, সুমাইয়ার সঙ্গে মনিরসহ দুই কিশোরের প্রেমের সম্পর্ক ছিল। আগের প্রেমিককে বাদ দিয়ে মনিরের সঙ্গে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে সুমাইয়ার। এরই জেরে সুমাইয়ার সাবেক প্রেমিক এ হত্যাকাণ্ড ঘটাতে পারে। 

সুমাইয়া আক্তার এলেঙ্গা উচ্চ বিদ্যালয়ের নবম শ্রেণির ছাত্রী ছিল। সে উপজেলার পালিমা গ্রামের ফেরদৌসের মেয়ে। তারা এলেঙ্গা কলেজ মোড় এলাকায় বাসা ভাড়া নিয়ে বসবাস করে আসছিল। আহত মনির উপজেলার মশাজান গ্রামের মেহের আলীর ছেলে। মনির বাসের হেলপার।

পুলিশ ও নিহত ছাত্রীর স্বজনরা জানান, সকাল সাড়ে ৬টার দিকে স্থানীয় প্রাইম কোচিং সেন্টারে যাওয়ার জন্য বাসা থেকে বের হয় সুমাইয়া। স্থানীয়রা এলেঙ্গা সরকারি শামসুল হক কলেজের বিপরীত পাশে খোকন মিয়ার ভবনের সিঁড়িতে সুমাইয়া ও মনিরকে রক্তাক্ত অবস্থায় পড়ে থাকতে দেখে। খবর পেয়ে সুমাইয়ার লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। 

গুরুতর আহত মনিরকে উদ্ধার করে টাঙ্গাইল জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সেখান থেকে তাকে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকায় পাঠানো হয়। এদিকে, নিহত সুমাইয়ার বাড়িতে চলছে শোকের মাতম। স্বজনদের কান্না ও আহাজারিতে ভারী হয়ে উঠেছে পরিবেশ।

পৌরসভার শামসুল হক কলেজের সামনের একটি ভবন থেকে তার লাশ উদ্ধার করা হয়

সুমাইয়ার চাচা ফিরোজ মিয়া বলেন, ‘আমার ভাই স্ত্রী-সন্তান নিয়ে এলেঙ্গায় ভাড়া বাসায় থাকেন। বখাটেদের অত্যাচারে কিছু দিন আগে তারা বাসা বদল করে এই বাসায় উঠেছেন। কি কারণে এই হত্যাকাণ্ড ঘটেছে বুঝতে পারছি না। অপরাধীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি চাই।’

কালিহাতী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মোল্লা আজিজুর রহমান বলেন, ‘লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য টাঙ্গাইল জেনারেল হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়েছে। সুমাইয়ার মুঠোফোন জব্দ করা হয়েছে। বিষয়টি নিয়ে তদন্ত চলছে।’

টাঙ্গাইলের সহকারী পুলিশ সুপার (কালিহাতী সার্কেল) শরিফুল হক বলেন, ‘আহত মনিরসহ দুই জনের সঙ্গে সুমাইয়ার প্রেমের সম্পর্ক ছিল। সুমাইয়ার সাবেক প্রেমিক ক্ষোভে এ হত্যাকাণ্ড ঘটাতে পারে। বিষয়টি নিয়ে তদন্ত চলছে। খুব দ্রুত আমরা রহস্য উদঘাটন করতে পারবো। এ ঘটনায় মামলার প্রস্তুতি চলছে।’

টাঙ্গাইল জেনারেল হাসপাতালের জরুরি বিভাগের চিকিৎসা কর্মকর্তা রাজিব পাল চৌধুরী বলেন, ‘মনিরের গলায়, ঘাড়ে ও শরীরের বিভিন্ন স্থান ছুরি দিয়ে ক্ষতবিক্ষত করা হয়েছে। আশঙ্কাজনক অবস্থায় তাকে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।’