বঙ্গবন্ধু সাফারি পার্কে জলহস্তী পরিবারে নতুন অতিথি

গাজীপুরের বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব সাফারি পার্কে বিশ্বে সংকটাপন্ন প্রাণী হিসেবে পরিচিত জলহস্তীর একটি শাবক জন্ম নিয়েছে। আগে আরও দুটি শাবকের জন্ম হলেও সেগুলো বাঁচেনি। প্রায় চার সপ্তাহ বেঁচে থাকায় এবারের শাবকটি নিয়ে অনেক প্রত্যাশা পার্ক কর্তৃপক্ষের। পার্কের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ও সহকারী বন সংরক্ষক তবিবুর রহমান এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

তিনি বলেন, মাঝেমধ্যে শাবকটি জলহস্তী বেষ্টনীর ভেতরে ডাঙায় উঠে আসছে। এখন পর্যন্ত শাবকটির লিঙ্গ শনাক্ত করা যায়নি। এটি শনাক্ত করতে আরও কিছুদিন সময় লাগতে পারে। বর্তমানে পার্কে নতুন শাবকসহ জলহস্তীর সংখ্যা তিন। নিবিড় পর্যবেক্ষণের কারণে নতুন শাবকের বিষয়টি কাউকে সেভাবে জানানো হয়নি।

সাফারি পার্ক সূত্র জানায়, পৃথিবীর দ্বিতীয় সর্ববৃহৎ আধা জলজ স্তন্যপায়ী প্রাণী হিসেবে জলহস্তীকে চিহ্নিত করা হয়। সর্বোচ্চ সাড়ে তিন মিটার দৈর্ঘ্য ও দেড় মিটার উচ্চতার প্রাণীটির ওজন হয়ে থাকে তিন হাজার দুইশ কেজি পর্যন্ত। আফ্রিকাতে এদের বেশি দেখা মেলে। বিশ্বের অন্যান্য দেশেও এদের দেখতে পাওয়া যায়। আফ্রিকায় গরম বেশি থাকায় নদী এবং লেকের পাশে এরা বসবাস করে। নাক, কান-মাথা ভাসিয়ে রেখে এরা সহসাই নিজেদের শরীর জলে ডুবিয়ে রাখতে পারে। 

আগে আরও দুটি শাবকের জন্ম হলেও সেগুলো বাঁচেনি

নিশাচর এই প্রাণী তৃণভোজী খাবার খেয়ে থাকে এবং রাতের বেলায় খাবারের সন্ধানে বের হয়। পছন্দের তৃণভোজী কাছে পেলে সর্বোচ্চ ৩৫ কেজি খাবার একত্রে খেতে পারে। এরা দক্ষ সাঁতারু, পানির নিচে সর্বোচ্চ পাঁচ মিনিট পর্যন্ত ডুবে থাকতে পারে। পানিতে ডোবার পর নাক-কান বন্ধ হয়ে যায়। 

১০-২০টি জলহস্তী সংঘবদ্ধ থাকে ও সিংহ, হায়েনা, কুমির এবং হিংস্র প্রাণীর আক্রমণ থেকে রক্ষা পেতে মাঝেমধ্যে ক্ষমতা প্রদর্শনের জন্য ডিসপ্লে করে থাকে। এরা দুই বছর পর পর ১০ মাসের গর্ভধারণে শাবক জন্ম দেয়।

তবিবুর রহমান বলেন, দক্ষিণ আফ্রিকা থেকে জলহস্তী দুটি আনা হয়। ছয় বছর আগে দুটি শাবকের জন্ম হলেও বাঁচানো যায়নি। এবারের শাবকটির বয়স প্রায় একমাস। প্রত্যাশা করছি, শাবকটি বাঁচবে। শাবকটিকে নিবিড় পর্যবেক্ষণে রাখা হয়েছে। মা জলহস্তীর সঙ্গে কচুরিপানার ভেতরে থেকে উঁকিঝুঁকি দিচ্ছে। তাদের বাড়তি খাবার দেওয়া হচ্ছে।