হেলিকপ্টারে নববধূকে ঘরে আনলেন কৃষক রাসেল

টাঙ্গাইলে বাবার ইচ্ছে পূরণ কর‌তে হে‌লিকপ্টারে করে বউ আনলেন কৃষক রাসেল মিয়া। ব্যতিক্রম এই বিয়েকে কেন্দ্র করে বিয়ে বাড়িসহ আশপাশের গ্রামজুড়ে ছিল উৎসবমুখর পরিবেশ। ছিল বাদ্যের ঝংকার ও হরেক রকম খাবারের আয়োজন।

রবিবার (৫ ডিসেম্বর) বিকালে টাঙ্গাইল সদর উপজেলার পোড়াবাড়ী ইউনিয়নের প্রত্যন্ত অঞ্চল বাউসাইদ গ্রামের কৃষক মহির উদ্দিনের ছেলে রাসেল মিয়া তার নববধূ মিতু আক্তারকে হে‌লিকপ্ট‌ারে ক‌রে বা‌ড়ি‌তে আনেন।

জানা গেছে, উপজেলার বাউসাইদ গ্রামের কৃষক মহির উদ্দিনের একমাত্র ছেলে রাসেল মিয়ার সঙ্গে ময়মনসিংহের ভালুকা উপজেলার বাটাজোর গ্রামের মুন্নু খার মেয়ে মিতু আক্তারের সঙ্গে আড়াই মাস আগে কাবিন হয়। রাসেল মিয়া কৃষি কাজ করে সংসার চালান। রবিবার বিয়ের দিন নির্ধারণ ছিল। তারিখ অনুযায়ী বরযাত্রীরা দুটি প্রাইভেটকার ও বাসে চড়ে কনে বাড়ি গেলেও বর যান হেলিকপ্টারে চড়ে। হেলিকপ্টারে বর-কনে আসাকে কেন্দ্র করে সকাল থেকেই দুই প্রত্যন্ত গ্রামেই ছিল উৎসবমুখর পরিবেশ। এই আয়োজনে কোনও কমতি রাখেননি বাবা মহির উদ্দিন। প্রশংসা কুড়িয়েছেন আগত সবাঁর। ব্যতিক্রমধর্মী এই আয়োজন সামাল দিতে উপস্থিত ছিলেন স্থানীয় পুলিশের এক‌টি টিম।

বর রাসেল মিয়া বলেন, ‘বাবার ইচ্ছা পূরণ করতেই হেলিকপ্টারটি ভাড়া করে আনা হয়। টাঙ্গাইল থেকে রওনা দিয়ে ময়মনসিংহের ভালুকা উপজেলার বাটাজোর থেকে নববধূকে নিয়ে ফিরে এসেছি। খুব আনন্দ পেয়েছি।’ কত টাকা দিয়ে হে‌লিকপ্টার ভাড়া করেছিলেন জানতে চাইলে কিছু বলেননি।

কনে মিতু আক্তার বলেন, ‘আমি কখনও কল্পনাও করিনি আমার বর আমাকে হেলিকপ্টারে করে তার বাড়ি নিয়ে যাবে। এতে আমি খুব খুশি।’

রাসেল মিয়ার চাচা সালাউদ্দিন হায়দার বলেন, ‘রাসেল মহির উদ্দিনের একমাত্র ছেলে। তারা ধনী লোক। প্রায় ৩০ পাকি জমি রয়েছে। এতে তারা ৫০০ থেকে ৬০০ মণ ধান পায়। তাদের খামারে একাধিক গরু রয়েছে। প্রতিদিন কয়েকমণ করে দুধ বিক্রি করে। তারা ধানের পাশাপাশি বিভিন্ন ধরনের সবজির আবাদ করে। মহির উদ্দিন গৃহস্থ হওয়ায় রাসেলকে পড়াশোনা করায়নি। তার বাবার স্বপ্ন ছিল ছেলে হেলিকপ্টারে চড়ে বিয়ে করবে। এ জন্য এক লাখ ৪০ হাজার টাকা দিয়ে হেলিকপ্টারটি ভাড়া আনা হয়েছিল। এতে কৃষক বাবার স্বপ্ন পূরণ হলো।’

স্থানীয় ইউপি সদস্য মুসা দেওয়ান বলেন, ‘হেলিকপ্টারে চড়ে এই বিয়েকে কেন্দ্র করে আমাদের গ্রামে সকাল থেকেই উৎসবমুখর পরিবেশ বিরাজ করে। বড় বড় অনুষ্ঠানেও এতো লোকজন আসে না। আমি এই নবদম্পতির মঙ্গল কামনা করছি।’

নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকা টাঙ্গাইল সদর থানার এসআই মনিরুজ্জামান মুন্সি বলেন, ‘বর পক্ষ নিরাপত্তার জন্য এক সপ্তাহ আগে আবেদন করে। এর পরিপ্রেক্ষিতে নিরাপত্তা দেওয়া হয়েছে। শান্তিপূর্ণভাবেই বিয়েটি সম্পন্ন হয়েছে।’