আট ঘণ্টা পরও খোঁজ মেলেনি ট্রলারসহ ১০ যাত্রীর

নারায়ণগঞ্জের ফতুল্লায় ধলেশ্বরী নদীতে লঞ্চের ধাক্কায় নিখোঁজ ট্রলারসহ ১০ যাত্রীর এখনও সন্ধান মেলেনি। তাদের মধ্যে একজন শিশু এবং একই পরিবারের চার জন রয়েছেন। বুধবার (৫ জানুয়ারি) সকাল সাড়ে ৮টায় ফতুল্লার ধর্মগঞ্জ খেয়াঘাট এলাকায় এই দুর্ঘটনা ঘটে। 

নিখোঁজদের মধ্যে রয়েছেন মনির, মোতালিব, আব্দুল্লাহ, মলি, তাসলিমা ও তাসফিয়া। বাকি দুই জনের নাম-পরিচয় জানা যায়নি।

জেলা ফায়ার সার্ভিস অ্যান্ড সিভিল ডিফেন্সের উপ-সহকারী পরিচালক আবদুল্লাহ আল আরেফিন জানান, ট্রলারটি যাত্রী নিয়ে বক্তাবলী সিপাইবাড়ি খেয়াঘাট থেকে ধর্মগঞ্জ খেয়াঘাটে যাচ্ছিল। সকালে ঘন কুয়াশায় ট্রলারচালক স্পষ্ট দেখতে পাচ্ছিলেন না। এ সময় বরিশাল থেকে ঢাকাগামী এমভি ফারহান-৬ নামে একটি লঞ্চের সঙ্গে ধাক্কা লাগে। সঙ্গে সঙ্গে ট্রলারটি নদীতে তলিয়ে যায়। অধিকাংশ যাত্রী সাঁতরে তীরে উঠতে পারলেও ১০ জন নিখোঁজ হন। খবর পেয়ে ফায়ার সার্ভিসের উদ্ধার কর্মীরা অভিযান শুরু করেন। এখন পর্যন্ত কাউকে উদ্ধার করা যায়নি। ডুবে যাওয়া ট্রলারের অবস্থানও শনাক্ত করা যায়নি। 

আরও পড়ুন: ফতুল্লায় লঞ্চের ধাক্কায় ট্রলারডুবি, নিখোঁজ ১০

তিনি আরও জানান, ট্রলারের অধিকাংশ ছিলেন পোশাককর্মী। দুর্ঘটনার পর নিখোঁজদের সন্ধানে ধলেশ্বরীর তীরে ভিড় করছেন স্বজনরা। তাদের মধ্যে একই পরিবারের চার জন রয়েছেন। এক বছর বয়সী একটি শিশুও রয়েছে।

দুর্ঘটনাকবলিত ট্রলার থেকে বেঁচে আসা ধর্মগঞ্জ এলাকার নাঈম জানান, প্রায় ৫০-৬০ জন যাত্রী নিয়ে প্রতাপনগর ঘাট থেকে ট্রলারটি ধর্মগঞ্জ ঘাটের দিকে আসছিল। মাঝ নদীতে যাত্রীবাহী একটি লঞ্চ ট্রলারটিকে দেয়। লঞ্চটি ট্রলারের ওপর দিয়ে দ্রুতগতিতে চলে যায়।

তার দাবি, ঘন কুয়াশার কারণে নদীতে কিছুই দেখা যাচ্ছিল না। লঞ্চটি কোনও সিগন্যাল দেয়নি। খুব কাছাকাছি চলে আসার পরও লঞ্চটি থামানোর চেষ্টা করেননি চালক। উল্টো দ্রুতগতিতে চালিয়ে চলে যায়। 

নৌপুলিশের নারায়ণগঞ্জ অঞ্চলের পুলিশ সুপার মিনা মাহমুদ জানান, সকাল সাড়ে ৮টার দিকে ৫০-৬০ জন যাত্রী নিয়ে বক্তবলীর প্রতাপ নগরগুদারাঘাট থেকে ধর্মগঞ্জ গুদারাঘাটে আসছিল। মাঝ নদীতে দক্ষিণবঙ্গগামী একটি যাত্রীবাহী লঞ্চ ধাক্কা দেয়। এতে লঞ্চটি ট্রলারটিকে প্রায় ৪০-৫০ গজ দূরে নিয়ে যায়। অনেকে সাঁতরে তীরে উঠতে পারলেও প্রায় ১০ যাত্রী নিখোঁজ রয়েছে।

স্থানীয়রা জানায়, এই ঘাট দিয়ে প্রতিদিন প্রায় ১০ হাজারের বেশি মানুষ যাতায়ত করে। কিন্তু ইজারাদার লোকজন পারাপারের জন্য মাত্র একটি ট্রলার দিয়ে যাত্রী পারাপার করে থাকে। এতে প্রতিটি ট্রলারেই যাত্রীদের ভিড় হয়। একটি ট্রলার হওয়ায় ঘাটে এসে যাত্রীদের ঘণ্টাব্যাপী অপেক্ষা করতে হয়। এ কারণে ঘাটে ট্রলার আসলেই যাত্রীরা হুমড়ি খেয়ে পড়ে।