আইভী নিশ্চুপ থাকলেও ২ বার সংবাদ সম্মেলন করলেন তৈমুর

নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশন (নাসিক) নির্বাচনের প্রচার-প্রচারণা শেষ হয়েছে শুক্রবার (১৪ জানুয়ারি) রাতে। তাই শনিবার প্রার্থীদের ভোট চাওয়ার ও প্রচারণা চালানোর কোনও সুযোগ ছিল না। বলা চলে, ভোটারদের দ্বারে দ্বারে দীর্ঘ দৌড়ঝাঁপ শেষ নির্বাচনের আগের দিনটি ‘বিশ্রামেই কেটেছে’ প্রার্থীদের।

মেয়র পদে প্রধান দুই প্রতিদ্বন্দ্বী আওয়ামী লীগের ডা. সেলিনা হায়াৎ আইভী ও স্বতন্ত্র প্রার্থী তৈমুর আলম খন্দকারও সারা দিন বাড়িতেই অবস্থান করেছেন। তবে তৈমুর আলম খন্দকার নির্বাচনি আচরণবিধি লঙ্ঘন করে দুবার জরুরি সংবাদ সম্মেলন করে গণমাধ্যমের সঙ্গে কথা বলেছেন। তবে আপাতদৃষ্টিতে ‘নিষ্প্রভই’ ছিলেন নৌকার প্রার্থী আইভী।

সকালে ও সন্ধ্যায় দুবার সংবাদ সম্মেলন করে নিজের অভিযোগের কথা জানিয়েছেন তৈমুর আলম খন্দকার। বিপরীতে আচরণবিধি লঙ্ঘনের আশঙ্কায় আইভী সব ধরনের বিতর্কিত কর্মকাণ্ড এড়িয়ে চলেছেন। তবে তার বাড়িতে নিকট আত্মীয় ও এলাকার মানুষজনের ভিড় লেগে ছিল।

আইভীর ছোট ভাই নারায়ণগঞ্জ শহর যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক আলী রেজা উজ্জল জানান, টানা ২০ দিন প্রচারণা এবং গণসংযোগ করে সেলিনা হায়াৎ আইভী শারীরিকভাবে দুর্বল হয়ে পড়েছেন। তার বিশ্রামের প্রয়োজন রয়েছে। কিন্তু কিছুই মানছেন না। এই অবস্থা নিয়েই মানুষজনের সাথে কথা বলছেন। নেতাকর্মীদের সঙ্গে প্রয়োজনীয় দায়িত্ব সম্পর্কে জানিয়েছেন এবং দিকনির্দেশনা দিয়েছেন।

নেতাকর্মীদের নির্দেশনা দিয়ে আইভী বলেছেন, সকাল সাড়ে ৯টায় শিশুবাগ স্কুলের ভোটকেন্দ্রে ভোট দিয়ে এরপর তিনি নির্বাচন পর্যবেক্ষণে বের হবেন।

এদিকে, আচরণবিধি লঙ্ঘনের বিষয়ে তৈমুর আলম খন্দকার বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘নির্বাচনি আচরণবিধি অনুযায়ী আজ সংবাদ সম্মেলন করার নিয়ম নেই। এটি প্রচারণার একটি অংশ। তাই আমি এ বিষয়ে কোনও কথা বলবো না।’

তবে তৈমুর আলম খন্দকার সারা দিন নিজ বাড়িতে ব্যস্ত সময় পার করেছেন। সকাল থেকেই তার বাড়িতে দলীয় নেতাকর্মীদের ভিড় ছিল। এ সময় তিনি তাদের সঙ্গে কথা বলেন। নির্বাচন সংক্রান্ত বিষয়ে নেতাকর্মীদের নির্দেশনা দেন।

সংবাদ সম্মেলনে তৈমুর বলেন, ‘আমি প্রচার করছি না, সংবাদ সম্মেলন করছি। আমি ভোট চাইনি। আমার ঘরে আগুন লাগিয়ে দিলে আমি কিছু বলবো না? আমার লোকজন গ্রেফতার হচ্ছে, আমার গলায় আপনি ফাঁসি লাগিয়ে দেবেন, আমি কথা বলতে পারবো না? সেটা তো হবে না। এটা কোনও আচরণ বিধি লঙ্ঘন না। এটা নৈতিক দায়িত্ব। মানুষের ওপর যত অত্যাচার হয়, ভোটাররা তত ঐক্যবদ্ধ হয়। প্রশাসনকে বলবো, জনগণের সেবা করা আপনাদের দায়িত্ব। বহুবার রিকোয়েস্ট করেছি, এখন বিবেকের কাছে ছেড়ে দিলাম। আগামীকালের ভোট যাই হোক, আমরা মাঠে থাকবো। গ্রেফতার হলে হবো, কিন্তু নির্বাচন চালিয়ে যাবো।’

তিনি আরও বলেন, ‘আমার মূল দাবি হলো, নির্বাচনটা অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ যাতে হয়। আমাদের যেসব নেতাকর্মীকে গ্রেফতার করা হয়েছে, তাদের মুক্তি দিতে হবে। প্রত্যেক কেন্দ্রে আমি সিসি ক্যামেরা চাই। পুলিশ ও প্রশাসনের নিরপেক্ষ আচরণ চাই।’