ইভিএম মেশিনে ধীর গতিতে ভোট গ্রহণ, বিভিন্ন স্থানে স্বতন্ত্রপ্রার্থীর লোকজন প্রবেশে বাধাসহ নানা অভিযোগের মধ্য দিয়ে শেষ হয়েছে নারায়ণগঞ্জ সিটি নির্বাচন। চলছে ভোট গণনা। তবে তৃতীয়বারে এই সিটি নির্বাচনের আগে ও ভোট গ্রহণের সময় সহিংসতার কোনও অভিযোগ ওঠেনি। বর্তমান নির্বাচন কমিশনের মেয়াদের শেষের দিকের এই আয়োজন বিতর্কমুক্ত রাখতে ছিল কড়া নিরাপত্তা ব্যবস্থা। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর প্রায় পাঁচ হাজার সদস্য নির্বাচন ঘিরে দায়িত্ব পালন করেছেন।
রবিবার (১৬ জানুয়ারি) সকাল ৮টা থেকে শুরু হওয়া নির্বাচনে বিরতিহীনভাবে ভোট চলে ৪টা পর্যন্ত। নগরীর ২৭টি ওয়ার্ডের ১৯২ কেন্দ্রের এক হাজার ৩৩৩ কক্ষে ভোট নেওয়া হয়েছে। এ জন্য নারায়ণগঞ্জে দুই হাজার ৯১২টি ইভিএম মেশিন আনা হয়।
নির্বাচনে মেয়র পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছেন সাত প্রার্থী। তারা হলেন-আওয়ামী লীগের সেলিনা হায়াৎ আইভী (নৌকা), স্বতন্ত্র প্রার্থী তৈমুর আলম খন্দকার (হাতি), খেলাফত মজলিশের এ বি এম সিরাজুল মামুন (দেয়াল ঘড়ি), ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের মাও. মো. মাসুম বিল্লাহ (হাতপাখা), স্বতন্ত্র প্রার্থী মো. কামরুল ইসলাম (ঘোড়া), বাংলাদেশ খেলাফত আন্দোলনের মো. জসীম উদ্দিন (বটগাছ) ও বাংলাদেশ কল্যাণ পার্টির মো. রাশেদ ফেরদৌস (হাত ঘড়ি)। এছাড়া সিটির ২৭ ওয়ার্ডে সাধারণ কাউন্সিলর পদে ১৪৮ ও সংরক্ষিত কাউন্সিলর পদে ৩৪ জন প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। ভোটাররা মনে করছেন, মেয়র পদে মূল লড়াইটা হচ্ছে আইভী ও তৈমুরের মধ্যে।
পরে তিনি গণমাধ্যমকর্মীদের সঙ্গে কথা বলেন। এ সময় তিনি সুষ্ঠু ভোট হলে লক্ষাধিক ভোটে জয়লাভ করবেন বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেন।
স্বতন্ত্র প্রার্থী তৈমুর আলম খন্দকার অভিযোগ করেন, একটি কেন্দ্রে তার এজেন্টকে ঢুকতে দেওয়া হয়নি। তাছাড়া আইডি কার্ডের জন্য অনেক কেন্দ্রে ভোটারদের ঢুকতে দেওয়া হচ্ছে না বলেও অভিযোগ করেন তিনি।
দুপুরে আইইটি সরকারি উচ্চ বিদ্যালয় ভোট কেন্দ্র পরিদর্শনে এসে তিনি আরও বলেন, প্রশাসন ডিস্টার্ব করেছে। শত বাধার পরেও আমার নেতাকর্মীরা মাঠে রয়েছে। গ্রেফতার হওয়ার জন্য প্রস্তুত রয়েছে। এ সরকারের ক্ষমতা রয়েছে, তাদের ক্ষমতা অপব্যবহারের নজিরও রয়েছে। ক্ষমতার শত অপব্যবহার এর বিপরীতে আমরা ফাইট করে যাবো। আমরা শেষ পর্যন্ত মাঠে থাকবো।
তিনি বলেন, আমার প্রতি জুলুম অত্যাচার চলেছে। আমার অনেক লোককে গ্রেফতার করা হয়েছে। এখন পর্যন্ত আমার সাত জন লোক গ্রেফতার হয়েছে। এরমধ্যে যুবদলের মহানগর সহ-সভাপতি রয়েছেন।
এ সময় তিনি ভোটকে কেন্দ্র করে যেকোনও ধরনের অরাজকতা রুখতে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে সতর্ক থাকার আহ্বান জানান।
নির্বাচন পর্যবেক্ষণে ৯ সংস্থার ৪২ পর্যবেক্ষক কাজ করেছেন। সংস্থাগুলো হলো-জাতীয় নির্বাচন পর্যবেক্ষণ পরিষদ (জানিপপ), সার্ক মানবাধিকার ফাউন্ডেশন, আইন সহায়তা কেন্দ্র (আসক) ফাউন্ডেশন, সমাজ উন্নয়ন প্রয়াস, তৃণমূল উন্নয়ন সংস্থা, তালতলা যুব উন্নয়ন সংগঠন, রিহাব ফাউন্ডেশন, বিবি আছিয়া ফাউন্ডেশন এবং মানবাধিকার ও সমাজ উন্নয়ন সংস্থা (মওসুস)।