সিজারিয়ান অপারেশনের সময় নবজাতকের হাড় ভেঙে ফেলায় ৩ চিকিৎসকের বিরুদ্ধ মামলা

ফরিদপুরে সিজারিয়ান অপারেশনের সময় নবজাতকের হাতের হাড় ভেঙে ফেলার অভিযোগে আরামবাগ হাসপাতালের মালিক ও তিন চিকিৎসকের বিরুদ্ধ মামলা করা হয়েছে। শনিবার (২২ জানুয়ারি) বিকালে নবজাতকের বাবা আরিফুল আলম সজল বাদী হয়ে ফরিদপুর কোতোয়ালি থানায় এ মামলা করেন। 

কোতোয়ালি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আব্দুল জলিল বলেন, এই মামলায় আরামবাগ হাসপাতালের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. মাসুদ আলম, কর্তব্যরত চিকিৎসক শারমীন সুলতানা জুই, চিকিৎসক প্রিন্স ও চিকিৎসক রাজিবসহ অজ্ঞাত ৩-৪ জনকে আসামি করা হয়েছে। মামলায় তাদের বিরুদ্ধে ১৭০/৩২৫/৪১৯/৪২০/৫০৬/৩৪ পেনাল কোডের ধারায় অভিযোগ আনা হয়েছে।

মামলার এজাহারে বাদী উল্লেখ করেছেন, আসামিরা পরস্পর যোগসাজশে ভুয়া সরকারি কর্মকর্তা পরিচয় দিয়ে প্রতারণা করে সিজারিয়ান অপারেশন করে নবজাতকের হাড় ভেঙে দিয়েছেন। প্রতিকার চাইলে ভুক্তভোগী পরিবারকে হুমকি দিয়েছেন আসামিরা।

মামলার এজাহার সূত্রে জানা গেছে, শারমীন সুলতানা জুই ওই হাসপাতালের সাইনবোর্ড ও ভিজিটিং কার্ডে ফরিদপুর বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের চিকিৎসক পরিচয় দিলেও তিনি প্রকৃতপক্ষে ওই হাসপাতালের চিকিৎসক নন। আসামিরা পরস্পর যোগসাজশে প্রসূতি মুক্তা আক্তারের সিজারিয়ান অপারেশনের সময় সঠিকভাবে দায়িত্ব পালন না করায় এবং অবহেলা করায় তার নবজাতকের ডান হাতের হাড় ভেঙে গেছে।

এর আগে গত মঙ্গলবার ফরিদপুরের সিভিল সার্জন ডা. মো. ছিদ্দীকুর রহমানের কাছে আরিফুল আলম সজল লিখিত অভিযোগ দেন। অভিযোগে তিনি উল্লেখ করেন, গত ১৩ ডিসেম্বর আরামবাগ হাসপাতালে তার স্ত্রী মুক্তার সিজারিয়ান অপারেশন করা হয়। এ সময় নবজাতকের হাতের হাড় ভেঙে ফেলেন চিকিৎসকরা।পরে ঢাকার একটি হাসপাতালের চিকিৎসক বিষয়টি নিশ্চিত করেন। তিনি হাসপাতালের চিকিৎসকের বিরুদ্ধে অবহেলা ও অনিয়মের অভিযোগ করেছেন।

তার অভিযোগের ভিত্তিতে গত বুধবার দুপুরে সিভিল সার্জন ডা. মো. ছিদ্দীকুর রহমান ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট তানিয়া আক্তার আরামবাগ হাসপাতালে অভিযান চালান। এ সময় তারা পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত ওই হাসপাতালের কার্যক্রম বন্ধ ঘোষণা করেন। হাসপাতালটিতে পর্যাপ্ত চিকিৎসক ও নার্স না থাকা এবং অপ্রশিক্ষণপ্রাপ্ত নার্স দিয়ে হাসপাতালের কার্যক্রম পরিচালনার প্রমাণ পেয়েছেন বলে জানান সিভিল সার্জন।