বাংলাদেশে টক এবং মিষ্টি বরইয়ের চাহিদা প্রচুর। গাজীপুরের শ্রীপুরে গত কয়েক বছর ধরে বাণিজ্যিকভাবে বরইয়ের আবাদ হচ্ছে। প্রথম দিকে আপেল কুল ও বাউকুলের ব্যাপক চাষাবাদ ছিল। সময়ের ধারাবাহিকতায় বউ সুন্দর ও টক বরই চাষেও ঝুঁকছেন চাষিরা। কম খরচে অধিক ফলনে বরইয়ের উৎপাদন চাষিদের বাণিজ্যের দিকে নিয়ে যাচ্ছে। এতে লাভবান হচ্ছেন তারা।
শ্রীপুরের বরই যাচ্ছে ঢাকা, সিলেটসহ দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে। মিষ্টি বরইয়ের মতো টক বরইয়েরও ভালো দাম পাচ্ছেন চাষিরা। ফলে টক বরইয়ের বাণিজ্যিক চাষও শুরু হয়েছে। ফাগুন মাসের মাঝামাঝি সময় পর্যন্ত গাছে বরইয়ের ফলন আসবে বলে জানিয়েছেন চাষিরা। বরই চাষে শ্রীপুরের চাষিরা বিপ্লবের সম্ভাবনা দেখছেন।
শ্রীপুরের জুলেখা বেগম বলেন, বরই বাগান গড়ে তোলা ও ফসল ফলানো এখন আমার পেশা। স্বামীর সঙ্গে জমিতে শ্রম দিই। বরই গাছ লাগানো, সার, পানি, কীটনাশক, গোবর প্রয়োগসহ সব ধরনের পরিশ্রম স্বামী-স্ত্রী একসঙ্গে করি। গত কয়েক বছর বরই চাষ করে জীবিকা নির্বাহ করছি আমরা। নতুন কোনও চাষি বাগান করার উদ্যোগ নিলে তাদের পরামর্শ এবং সহযোগিতা করি।
ময়মনসিংহের নান্দাইল উপজেলার বামদি গ্রামের মৃত জনাব আলী ফকিরের ছেলে ফল ব্যবসায়ী আব্দুল কুদ্দুস বলেন, এ বছর কেওয়া গ্রামে একটি বরই বাগান কিনেছি দুই লাখ ৭০ হাজার টাকায়। দৈনিক পাঁচ জন শ্রমিক বরই নামিয়ে থাকেন। ঢাকা, মাওনা, সিলেটসহ দেশের বিভিন্ন এলাকায় বরই বিক্রি করি। আগামী দুই মাস পর্যন্ত মৌসুমের পুরো সময় বরই বিক্রি করবো। পাঁচ জন শ্রমিক দুই মাসে বাগানে শ্রম দিয়ে জীবিকা নির্বাহ করেন। আমি এই ব্যবসা করে লাভবান হয়েছি।
শ্রীপুর উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ কর্মকর্তা এ এস এম মুয়ীদুল হাসান বলেন, ফল চাষের দিক থেকে শ্রীপুরে কাঁঠাল ও লিচুর পরেই রয়েছে বরই ও কুলের অবস্থান। গত বছর ৪০৫ হেক্টর জমিতে কুল ও বরই চাষ হয়েছে। বাজার এবং চাষিদের চাহিদা অনুযায়ী এবার ৪৫০ হেক্টর জমিতে বরই এবং কুলের আবাদ হয়েছে। শ্রীপুরে আপেল কুল, বাউকুল, বল সুন্দরী কুলের চাষের প্রচলন ছিল। কিন্তু বেশ কয়েক বছর ধরে বাণিজ্যিকভাবে টক বরইয়ের চাহিদা বেড়েছে। নতুন করে কেউ বাগান করতে চাইলে উন্নতজাতের কুল ও বরইয়ের চারা এবং প্রয়োজনীয় পরামর্শ দিয়ে কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতর সহযোগিতা করবে।