কৃষককে ৬-৭ জন মিলে কীটনাশক খাইয়ে হত্যার অভিযোগ

ফরিদপুরের নগরকান্দায় হিরু মাতবর (৫১) নামে এক কৃষককে কীটনাশক খাইয়ে হত্যার অভিযোগ উঠেছে। মৃত্যুর আগে ওই কৃষকের কথা বলার একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে পোস্ট হওয়ার পর ভাইরাল হয়ে পড়েছে।

শনিবার (২২ জানুয়ারি) দিবাগত রাতে ফরিদপুর বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি মারা যান। ওই কৃষক উপজেলার ডাঙ্গী ইউনিয়নের রাজকান্দা গ্রামের বাসিন্দা।

হিরু মাতবরের ভাই সোহরাব মাতবর বলেন, ‘আমার ভাইকে জোরপূর্বক বিষ (ঘাস মারা ওষুধ) খাওয়ানো হয়েছে। এ কারণে তার মৃত্যু হয়।’

তিনি আরও বলেন, ‘হিরুকে বিষ খাওয়ানো হয়েছে জানতে পেরে আমরা তাকে শ্রীরামদিয়া গ্রামে তার দ্বিতীয় স্ত্রী রানু বেগমের বাড়িতে পৌঁছে দেই। কারণ হিরু দুই মাস আগে ওই গ্রামের জাফর মাতবরের মেয়ে রানু বেগমকে বিয়ে করে সেই বাড়িতে থাকতেন। তার প্রথম স্ত্রীর নাম হায়াতুন্নেছা। সে ঘরে দুই ছেলে ও এক মেয়ে রয়েছে। তারা রাজকান্দা গ্রামে আমাদের বাড়িতে থাকে।’

এ বিষয়ে রাজাকান্দা গ্রামের বাসিন্দা আব্দুল ছাত্তার মাতবরের ছেলে সামন মাতবর বলেন, ‘হিরুকে শনিবার সন্ধ্যায় তার বাড়ির পাশের বাগানে অসুস্থ অবস্থায় দেখতে পাই। এ সময় হিরুর ছেলে হোসাইন সেখানে আসে। কী হয়েছে জানতে চায়। তখন হিরু বলেন, পাশের শ্রীরামদিয়া গ্রামের পাঁচ-ছয় জন লোক তাকে জোর করে ঘাস মারার ওষুধ খাইয়ে এই বাগানে ফেলে গেছে। তিনি এ সময় কয়েকজনের নামও বলেন। এসব কথা বলার সময় আমার মোবাইলে ভিডিও ধারণ করি। সেই ভিডিও ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়ে।’

স্থানীয়রা জানান, অসুস্থ হিরু মাতবরকে দ্বিতীয় স্ত্রী রানু বেগম উদ্ধার করে ফরিদপুর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করেন। সেখানেই মারা যান। হিরু দ্বিতীয় বিয়ে করার পর থেকে প্রথম স্ত্রী ও সন্তানদের সঙ্গে তার বিরোধ চলছিল।

প্রথম স্ত্রী হায়াতুন্নেছা অভিযোগ করে বলেন, ‘আমার স্বামী দ্বিতীয় বিয়ে করার পর থেকে দ্বিতীয় স্ত্রীর বাড়িতে থাকতেন। আমাদের কোনও খোঁজখবর নিতেন না। সেই বাড়ির লোকজন তাকে বিষ খাইয়ে আমাদের বাড়ির পাশের বাগানে রেখে যায়। তাই আমরা তাকে দ্বিতীয় স্ত্রীর বাড়ি রেখে আসি।’

এ বিষয়ে হিরুর দ্বিতীয় স্ত্রী রানু বেগমের সঙ্গে যোগাযোগের করেও তাকে পাওয়া যায়নি। তবে তার বাবার বাড়ির লোকজনের দাবি, প্রথম স্ত্রী ও তার পরিবারের লোকজন এই মৃত্যুর জন্য দায়ী।

জেলার সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপার (নগরকান্দা সার্কেল) সুমিনুর রহমান বলেন, ‘লাশ উদ্ধারের পর ময়নাতদন্ত করা হয়েছে। রিপোর্ট হাতে পেলে তার মৃত্যুর প্রকৃত কারণ জানা যাবে। এ মৃত্যুর জন্য কেউ দায়ী কি-না তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। মৃত্যুর রহস্য উদঘাটনের চেষ্টা চলছে। তবে এ বিষয়ে এখন পর্যন্ত কোনও মামলা হয়নি।’