শ্রমিকদের সড়ক অবরোধের চেষ্টা, সংঘর্ষে ৫ পুলিশ সদস্যসহ আহত ২৫ 

২৮ সহকর্মীকে শোকজ এবং বরখাস্তের প্রতিবাদে টঙ্গীর পশ্চিম থানা এলাকার গোরিয়ং ফ্যাশন লিমিটেডের শ্রমিকেরা বিক্ষোভ করেছেন। এ সময় শিল্প পুলিশের সঙ্গে শ্রমিকদের সংঘর্ষে ইটপাটকেল নিক্ষেপ, সাউন্ড গ্রেনেড ও লাঠিচার্জের ঘটনা ঘটে। মঙ্গলবার (১৫ ফেব্রুয়ারি) সকাল সাড়ে আটটা থেকে বেলা সাড়ে ১১টা পর্যন্ত তিন ঘণ্টা টঙ্গীর চেরাগ আলী এলাকায় থেমে থেমে শ্রমিক বিক্ষোভের সময় এ ঘটনা ঘটে।

শ্রমিকেরা ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়ক অবরোধের চেষ্টা করলে পুলিশ বাধা দেয়। এতে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। সংঘর্ষের ঘটনায় কমপক্ষে ২০ শ্রমিক ও শিল্প পুলিশের কমপক্ষে পাঁচ সদস্য আহত হন।

শ্রমিক আমিনুল, ফরহাদ, রবিন জানান, কারখানা কর্তৃপক্ষ বিনা কারণে এবং উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে ১৪ ফেব্রুয়ারি কারখানা কর্তৃপক্ষ তাদের ২৮ সহকর্মীর কাউকে কারণ দর্শানো নোটিশ (শোকজ) এবং কাউকে বরখাস্ত করেন। ১৫ ফেব্রুয়ারি মঙ্গলবার গেটে এসে কারখানা অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ, এমন নোটিশ ঝুলিয়ে দেন। এতে শ্রমিকেরা আরও বিক্ষুব্ধ হয়ে কারখানা খুলে দেওয়া ও সহকর্মীদের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণের প্রতিবাদে মঙ্গলবার (১৫ ফেব্রুয়ারি) উৎপাদন বন্ধ করে বিক্ষোভ করে। বিক্ষোভকালে পুলিশের লাঠিচার্জে কমপক্ষে ২০ শ্রমিক আহত হয়। আহত সহকর্মীদের বিভিন্ন প্রাইভেট চিকিৎসা কেন্দ্রে প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়া হয়।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, বিক্ষোভের এক পর্যায়ে কমপক্ষে পাঁচশ' শ্রমিক ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কের চেরাগ আলী এলাকায় সড়ক অবরোধ করে। এসময় পুলিশের সঙ্গে শ্রমিকদের ইটপাটকেল নিক্ষেপ ও পুলিশের লঠিচার্জ এবং সাউন্ডগ্রেনেড নিক্ষেপের ঘটনা ঘটে। এতে সকাল আটটা থেকে আনুমাণিক ৯টা পর্যন্ত সড়কের ওই অংশে যানচলাচল বন্ধ থাকে। 

পুলিশের ধাওয়ায় শ্রমিকেরা কারখানার আশপাশে অবস্থান নিলে মহাসড়কে যানবাহন চলাচল স্বাভাবিক হয়।

টঙ্গী শিল্প পুলিশ-২ এর সহকারী পুলিশ সুপার (এএসপি) এস আলম জানান, বিক্ষোভকারীরা মহাসড়ক অবরোধ করার চেষ্টা করে। এসময় তাদের সড়ক অবরোধ ছেড়ে দিতে অনুরোধ জানালে পুলিশের ওপর ইটপাটকেল নিক্ষেপ করে। এক পর্যায়ে মৃদু লাঠিচার্জ ও বেশ কয়েক রাউন্ড সাউন্ড গ্রেনেড ছুঁড়লে বিক্ষোভকারীরা মহাসড়ক ছেড়ে যায়। এতে শিল্প পুলিশের কমপক্ষে পাঁচ সদস্য আহত হন। তাদেরকে স্থানীয় ওষুধের দোকান থেকে প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কারখানার এক বাণিজ্যিক কর্মকর্তা জানান, শনিবার কিছু শ্রমিক কারখানার সুইং শাখায় নিজেদের মধ্যে বাগবিতণ্ডায় জড়িয়ে সংঘর্ষে জড়ায়। তাদের মধ্যে দুটি পক্ষ কারখানা কর্তৃপক্ষের কাছে পরষ্পরের বিরুদ্ধে বিচার দাবি করে। পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে রবিবার কারখানা বন্ধ রেখে কয়েক শ্রমিককে শোকজ করা হয়, তবে কাউকে বরখাস্ত করা হয়নি। সোমবার দুটি পক্ষ নানা দাবি তুলে উৎপাদন বন্ধ রাখে। পরে কর্তৃপক্ষ অনির্দিষ্টকালের জন্য কারখানা বন্ধের নোটিশ দেয়।