‘সিস্টেম করে টাকা আনবো, তুই বাইরে দাঁড়িয়ে থাকবি’

গাজীপুরে গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি) পরিচয়ে বাড়ির লোকজনের হাত-মুখ বেঁধে ডাকাতির প্রায় ছয় মাস পর রহস্য উদঘাটন করেছে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই)। এ ঘটনায় জড়িত রুবেল মিয়াকে (২৫) গ্রেফতার করা হয়েছে।

বুধবার (১৬ মার্চ) গাজীপুর পিবিআইয়ের পুলিশ সুপার মোহাম্মদ মাকছুদের রহমান এ তথ্য জানিয়েছেন। গ্রেফতারকৃত রুবেল মিয়া ময়মনসিংহের গৌরীপুর উপজেলার রাম গোপালপুর (উরাকোনা) এলাকার আব্দুল হাইয়ের ছেলে।

মাকছুদের রহমান বলেন, গাজীপুর সিটি করপোরেশনের কাশিমপুর থানার সারদাগঞ্জ রাইস মিল এলাকার সফিকুল ইসলামের বাড়িতে গত বছরের ১১ অক্টোবর সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে একটি মাইক্রোবাস যায়। পরে ডিবি পুলিশের পোশাক পরিহিত দুই ব্যক্তি হাতে ওয়্যারলেস ও পিস্তল নিয়ে নিজেদের ডিবি পুলিশ পরিচয় দিয়ে বাড়িতে অবৈধ মালামাল থাকার কথা বলে তল্লাশির নামে ভেতরে ঢুকে। এ সময় তাদের সঙ্গে আরও ছয় জন পিস্তল ও চাপাতি নিয়ে ঘরে ঢুকে। তারা অস্ত্রের মুখে বাড়ির লোকজনকে জিম্মি করে নারী-শিশু ও পুরুষসহ সবার হাত-মুখ বেঁধে স্বর্ণালঙ্কার ও নগদ টাকাসহ বিভিন্ন মালামাল নিয়ে যায়। যার আনুমানিক মূল্য ৮ লাখ ৪ হাজার ৫০০ টাকা। এ ঘটনায় পরদিন কাশিমপুর থানায় মামলা করেন সফিকুল ইসলাম।

পিবিআইয়ের পুলিশ সুপার বলেন, কাশিমপুর থানা পুলিশ প্রায় দুই মাসের বেশি সময় মামলার তদন্ত করে। কিন্তু রহস্য উদঘাটন না হওয়ায় পুলিশ হেডকোয়ার্টার্সের নির্দেশে মামলার তদন্তভার পিবিআইকে দেওয়া হয়। পিবিআইয়ের তদন্ত কর্মকর্তা এসআই সুমন মিয়া প্রায় চার মাস মামলার তদন্ত করেন। তথ্য-প্রমাণের ভিত্তিতে এ ঘটনায় জড়িত রুবেল মিয়াকে সোমবার আশুলিয়া থেকে গ্রেফতার করা হয়। পরে আদালতের মাধ্যমে তাকে একদিনের রিমান্ডে নেওয়া হয়। বুধবার আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেয় রুবেল। এরই পরিপ্রেক্ষিতে ডাকাতি ঘটনার প্রায় ছয় মাস পর রহস্য উন্মোচন হয়।

গ্রেফতারকৃত রুবেল জিজ্ঞাসাবাদে জানায়, পোশাক কারখানায় চাকরি করতো রুবেল। করোনার কারণে চাকরি চলে গেলে এলাকায় অটোরিকশা চালাতো। ঘটনার আগের দিন রুবেলকে তার এক সহকর্মী আশুলিয়ার নরসিংহপুর এলাকায় ডেকে নেয়। সেখানে ডাকাত দলের সদস্যদের সঙ্গে দেখা হয়। তারা রুবেলকে জানায়, ‘এক বাসায় টাকা আছে। সিস্টেম করে আনবো, তুই বাইরে দাঁড়িয়ে থাকবি।’ পরিকল্পনা অনুযায়ী ওই বাড়িতে ডাকাতি করে বিভিন্ন মালামাল ও টাকা লুট করে নেয় তারা। ডাকাত দলের সদস্যরা এই কাজের জন্য রুবেলকে ১০ হাজার টাকা ভাগ দেয়।  

পিবিআইয়ের পুলিশ সুপার মাকছুদের রহমান বলেন, এ ঘটনায় জড়িত ডাকাত দলের অপর সদস্যদের গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে।