নদীতে ঝাঁপ দিয়ে প্রাণে বাঁচলেন মোকছেদা

নারায়ণগঞ্জের শীতলক্ষ্যায় চর সৈয়দপুর এলাকায় পণ্যবাহী জাহাজের ধাক্কায় ডুবে যাওয়া এমএল আশরাফ উদ্দিন লঞ্চ থেকে ঝাঁপিয়ে পড়ে প্রাণে বাঁচলেন মোকছেদা বেগম। নদীতে ভাসমান একটি বস্তা ধরে ভেসেছিলেন তিনি। 

রবিবার (২০ মার্চ) বিকালে তাকে চর সৈয়দপুরের আলামিন নগরের ব্রিজের কাছ থেকে উদ্ধার করা হয়। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন নারায়ণগঞ্জ ফায়ার সার্ভিসের উপ-সহকারী পরিচালক আব্দুল্লাহ আল আরেফীন।

মোকছেদা বেগম ও প্রত্যক্ষদর্শীদের ভাষ্যমতে, মুন্সীগঞ্জ-নারায়গঞ্জ রুটে চলাচলকারী এমভি রূপসী নামে জাহাজের ধাক্কায় ডুবে গেছে যাত্রীবাহী লঞ্চ এমএল আফসার উদ্দিন। ডুবে যাওয়া লঞ্চে ছিলেন মুন্সীগঞ্জের গনকপাড়ার বাসিন্দা মোকছেদা বেগম। লঞ্চ থেকে ঝাঁপ দিয়ে একটি ভাসমান বস্তা ধরে কিছুক্ষণ ভেসেছিলেন। পরে কাছাকাছি থাকা একটি ট্রলার তাকে উদ্ধার করে।

আরও পড়ুন: শীতলক্ষ্যায় জাহাজের ধাক্কায় ডুবলো যাত্রীবাহী লঞ্চ 

মোকছেদা বেগম নারায়ণগঞ্জের খানপুর হাসপাতালের পরিচ্ছন্নতাকর্মী। উদ্ধারের পর তাকে ট্রলারে করে মুন্সীগঞ্জ লঞ্চঘাটে নিয়ে এলে কান্নারত অবস্থায় বলেন, বড় জাহাজটি আমাদের পেছনে ছিল। হঠাৎ আমরা দেখলাম, জাহাজটি লঞ্চের সঙ্গে লেগে গেছে। পেছন থেকে ধাক্কা দিয়ে সামনের দিকে নিয়ে আসছে লঞ্চকে। ডুবে যাওয়ার আগ পর্যন্ত আমরা মনে করেছি, পেছন থেকে সরে যাবে জাহাজটি। কিন্তু পানি উঠে এরই মধ্যে লঞ্চটি ডুবে যাচ্ছিল। তখন জিনিসপত্র ফেলে নদীতে ঝাঁপ দিই। কিছুক্ষণ ভেসে থাকি একটা বস্তা ধরে। স্রোতের মধ্যে পানি খাচ্ছিলাম। এরপর ট্রলার এসে আমাকে উদ্ধার করে।

এদিকে, লঞ্চ ডুবে যাওয়ার পর মুন্সীগঞ্জ-নারায়ণগঞ্জ রুটে যাত্রীবাহী লঞ্চ চলাচল বন্ধ ঘোষণা করেছে বিআইডব্লিউটিএ। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন বিআইডব্লিউটিএ’র উপ-পরিচালক (নৌ-নিরাপত্তা বিভাগ) বাবুলাল বৈদ্য। 

আরও পড়ুন: শীতলক্ষ্যায় জাহাজের ধাক্কায় লঞ্চডুবি: ৪ জনের লাশ উদ্ধার

বিআইডব্লিউটিএ’র মুন্সীগঞ্জ ঘাটের ট্রাফিক পরিদর্শক রাজিব চন্দ্র রায় বলেন, বিকাল সাড়ে ৩টা থেকে মুন্সীগঞ্জ-নারায়ণগঞ্জ রুটে যাত্রীবাহী লঞ্চ চলাচল বন্ধ রয়েছে। দুর্ঘটনার কারণে লঞ্চ চলাচল বন্ধ করে দিয়েছে বিআইডব্লিউটিএ।

এদিকে, লঞ্চঘাটে নিখোঁজদের তালিকা করছেন মুন্সীগঞ্জ রেড ক্রিসেন্ট সোসাইটি। সোসাইটির সদস্য মোহাম্মদ রাব্বি বলেন, স্বজনদের কাছ থেকে জানতে পেরেছি মুন্সীগঞ্জের রমজানবেগ এলাকার আরিফা বেগম (৩৫) ও তার ছেলে সাফায়েত (২) নিখোঁজ আছে। এ পর্যন্ত দুই জন নিখোঁজের তথ্য আমরা পেয়েছি।

আরও পড়ুন: প্রাণ বাঁচাতে নদীতে ঝাঁপিয়ে পড়েন লঞ্চের যাত্রীরা 

নারায়গঞ্জের পুলিশ সুপার জায়েদুল আলম বলেন, লঞ্চে ২০ থেকে ২৫ জন যাত্রী ছিল বলে অনেকের কাছে জানতে পেরেছি। তবে বেশিরভাগই সাঁতরে তীরে উঠতে পেরেছেন। এখন পর্যন্ত চার জনের মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। 

নারায়ণগঞ্জ ফায়ার সার্ভিসের উপ-সহকারী পরিচালক আব্দুল্লাহ আল আরেফীন বলেন, এখন পর্যন্ত চার জনের লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। উদ্ধারকারী দল নিখোঁজদের উদ্ধারে কাজ করেছে।