শীতলক্ষ্যায় লঞ্চডুবি: নারায়ণগঞ্জ-মুন্সীগঞ্জ রুটে লঞ্চ চলাচল বন্ধ ঘোষণা 

শীতলক্ষ্যায় লঞ্চডুবির ঘটনার পর নারায়ণগঞ্জ-মুন্সীগঞ্জ রুটে অনির্দিষ্টকালের জন্য লঞ্চ চলাচল বন্ধ ঘোষণা করেছে বিআইডব্লিউটিএ।

রবিবার রাতে বিআইডব্লিউটিএ'র নারায়ণগঞ্জ নদী বন্দরের যুগ্ম পরিচালক মাসুদ কামাল এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

তিনি বলেন, সোমবার (২১ মার্চ) থেকে নারায়ণগঞ্জ-মুন্সীগঞ্জ রুটে চলাচলকারী সব লঞ্চ অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। এই রুটে ২০-২২টি লঞ্চ চলাচল করে। সোমবার থেকে সেগুলোর চলাচল বন্ধ থাকবে। যাত্রীদের জানমালের নিরাপত্তার স্বার্থে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।

রবিবার (২০ মার্চ) দুপুর ২টা ২০ মিনিটের দিকে নারায়ণগঞ্জের শীতলক্ষ্যা নদীর কয়লাঘাট অংশে সিটি গ্রুপের মালিকানাধীন রূপসী-৯ কার্গো জাহাজের ধাক্কায় মুন্সীগঞ্জগামী লঞ্চ এমএল আফসার উদ্দিন ডুবে যায়। এ সময় লঞ্চটিতে প্রায় অর্ধশত যাত্রী ছিলেন বলে লঞ্চে থাকা বেঁচে ফেরা কয়েকজন দাবি করেছেন।

ঘটনার পর থেকেই যৌথভাবে উদ্ধার অভিযান পরিচালনা করছে বিআইডব্লিউটিএ, নৌ বাহিনীর ডুবুরি দল, কোস্টগার্ড ও নৌ পুলিশ।

নারায়ণগঞ্জ সদর নৌ পুলিশের ওসি মো. মনিরুজ্জামান রাত সাড়ে ১০টার দিকে বলেন, এখন পর্যন্ত ছয় জনের মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে।

ডুবে যাওয়া লঞ্চটির মালিক মুন্সীগঞ্জ লঞ্চ টার্মিনালের ইজারাদার দীল মোহাম্মদ কোম্পানি। লঞ্চে তার ছেলে তাপস (৩৬) থাকলেও প্রাণে বেঁচে গেছেন।

দুর্ঘটনার সময় লঞ্চটি চালাচ্ছিলেন লঞ্চ মাস্টার মো. বিল্লাল হোসেন (৪৫)। তার বাড়ি মুন্সীগঞ্জ পৌরসভার হাটলক্ষ্মীগঞ্জ এলাকায়। লঞ্চ দুর্ঘটনার পর থেকে এখন পর্যন্ত নিখোঁজ রয়েছেন তিনি। লঞ্চটি উদ্ধারে ঘটনাস্থলে অভিযান চালাচ্ছে উদ্ধারকারী জাহাজ প্রত্যয়। লঞ্চ উদ্ধার না হওয়া পর্যন্ত উদ্ধার অভিযান চালাবে তারা।

গজারিয়া নৌ পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ আব্দুস সালাম জানান, রূপসী-৯ কার্গোসহ নয় জনকে আটক করা হয়েছে। তবে তাদের নাম-পরিচয় এখন প্রকাশ করা যাচ্ছে না।

এখন পর্যন্ত ছয় জনের মরদেহ পাওয়া গেলেও নাম-পরিচয় জানা গেছে চার জনের। তারা হলেন মুন্সীগঞ্জ পৌরসভার উত্তর ইসলামপুর এলাকার জয়নাল ভুঁইয়া (৫০), রমজানবেগ এলাকার আরিফা (৩৫), তার শিশু সন্তান সাফায়েত (দেড় বছর), গজারিয়া উপজেলার ইসমানিরচর এলাকার শিল্পা রানী। বাকিরা অজ্ঞাত।

নারায়ণগঞ্জের জেলা প্রশাসক মঞ্জুরুল হাফিজ বলেন, লঞ্চডুবির ঘটনায় প্রতিটি মরদেহের সঙ্গে প্রাথমিকভাবে ২৫ হাজার টাকা করে দেওয়া হচ্ছে। উদ্ধারকাজ এখনও চলছে। এছাড়া জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে তদন্ত কমিটি করা হয়েছে। উদ্ধারকাজ শেষ হলে পরবর্তী ব্যবস্থা নেওয়া হবে। এ ঘটনায় তিনটি পৃথক তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে।