হৃদয় মণ্ডলের পরিবারে আতঙ্ক, স্কুলে যাচ্ছে না ছেলে

ধর্ম অবমাননার অভিযোগে করা মামলায় গ্রেফতার মুন্সীগঞ্জের বিনোদপুর রামকুমার উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষক হৃদয় চন্দ্র মণ্ডলের পরিবার আতঙ্কে দিন কাটাচ্ছেন। ভয়ে স্কুলে যাচ্ছে না তার পঞ্চম শ্রেণি পড়ুয়া ছেলে।

হৃদয় মণ্ডলের স্ত্রী ববিতা হালদার বলেন, ‘ঘটনার পর থেকে খুব আতঙ্কে দিন কাটছে। কটু কথা শুনতে হতে পারে—এই ভয়ে বাচ্চাকে স্কুলে পাঠাতে পারছি না। এমনও শুনছি, ছাত্ররা এখনও বলছে, ওই শিক্ষকের আরও সাজা হোক, আরও জেলে থাকুক। তাকে আর স্কুলে ঢুকতে দেওয়া যাবে না। ওই শিক্ষক স্কুলে পাঠদান করলে আমরা বের হয়ে যাবো।’

আরও পড়ুন: বিজ্ঞানের শিক্ষক হৃদয় মণ্ডলকে ফাঁসানো হয়েছে

হৃদয় চন্দ্র মণ্ডলের দুই সন্তান। বড় ছেলে বিনোদপুর রামকুমার উচ্চ বিদ্যালয়েরই পঞ্চম শ্রেণির ছাত্র। ছোট সন্তান চার বছরের কন্যা। সে এখনও স্কুলে ভর্তি হয়নি। বর্তমানে আতঙ্কে দিন কাটাচ্ছেন হৃদয় মণ্ডলের পরিবারের লোকজন।

বিনোদপুর রামকুমার উচ্চ বিদ্যালয়ের এক শিক্ষক জানান, ‘ঘটনার পর থেকে আজ পর্যন্ত আমার জানামতে স্কুলের পক্ষ থেকে আনুষ্ঠানিকভাবে হৃদয় স্যারের পরিবারের খোঁজ নেওয়া হয়নি। তবে অনেকেই নিজ থেকে খোঁজ-খবর রাখছে। শুনেছি তার ছেলেটি ভয়ে এখন স্কুলে আসে না।’

আরও পড়ুন: ‘ধর্ম অবমাননার কথা শুনিনি, প্রধান শিক্ষকের কথায় মামলা করেছি’

প্রসঙ্গত, গত ২২ মার্চ সকালে বিনোদপুর রামকুমার উচ্চ বিদ্যালয়ে ক্লাস চলাকালে ধর্ম অবমাননার অভিযোগ ওঠে বিজ্ঞান ও গণিতের শিক্ষক হৃদয় চন্দ্র মণ্ডলের বিরুদ্ধে। এ ঘটনায় বিচারের দাবিতে বিদ্যালয় প্রাঙ্গণে বিক্ষোভ করে শিক্ষার্থীরা।

শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভ নিয়ন্ত্রণে আনতে না পেরে প্রধান শিক্ষক আলাউদ্দিন আহম্মেদ পুলিশকে খবর দিলে পুলিশ এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে নেয় এবং শিক্ষক হৃদয় মন্ডলকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আটক করে। পরে বিদ্যালয়ের ইলেকট্রিশিয়ান মো. আসাদ বাদী হয়ে তার ধর্মানুভূতিতে আঘাত হানার অভিযোগে মামলা করেন। 

আরও পড়ুন: যে কারণে জামিন হয়নি বিজ্ঞানের শিক্ষক হৃদয় মণ্ডলের

গত ৪ এপ্রিল মুন্সীগঞ্জ আমলি আদালত-১ এ জামিন শুনানি শেষে আদালত তার জামিন নামঞ্জুর করে কারাগারে পাঠান। আগামী রবিবার (১০ এপ্রিল) আবার জামিন শুনানি হবে বলে জানা গেছে।