পদ্মার পাড়ে জাপানি মিষ্টি আলুর চাষ

শরীয়তপুর জাজিরা উপজেলায় রফতানিযোগ্য নতুন জাতের জাপানি মিষ্টি আলুর চাষ হচ্ছে। স্থানীয় জাতগুলোর চেয়ে নতুন এই জাতের মিষ্টি আলুর ফলন অনেক বেশি। এছাড়া আকারে বড়, খেতেও সুস্বাদু। 

পদ্মা নদীর তীরবর্তী পালেরচর, কুন্ডেরচর, নাওডোবা ও পূর্বনাওডোবা ইউনিয়নের বিভিন্ন মাঠে ওকিয়ানা, কোকেই-১৪ ও মুরাসাকি নামের জাপানি জাতের আলুর দেখা মিলছে। কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের তত্ত্বাবধানে এই জাতের আলুর চাষ শুরু হয়েছে। এগুলো জাপানে রফতানির উদ্যোগ নিয়েছে স্থানীয় কৃষি বিভাগ।

সরেজমিন দেখা গেছে, পালেরচর, কুন্ডেরচর, পূর্বনাওডোবা ও নাওডোবা ইউনিয়নের বিভিন্ন মাঠে বর্তমানে দেখা মিলছে ওকিয়ানা, কোকেই-১৪ ও মুরাসাকি নামের এই সব আলু। আর কিছু দিন পরই মাঠ থেকে তোলা হবে। এসব এলাকার চরের পলিযুক্ত বালিময় মাটিতে দীর্ঘদিন ধরে মিষ্টি আলুর চাষ করছেন কৃষকরা। এবার প্রথমবারের মতো তারা কৃষি বিভাগের পরামর্শ ও সহযোগিতায় প্রচলিত জাতের পাশাপাশি রফতানিযোগ্য নতুন জাতের মিষ্টি আলু চাষ করেছেন। এতে আর্থিকভাবে লাভবান হওয়ার আশা করছেন কৃষকরা।

পালের চর ইউনিয়নের কৃষক মিজানুর রহমান বলেন, ‘আমাগো দ্যাশে তো আগে এই কালারের মিষ্টি আলু দে নাই। তয় কৃষি অফিস থেকে এই মিষ্টি আলু দিছি। আশাবাদী ভালো ফল পামু।’

নতুন জাতের মিষ্টি আলু চাষে বেশি লাভের আশা কৃষকদের

স্থানীয় কৃষি বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, এই বছর ‘কন্দাল ফসল উন্নয়ন’ প্রকল্পের আওতায় প্রাথমিকভাবে ৩শ’ শতাংশ জমিতে জাপানের তিনটি জাতের মিষ্টি আলু চাষের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। পালেরচর, কুন্ডেরচর, নাওডোবা ও পূর্বনাওডোবা ইউনিয়নের বিভিন্ন মাঠে দেখা মিলছে ওকিয়ানা, কোকেই-১৪ ও মুরাসাকি আলুর। এসব জাতের মিষ্টি আলুর ভেতরের অংশ গাঢ় বেগুনি ও কমলা রঙের। স্থানীয় জাতের চেয়ে ফলন বেশি ও গুণেমানে উন্নত। তাছাড়া মিষ্টি আলুতে অনেক ফাইবার বা আঁশ আছে। এর গ্লাইসিমিক ইনডেক্স ৫০ এর কম, যা ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে ভূমিকা রাখে।

জাপানি জাতের মিষ্টি আলুর চাষের উদ্যোক্তা উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ জামাল হোসেন বলেন, ‘ফসল উন্নয়ন প্রকল্পের আওতায় নতুন জাতের মিষ্টি আলুর আবাদ সম্প্রসারণে কৃষক পর্যায়ে কাজ করছে কৃষি বিভাগ। কৃষকদের উপকরণ, প্রয়োজনীয় পরামর্শ ও প্রযুক্তিগত সহযোগিতা দেওয়ার পাশাপাশি মাঠ প্রদর্শনী এবং কৃষকদের সচেতন করতে মাঠ দিবস করা হচ্ছে।’

তিনি আরও জানান, পদ্মাসেতু কেন্দ্রিক যে অর্থনৈতিক কর্মচাঞ্চল্য শুরু হবে, তার সঙ্গে কৃষি প্রক্রিয়াজাতকরণে এবং নতুন সংযোজন হতে পারে এসব জাতের মিষ্টি আলু। এতে একদিকে যেমন কৃষক লাভবান হবে, সেই সঙ্গে খাদ্য তালিকায় এর অন্তর্ভুক্ত পুষ্টিমান বাড়াতে সহায়তা করবে। সরকারিভাবে এবারই প্রথম ফসল উন্নয়ন প্রকল্পের আওতায় ৩০০ শতাংশ জমিতে কোকেই-১৪ জিও মিষ্টি আলু চাষ এবং তা বিদেশে রফতানির উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।