যশোর থেকে গত বৃহস্পতিবার দুপুরে ট্রাক নিয়ে রওনা হন চালক মতিউর রহমান। রাতে গোয়ালন্দ মোড়ে ট্রাকের সিরিয়ালে এসে আটকে পড়েন। সোমবার (৯ মে) দুপুর ১টার দিকে তার সঙ্গে কথা হয় দৌলতদিয়া পুলিশ বক্সের সামনে মহাসড়কে। তিনি বলেন, চার দিন হলো ফেরির দেখা পাইনি। এবার ঈদে পরিবারের সঙ্গে দেখা করতে পারিনি। কত যে কষ্ট, তা বলে বোঝাতে পারবো না। আজ চার দিন হলো প্রচুর কষ্টের মধ্যে আছি, যতক্ষণ ফেরি পার না হবো ততক্ষণ মনে শান্তি নাই। গাড়িতে ঘুম, গাড়িতেই খাওয়া। গাড়িতে বসে থাকতে থাকতে শরীর খারাপ হয়ে গেছে। ফেরির নাগাল পেতে আরও কত সময় লাগবে সেটা নিশ্চিত করে বলতে পারছি না। আপনারা এত লিখে কি আর করবেন? তাতে তো কারো টনক নড়ছে না।
সোমবার (৯ মে) দুপুর ১টা থেকে দুপুর ৩টা পর্যন্ত দৌলতদিয়া ঘাট ঘুরে দেখা যায়, ঈদ উদযাপন শেষে কর্মস্থলে ফিরছে মানুষ। গত বৃহস্পতিবার থেকেই যাত্রী ও যানবাহনের চাপ বেড়েছে দৌলতদিয়া প্রান্তে। সকালে যানবাহন কম হলেও বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে যাত্রী ও দূরপাল্লার যাত্রীবাহী বাসের সংখ্যা বাড়তে থাকে। এদিকে ফেরিঘাটের জিরো পয়েন্ট থেকে ঢাকা-খুলনা মহাসড়কের বাংলাদেশ হ্যাচারি পর্যন্ত তিন কিলোমিটার এলাকাজুড়ে পচনশীল ও অপচনশীল পণ্যবাহী ট্রাক ও যাত্রীবাহী বাসের সারি সৃষ্টি হয়েছে।
বাস থেকে নেমে দুটি ব্যাগ নিয়ে পায়ে হেঁটে লঞ্চঘাটে যাচ্ছিলেন তুহিন শেখ। তিনি বলেন, আর কতক্ষণ বাসে বসে থাকবো? বিরক্ত হয়ে বাস থেকে নেমে হেঁটে লঞ্চঘাটে যাচ্ছি। ভ্যান ও অটোরিকশায় কয়েকগুণ ভাড়া চাচ্ছে, সেজন্য হেঁটেই ঘাটে যাচ্ছি।
রাজবাড়ী জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার শাহনেওয়াজ রাজু (প্রশাসন ও অর্থ) বিপিএম, পিপিএম বলেন, ঈদ উদযাপন শেষে কর্মস্থলে ফেরা মানুষের যাত্রা নির্বিঘ্ন করতে পুলিশ সদস্যরাসহ প্রশাসনের সবাই কাজ করছেন। মানুষের ভোগান্তি লাঘবে ২১টি ফেরি ও ২২টি লঞ্চ নিয়মিত চলাচল করছে। গত দুদিন ধরে ঘাটে যাত্রী ও যানবাহনের একটু চাপ রয়েছে, আজ তুলনামূলক কম। ঘাটে ছোট গাড়িগুলো আগে ওঠার কারণে বড় যানবাহনগুলোকে একটু অপেক্ষা করতে হয়েছে। আমরা আশা করছি আগামীকাল থেকে আগের মতো ঘাট স্বাভাবিক পর্যায়ে চলে আসবে, এজন্য সবার সহযোগিতা কামনা করছি।