নির্যাতনের ৬ দিন পর হাসপাতালে তরুণের মৃত্যু

নারায়ণগঞ্জ শহরের দেওভোগ এলাকায় বাসা থেকে ডেকে নিয়ে নির্যাতনের ঘটনায় সুব্রত মন্ডল জয় (২২) নামে এক পোশাকশ্রমিকের মৃত্যু হয়েছে। নির্যাতনের ছয় দিন পর রবিবার (২২ মে) সকালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়। একইদিন দুপুরে নিহতের বোন সম্পা মন্ডল বাদী হয়ে সদর মডেল থানায় মামলা দায়ের করেন।

সুব্রত মন্ডল জয় দেওভোগ এলাকার সরেশ চন্দ্র মন্ডলের ছেলে। তিনি হোসিয়ারি কারখানার শ্রমিক।

মামলায় দেওভোগ এলাকার সাদরুল আলম ভূঁইয়ার ছেলে সায়েম ওরফে ইয়াবা সায়েম (৩০) ও সাজিদ ভূঁইয়া (৩৬), নাছির উদ্দিনের ছেলে নাইম উদ্দিন বাবু (৩৫), পশ্চিম দেওভোগ এলাকার মৃত বাইজিদের ছেলে দোলন (২৫), একই এলাকার মৃত সহিদ মিয়ার ছেলে আল আমিন (২৫), মুন্সিবাড়ী দিঘিরপাড় এলাকার নিজাম মিয়ার ছেলে নোমান (২২), একই এলাকার প্রণয় (২২), ভূঁইয়ারবাগ এলাকার রকি চাঁনের ছেলে রাকেশ (২০), লক্ষ্মীনারায়ণ আখড়া এলাকার বসুদেব ঘোষের ছেলে সুদেব (৩২), এলএন রোড এলাকার সেন্টু সাহার ছেলে অনিক রাজিব (২৬) ও ভূঁইয়ার বাগ এলাকার মানিককে (২৫) আসামি করা হয়েছে।

স্বজনরা দাবি করছেন, চিকিৎসাধীন অবস্থায় সুব্রত আসামিদের নামসহ ঘটনার বিবরণ দিয়েছেন। এ ছাড়াও নির্মমভাবে নির্যাতনের কথাও জানিয়েছেন। তার এই বক্তব্যের একটি ভিডিও ফুটেজ রয়েছে।

মামলার এজাহারে বাদী উল্লেখ করেন, ১৬ মে রাত সাড়ে ১২টায় সায়েম নামে এক যুবক আমার ছোট ভাই সুব্রতকে মোবাইলে কল করে ডেকে বাড়ির গেটের সামনে নিয়ে যায়। গেটের সামনে গেলে আসামিরা ভাইকে জোরপূর্বক মোটরসাইকেলে তোলে। পরে ভাইয়ের মোবাইলে একাধিকবার ফোন দিয়ে বন্ধ পাই। রাত আড়াইটায় আসামিরা ভাইকে বাড়ির গেটের সামনের রাস্তায় ফেলে রেখে চলে যায়। ওই সময় অজ্ঞাত এক রিকশাচালক গেটের সামনে ডাকাডাকি করলে আমিসহ পরিবারের সবাই গিয়ে তাকে গুরুতর রক্তাক্ত ও অচেতন অবস্থায় পড়ে থাকতে দেখি। তার পুরো শরীরে ধারালো অস্ত্রের আঘাত দেখতে পাই। এ ছাড়াও তার বাম হাতের তিনটি আঙ্গুল মাথাবিহীন ছিল, বাম পায়ের হাঁটুর নিচে রক্তাক্ত, বাম চোখে রক্ত জমাটসহ শরীরের বিভিন্ন স্থানে নীলাভ ও ফুলা ছিল।

তিনি আরও উল্লেখ করেন , তাৎক্ষণিক তাকে নারায়ণগঞ্জ (ভিক্টোরিয়া) জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসক তাকে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে পাঠান। পরে ঢাকা মেডিক্যালের আইসিইউ খালি না থাকায় জরুরি বিভাগের চিকিৎসকদের পরামর্শে সিদ্ধিরগঞ্জের প্রো-অ্যাকটিভ হাসপাতালে ভর্তি করি। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়।

নারায়ণগঞ্জ সদর মডেল থানার ওসি আনিসুর রহমান মোল্লা বলেন, ‘এ ঘটনায় মামলা হয়েছে। আসামিদের গ্রেফতারে অভিযান চলছে।’

সুব্রত মৃত্যুর আগে আসামিদের নাম জানিয়েছে কি না- এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘এটা তদন্তের বিষয় এখন বলা সম্ভব হচ্ছে না। তদন্ত করে আমরা অপরাধীদের বিরুদ্ধে অবশ্যই ব্যবস্থা নেবো।’