বাস খাদে পড়ার পর অটোরিকশায় পালিয়ে যায় চালক-হেলপার

শরীয়তপুরের ভেদরগঞ্জ উপজেলায় মঙ্গলবার (৩১ মে) বাস নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে সড়কের পাশে খাদে পড়ে নারী ও শিশুসহ ২৮ যাত্রী আহত হন। উপজেলার ছয়গাঁও ইউনিয়নের শরীয়তপুর-চাঁদপুর আঞ্চলিক মহাসড়কের পাপরাইল এলাকায় এই দুর্ঘটনা ঘটে। ঘটনার পর দ্রুত পালিয়ে যায় চালক ও হেলপার। 

স্থানীয়রা জানান, ঘটনাস্থলে এসে বাসের চালক ও হেলপারকে দেখতে পাননি। তবে দুই জনকে তাড়াহুড়ো করে অটোরিকশা চড়ে চলে যেতে দেখেন। পরে স্থানীয়রা ফায়ার সার্ভিস ও পুলিশকে খবর দেন। আহতদের উদ্ধার করে শরীয়তপুর সদর হাসপাতাল ও ভেদরগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে পাঠানো হয়েছে।

আরও পড়ুন: নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে বাস খাদে, আহত ২৮

ছয়গাঁও ইউনিয়নের চেয়ারম্যান কামরুজ্জামান লিটন মোল্লা বলেন, ‌‘ঘটনার দুই মিনিট পরে আমি ঘটনাস্থলে যাই। বাসে অন্তত ৪৫ জন যাত্রী ছিলেন। এর মধ্যে ২৮ জন আহত হন। স্থানীয়দের নিয়ে আমরা কিছু যাত্রীকে উদ্ধার করি। পরে ফায়ার সার্ভিস, পুলিশ ও আনসার সদস্যরা যাত্রীদের উদ্ধার করে হাসপাতালে পাঠায়। আমরা এসে চালক ও হেলপারকে দেখতে পাইনি।’

স্থানীয় বাসিন্দা সুমন মিয়া বলেন, ‘সকাল সাড়ে ১০টায় বাসটি খাদে পড়ে যায়। পাশেই ছিলাম। তাই দ্রুত ঘটনাস্থলে ছুটে আসি। এ সময় ধুলাবালি মাখা দুই জনকে অটোরিকশায় ভেদরগঞ্জের দিকে চলে যেতে দেখি। তারা ওই বাসের চালক হেলপার হতে পারে।’

দুর্ঘটনায় আহত শরীয়তপুর সরকারি কারিগরি কলেজের শিক্ষার্থী আহত জিসান বলেন, ‘শরীয়তপুর থেকে নোয়াখালী যাওয়ার জন্য বাসে উঠেছিলাম। কিছু দূর যাওয়ার পর বাসটি একটি গাড়ি ওভারটেক করার সময় খাদে পড়ে যায়।’

একই দুর্ঘটনায় আহত বাগেরহাটের মূলগঞ্জ উপজেলার আব্দুর রহিম বলেন, ‘আমার মেয়ে কিছু দিন আগে চট্টগ্রামে গার্মেন্টসে কাজ করার সময় স্ট্রোকে মারা যায়। গার্মেন্টস কর্তৃপক্ষ তাকে টাকা দেবে। এ কারণে চট্টগ্রামে যাচ্ছিলাম। কিন্তু বাসচালকের জন্য যাওয়া হলো না। চালকের গাড়ি চালানো খুব খারাপ। সে দ্রুত যাওয়ার জন্য আরেকটা গাড়িকে সাইড না দিয়ে জোরে টান দেয়।  এতে বাস খাদে পড়ে যায়।’

শরীয়তপুর ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্সের উপ-সহকারী পরিচালক সেলিম মিয়া বলেন, ‘খবর পাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে আমরা ঘটনাস্থলে আসি। তবে পৌঁছানোর আগেই স্থানীয়রা আহত কয়েকজনকে উদ্ধার করেন। আমরা আহত ১২ যাত্রীকে উদ্ধার করে হাসপাতালে পাঠাই।’

ভেদরগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) আব্দুল্লাহ আল মামুন জানান, বড় ধরনের কোনও হতাহতের ঘটনা ঘটেনি। আহতদের দ্রুত হাসপাতালে পাঠানোর ব্যবস্থা করা হয়েছে।